গত বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) নির্ধারিত দিনে সাজা বাড়াতে সরকারের করা আরও দু’টি আপিল বিচারাধীন থাকায় ওই মামলায় তিন বছরের সাজার বিরুদ্ধে এরশাদের আপিলের রায় ঘোষণা করেননি বিচারপতি মো. রুহুল কুদ্দুসের একক বেঞ্চ। মামলার সকল নথি প্রধান বিচারপতির কাছে পাঠিয়ে দেন আদালত।
এরপর প্রধান বিচারপতি এই বিষয়ে আপিল শুনানির জন্য উক্ত বেঞ্চ গঠন করে দেন। আদালতে এরশাদের পক্ষে শুনানি করেন শেখ সিরাজুল ইসলাম। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে ছিলেন খুরশীদ আলম খান।
ওইদিন খুরশীদ আলম খান বলেন, ‘রায়ের পূর্ব মুহূর্তে আদালত আপিলকারীর আইনজীবীকে উদ্দেশ্যে করে বলেন, এ মামলায় ১৯৯২ সালের ৫ ও ৬ নম্বর আপিল রয়েছে বলে দেখা যাচ্ছে। যেগুলো সরকার করেছে। এটি আপনি উল্লেখ করেননি। এখন একটি আপিলের ওপর রায় দেওয়া ঠিক হবে না। তাই রায় না দিয়ে প্রয়োজনীয় আদেশের জন্য মামলার তিনটি আপিলই প্রধান বিচারপতির কাছে পাঠানোর আদেশ দেওয়া হলো’।
১৯৮৩ সালের ১১ ডিসেম্বর থেকে ১৯৯০ সালের ০৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত রাষ্ট্রপতি থাকাকালে বিভিন্ন উপহার রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা না দেওয়ার অভিযোগ ওঠে এরশাদের বিরুদ্ধে। এ অভিযোগে ১৯৯১ সালের ০৮ জানুয়ারি তৎকালীন দুর্নীতি দমন ব্যুরোর উপ-পরিচালক সালেহ উদ্দিন আহমেদ সেনানিবাস থানায় এরশাদের বিরুদ্ধে মামলাটি করেন। মামলায় এক কোটি ৯০ লাখ ৮১ হাজার ৫৬৫ টাকা আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ আনা হয়।
১৯৯২ সালের ০৩ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালত এরশাদকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেন। একইসঙ্গে ওই অর্থ ও একটি টয়োটা ল্যান্ডক্রুজার গাড়ি বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়।
এ রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন এরশাদ।
২০১২ সালের ২৬ জুন সাজার রায়ের বিরুদ্ধে এরশাদের আপিলে পক্ষভুক্ত হয় মামলার বাদী দুদক। ওইদিন আপিলে পক্ষভুক্ত হতে দুদকের আবেদন মঞ্জুর করেন বিচারপতি খোন্দকার মুসা খালেদ ও বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমানের অবকাশকালীন হাইকোর্ট বেঞ্চ।
গত বছরের ২২ আগস্ট এ মামলায় আপিল শুনানির দিন ধার্যের আবেদন জানায় দুদক। আবেদনটি কয়েক দফা কার্যতালিকায় এলেও মামলার নথি না আসায় শুনানি শুরু হয়নি।
পরে গত বছরের ০১ নভেম্বর শুনানির দিন ১৫ নভেম্বর নির্ধারণ করেছিলেন আদালত। ওইদিন এরশাদের আইনজীবীর আবেদনের প্রেক্ষিতে আরও দুই সপ্তাহ সময় দিয়ে ৩০ নভেম্বর শুনানির দিন ধার্য করেন।
৩০ নভেম্বর শুরু হয় এ মামলার আপিল শুনানি। আদালতে এরশাদের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী শেখ সিরাজুল ইসলাম। দুর্নীতি দমন কমিশনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।
গত ৯ মার্চ উভয়পক্ষের আপিল শুনানি শেষে ২৩ মার্চ রায়ের দিন ধার্য করেছিলেন হাইকোর্ট।
বাংলাদেশ সময়: ১২৫৬ ঘণ্টা, মার্চ ২৭, ২০১৭
ইএস/এএসআর