ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

মাদারীপুর সদর থানার ওসিকে হাইকোর্টে তলব

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৫১ ঘণ্টা, মার্চ ২১, ২০১৭
মাদারীপুর সদর থানার ওসিকে হাইকোর্টে তলব

ঢাকা: দুগ্ধপোষ্য দুই শিশুকে বাইরে রেখে তাদের মায়েদের ১৩ ঘণ্টা থানায় আটকে রাখার ঘটনায় মাদারীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ (ওসি) দুই পুলিশ সদস্যকে তলব করেছেন হাইকোর্ট।

এ বিষয়ে করা এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে মঙ্গলবার (২১ মার্চ) বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহ’র হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।

আগামী ২৯ মার্চ সদর থানার ওসি জিয়াউল মোরশেদ ও এসআই মো. মাহতাবকে আদালতে হাজির হয়ে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে হবে।

এছাড়া রুলে অমানবিকভাবে দুই মাকে ১৩ ঘণ্টা আটকে রাখার ঘটনাকে কেন বেআইনি ও অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তা জানতে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।

চার সপ্তাহের মধ্যে স্বরাষ্ট্র সচিব, আইজিপি, ডিআইজি, মাদারীপুর পুলিশ সুপার, সদর থানার ওসিসহ সংশ্লিষ্টদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

রিটের পক্ষে আদালতে শুনানি করেন জাতীয় মহিলা আইনজীবী পরিষদের সভানেত্রী ফাওজিয়া করিম ফিরোজ, অ্যাডভোকেট শোভানা বানু ও নাজনীন আরা আহমেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তাপস কুমার বিশ্বাস।

বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে এ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। সেইসব প্রতিবেদন যুক্ত করে জনস্বার্থে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী রানা কাওসার সোমবার (২০ মার্চ) রিট আবেদন করেন।

তিনি বলেন, গত ১২ মার্চ রোববার সকাল ১০টার দিকে বিরোধপূর্ণ একটি জমির তদন্ত কাজে যান মাদারীপুর সদর থানার এসআই মাহাতাব হোসেন। এ সময় তিনি লক্ষ্মীগঞ্জ এলাকার বিরোধপূর্ণ জমির পাশের বাড়ির খালেক বেপারীর ছেলে পনির হোসেনের কাছে মামলা সংক্রান্ত বিষয় জানতে চান।  পনির মামলার বিষয়ে কিছু জানে না বলে জানান। এতে এসআই মাহাতাব ক্ষিপ্ত হয়ে পনিরকে থাপ্পড় দেয়। এক পর্যায়ে পনির পুলিশের সাথে বাক-বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে। এতে আরও বেশি ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে মাহাতাব। পরে ফোন করে সদর থানা থেকে তিন গাড়ি পুলিশ নিয়ে পনিরের বাড়িতে ব্যাপক তাণ্ডব চালায় পুলিশের এই এসআই।  

এ সময় পনির ও তার বড় ভাই-বোনের ঘরে মূল্যবান আসবাবপত্র ও নিত্য প্রয়োজনীয় তৈজসপত্রসহ রান্নার চুলাও ভেঙ্গে ফেলে তারা। এক পর্যায়ে পনিরের স্ত্রী ঝুনু বেগম ও তার বড় ভাইয়ে স্ত্রী আকলিমা বেগমকে টেনে-হিঁচড়ে পুলিশের গাড়িতে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়।  ঝুনু বেগমের তিন মাসের শিশু ও আকলিমা বেগমের ১৮ মাসের শিশুকে কোল থেকে রেখে যেতে বাধ্য করে পুলিশ। পরে রাত ১২টার দিকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে সাদা কাগজে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয়া হয় তাদের।

রানা কাওসারের মতে, একজন আইনি কর্মকর্তা হয়েও আইন বহির্ভূতভাবে দুধের বাচ্চাকে তার মার কাছ থেকে এভাবে দূরে রাখা সম্পূর্ণ বেআইনি। এটা মানবাধিকারের লঙ্ঘন এবং সংবিধান পরিপন্থী। এ কারণে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছি। আদালত তলবাদেশসহ রুল জারি করেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৭ ঘণ্টা, মার্চ ২১, ২০১৭
ইএস/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।