তবে আদালতের তলবে হাজির হওয়া পুলিশ সদস্যদের ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে বুধবার (২৫ জানুয়ারি) অব্যাহতি দিয়েছেন বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহ’র হাইকোর্ট বেঞ্চ।
আদালত বলেছেন, প্রয়োজন হলে যেকোনো সময় তাদেরকে আবার তলব করা হবে।
বিভিন্ন গণমাধ্যমে উল্টো করে যুবক নির্যাতনের বিষয়ে সচিত্র খবর প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনটি নজরে এলে গত ০৮ জানুয়ারি দুই পুলিশসহ নির্যাতনের শিকার যুবককে হাজির করার নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। এ ঘটনার বিষয়ে যশোরের এসপিকে ৩০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ারও নির্দেশ দেন।
ওই আদেশ অনুসারে যশোর সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক নাজমুল হাসান ও উপ-পরিদর্শক হাদিবুর রহমান হাইকোর্টে হাজির হন। পাশাপাশি ওই যুবক আবু সাঈদও হাজির হন।
আদালত শুরুতেই পত্রিকায় প্রকাশিত ছবিটি দেখিয়ে আবু সাঈদের কাছে জানতে চান, ‘এটি কি আপনার ছবি?’
জবাবে সাঈদ বলেন, ‘এ ছবি আমার নয় এবং ছবির স্থানটি কোথায় তাও বলতে পারবো না’।
আদালতের প্রশ্নের জবাবে দুই পুলিশ সদস্যও বলেন, ‘এ ছবি থানার ভেতরের নয়’।
তখন আদালত বলেন, ‘পত্রিকায় প্রকাশিত ছবির বিরুদ্ধে আপনারা কি কোনো পদক্ষেপ নিয়েছেন? প্রতিবাদ পাঠিয়েছেন?’
এ পর্যায়ে দুই পুলিশ সদস্য বলেন, ‘এ বিষয়ে একটি সংবাদ সম্মেলন হয়েছে। তবে সেটি আমরা করিনি’।
এরপর আদালতে এসপির প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন আইনজীবী আব্দুল মতিন খসরু। তবে প্রতিবেদন যথাযথ না হওয়ায় আদালত ০৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে এসপির প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দেন।
গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, ‘যশোরে আবু সাঈদ (৩২) নামে এক যুবককে থানায় এনে ঝুলিয়ে ও পিটিয়ে ঘুষ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। পরে ৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে তিনি ছাড়া পেয়েছেন। তবে সংশ্লিষ্ট পুলিশ অফিসার নির্যাতন ও ঘুষ আদায়ের কথা অস্বীকার করেছেন’।
‘সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, যশোর সদর উপজেলার তালবাড়িয়া গ্রামের মাদক বিক্রেতা নুরুল হকের ছেলে আবু সাঈদকে বুধবার (০৪ জানুয়ারি) রাতে আটক করেন কোতোয়ালি থানার সিভিল টিমের উপ-পরিদর্শক (এসআই) নাজমুল হোসেন ও সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) হাদিবুর রহমান’।
‘পরে থানায় এনে তার কাছে দুই লাখ টাকা দাবি করেন ওই দুই অফিসার। ঘুষ দিতে অস্বীকার করায় আবু সাঈদকে হ্যান্ডকাফ পরিয়ে থানার মধ্যে দুই টেবিলের মাঝে বাঁশ দিয়ে উল্টো করে ঝুলিয়ে বেদম পেটানো হয়। পরে ৫০ হাজার টাকা ঘুষ নিয়ে ওই রাতেই তাকে ছেড়ে দেয় পুলিশ’।
‘যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) নাজমুল হোসেনের মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে। তবে অপর অভিযুক্ত এএসআই হাদিবুর রহমান বলেন, এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। সাংবাদিকদের ভুল তথ্য দিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে’।
‘যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইলিয়াস হোসেন বলেন, এমন কোনো ঘটনার কথা আমার জানা নেই। এখনো কেউ অভিযোগও করেনি’।
বাংলাদেশ সময়: ২১২৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৫, ২০১৭
ইএস/এএসআর