বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ সোমবার (২০ মার্চ) এ রায় দেন।
আদালতে রিট আবেদনের শুনানি করেন আশরাফুল হাদী।
পরে বিএম ইলিয়াস কচি বলেন, স্কুল মাঠে মার্কেট নির্মাণের অভিযোগে মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম আজাদ রিট করেন। এ রিটের শুনানি নিয়ে গত ১৭ জানুয়ারি মার্কেট নির্মাণে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। রুলে মার্কেট নির্মাণে রোধে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ হবে না- তা জানতে চান।
পরে চন্দনাইশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. লুৎফর রহমান স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, ‘২০০*১৭০ ফুট আয়তকার মাঠ উন্মুক্ত আছে। মাঠের মাঝখানে খেলাধুলার পরিবেশ নষ্ট হয়, এমন কোনো মাটি ভরাট বা মাঠ খননের কোনো চিহ্ন পরিলক্ষিত হয়নি। তবে বরকল-আনোয়ারা সড়কের উত্তর দিকে স্কুল বাউন্ডারিসহ উত্তর-দক্ষিণে এবং মাঝখানে প্রবেশ গেটের দুই দিকে উন্নয়নমূলক কার্যক্রম দেখা গেছে। বিদ্যালয়ের বাউন্ডারি সংলগ্ন নির্মিতব্য ভবনের নিচতলায় মার্কেট এবং সেখান থেকে প্রাপ্ত আয়ের মাধ্যমে ক্রমান্বয়ে দ্বিতল এবং তিনতলা ভবন নির্মাণ করা হবে। যেখানে শিক্ষার্থীদের জন্য শ্রেণিকক্ষ, মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম, হলরুম নির্মাণের জন্য এ প্রয়াস’।
এ প্রতিবেদন আদালতে দাখিলের পর শুনানি শেষে আদালত রুল খারিজ করে দেন। ফলে বাউন্ডারি ঘেঁষে উন্নয়ন কাজ অব্যাহত থাকবে।
রিট আবেদনে বলা হয়েছিলো, ‘ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের অগ্রনায়ক মওলানা মনিরুজ্জামান ইসলামাবাদী ১৯২৪ সালে নিজ গ্রামে এ স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতিকালে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ ওই বিদ্যালয়ের মাঠে অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া মুক্তিযোদ্ধারা দক্ষিণ চট্টগ্রামের মায়ানমার সীমান্ত পর্যন্ত মুক্তিযুদ্ধের সমন্বয় করেন। মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের পর বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে বিদ্যালয়ের মাঠটিতে মুক্তিযোদ্ধারা অস্ত্র সমর্পণও করেন’।
‘প্রায় শতবর্ষী এ বিদ্যালয়ের সাবেক অনেক শিক্ষার্থী বর্তমানে বিশ্ব ও জাতীয় পর্যায়ের শিক্ষক, চিকিৎসক, বুদ্ধিজীবী, রাজনীতিবিদ ও ব্যবসাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষ খ্যাতি অর্জন করেছেন’।
রিটে বলা হয়, ‘বরকল স্কুলের অনির্বাচিত পরিচালনা পর্ষদের একটি অংশ তথাকথিত আয়বর্ধক প্রকল্পের নামে এলাকার সংসদ সদস্যকে ভুল তথ্য দিয়ে বিদ্যালয়ে প্রবেশপথ ও মাঠ ঘিরে বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণের কাজ শুরু করেছে। এছাড়া বাণিজ্যিক ভবনে নামে-বেনামে নিজেদের মধ্যে দোকান বরাদ্দ দিয়ে নিজেদের স্বার্থ হাসিলে মেতে উঠেছে। ‘মওলানা মনিরুজ্জামান ইসালামাবাদী বিপণি বিতান’ নাম দিয়ে শুরু করা বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণকে কেন্দ্র করে তীব্র ক্ষোভে ফুঁসে উঠছেন বিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী, এতদাঞ্চলের সর্বস্তরের জনগোষ্ঠী ও বিশেষত কিশোর-তরুণ সমাজ’।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৮ ঘণ্টা, মার্চ ২০, ২০১৭
ইএস/এএসআর