জরিমানার আদেশ পুনর্বিবেচনা ও স্থগিত চেয়ে ট্যানারি মালিকদের করা দু’টি আবেদনের শুনানিতে বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে তিন বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস ও ব্যারিস্টার মোহাম্মদ মেহেদী হাসান চৌধুরী।
পরে মনজিল মোরসেদ বলেন, ‘মালিকপক্ষ আদালতে বলেছেন- তাদের ব্যবসা-বাণিজ্য নেই, বিদ্যুৎ-পানির লাইনও নেই। তাই তাদের জরিমানা মওকুফ করা প্রয়োজন। জবাবে আদালত বলেছেন- আমাদের কাছে খবর আছে, লাইন বিচ্ছিন্ন করা হলেও আপনারা কারাখানা চালাচ্ছেন। আপনারা ০৬ এপ্রিলের মধ্যে কারখানা ক্লোজ ডাউন করে আসেন। তারপর জরিমানার বিষয়ে বিবেচনা করা হবে’।
তিনি বলেন, আগামী ০৯ এপ্রিল এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে।
গত ০২ মার্চ হাজারীবাগে রয়ে যাওয়া ট্যানারিগুলোর ৩০ কোটি ৮৫ লাখ টাকা বকেয়া জরিমানা দুই সপ্তাহের মধ্যে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।
হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশন ও ফিনিশড লেদার গুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন আবেদন জানায়।
গত ১৯ মার্চ চেম্বার বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের আদালত হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করে শুনানির জন্য পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠানোর আদেশ দেন।
আদালতের নির্দেশ উপেক্ষা করে হাজারীবাগে ট্যানারি চালু রাখায় গত বছর ১৫৪ প্রতিষ্ঠানের মালিককে প্রতিদিন ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা নির্ধারণ করে দেন আপিল বিভাগ। পরে মালিকরা এ আদেশের রিভিউ চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন জানান।
দু’টি আবেদনই শুনানির জন্য বৃহস্পতিবারের কার্যতালিকায় আসার পর এসব আদেশ দেন সর্বোচ্চ আদালত।
এদিকে হাজারীবাগে থাকা ট্যানারিগুলো সাভারে সরাতে আরও তিনমাস সময় বাড়ানো হয়েছে- এমন খবর যুক্ত করে জানুয়ারিতে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) আবেদন করে। এতে সাভারে স্থানান্তর না হওয়া পর্যন্ত হাজারীবাগে থাকা ট্যানারি কারখানাগুলোর বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানির সংযোগ বিচ্ছিন্নের নির্দেশনা চাওয়া হয়।
আদালত এ বিষয়ে জানতে শিল্প মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব পদমর্যাদার নিচে নন, এমন একজন কর্মকর্তাকে তলব করেন। পরে কর্মকর্তা এসে হাইকোর্টে এ বিষয়ে সরকারের অবস্থান ব্যাখ্যা করেন।
এরপর গত ০৬ মার্চ বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ ও বিচারপতি মো. সেলিমের হাইকোর্ট বেঞ্চ হাজারীবাগে থাকা ট্যানারিগুলো বন্ধের আদেশ দেন।
এ আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করেন বাংলাদেশ ফিনিশড লেদারের চেয়ারম্যান।
গত ১২ মার্চ ট্যানারি মালিকদের করা ওই আবেদন খারিজ করে দেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে তিন বিচারপতির বেঞ্চ।
এরপর তারা হাইকোর্টের ০৬ মার্চের আদেশ মডিফিকেশন চেয়ে আবেদন করেন। এতে ঈদ-উল আযহা পর্যন্ত হাজারীবাগে থাকার সুযোগ চান। ওই আবেদনও বুধবার (২৯ মার্চ) খারিজ করে দেন হাইকোর্ট।
ফলে আর হাজারীবাগে থাকার কোনো সুযোগ নেই ট্যানারি মালিকদের।
বাংলাদেশ সময়: ১২১৩ ঘণ্টা, মার্চ ৩০, ২০১৭
ইএস/এএসআর