ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

মাদারীপুর সদর থানার ওসিকে প্রত্যাহারের নির্দেশ বহাল

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫০০ ঘণ্টা, এপ্রিল ৬, ২০১৭
মাদারীপুর সদর থানার ওসিকে প্রত্যাহারের নির্দেশ বহাল সুপ্রিম কোর্ট

ঢাকা: দুই শিশুকে বাইরে রেখে তাদের স্তন্যদায়ী দুই মাকে ১৩ ঘণ্টা থানায় আটকে রাখার ঘটনায় মাদারীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) অবিলম্বে প্রত্যাহারে দেওয়া হাইকোর্টের নির্দেশ বহাল রেখেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।

দুই পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহারের আদেশের বিরুদ্ধে ওসি জিয়াউল মোরশেদের করা আবেদন খারিজ করে দিয়ে বৃহস্পতিবার (০৬ এপ্রিল) এ আদেশ দেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে আপিল বেঞ্চ।

প্রত্যাহারের নির্দেশ পাওয়া অন্য পুলিশ সদস্য হচ্ছেন এসআই মাহাতাব হোসেন।

তিনি আদেশের বিরুদ্ধে আবেদন জানাননি।

আদালতের আদেশে গত ২৯ মার্চ দুই পুলিশ সদস্য হাজির হওয়ার পর তাদেরকে প্রত্যাহারের আদেশ দেন বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহ’র হাইকোর্ট বেঞ্চ। একইসঙ্গে ৮ মে’র মধ্যে এ ঘটনা তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে পুলিশ প্রধানকে নির্দেশ দেন আদালত।
আদালতে পুলিশ সদস্যদের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী কাজী সাজাওয়ার হোসেন ও ব্যারিস্টার এবিএম আলতাফ হোসেন।
 
পরে আলতাফ হোসেন বলেন, দুই পুলিশ সদস্যকে মাদারীপুর সদর থানা থেকে প্রত্যাহারের আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আর ঘটনা তদন্ত করে ৮ মে’র মধ্যে প্রতিবেদন দিতে পুলিশের আইজিকে নির্দেশ দিয়েছেন।
 
বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে ওই ঘটনা নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। সেসব প্রতিবেদন যুক্ত করে জনস্বার্থে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী রানা কাওসার গত ২০ মার্চ রিট আবেদন করেন।

পরে তিনি বলেন, গত ১২ মার্চ  সকাল ১০টার দিকে বিরোধপূর্ণ একটি জমির তদন্ত কাজে যান মাদারীপুর সদর থানার এসআই মাহাতাব হোসেন। এ সময় তিনি লক্ষ্মীগঞ্জ এলাকার বিরোধপূর্ণ জমির পাশের বাড়ির খালেক বেপারীর ছেলে পনির হোসেনের কাছে মামলা সংক্রান্ত বিষয় জানতে চান।   পনির মামলার বিষয়ে কিছু জানেন না বলে জানান। এতে এসআই মাহাতাব ক্ষিপ্ত হয়ে পনিরকে থাপড় দেন। এক পর্যায়ে পনির পুলিশের সঙ্গে বাক-বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। এতে আরও বেশি ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন মাহাতাব। পরে ফোন করে সদর থানা থেকে তিন গাড়ি পুলিশ নিয়ে এসে পনিরের বাড়িতে ব্যাপক তাণ্ডব চালান।
 
এ সময় পনির ও তার বড় ভাই-বোনের ঘরের মূল্যাবান আসবাবপত্র ও নিত্যপ্রয়োজনীয় তৈজসপত্রসহ রান্নার চুলাও ভেঙে ফেলে পুলিশ। এক পর‌্যায়ে পনিরের স্ত্রী ঝুনু বেগম ও তার বড় ভাইয়ে স্ত্রী আকলিমা বেগমকে টেনে-হিঁচড়ে পুলিশের গাড়িতে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়।
 
তখন ঝুনু বেগমের তিন মাসের শিশু ও আকলিমা বেগমের ১৮ মাসের শিশুকে কোল থেকে রেখে যেতে বাধ্য করে পুলিশ। পরে রাত ১২টার দিকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে সাদা কাগজে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয়।
 
রিটের পর হাইকোর্ট ২১ মার্চ ওসি জিয়াউল মোরশেদ ও এসআই মো. মাহতাবকে তলব করেন। বুধবার হাজির হয়ে তারা ক্ষমা প্রার্থনা করেন। এ সময় আদালত বলেন, ‘এখনই ক্ষমা নয়। আগে তদন্ত রিপোর্ট আসুক। তারপর  দেখা যাবে’।
 
রিটের পক্ষে আদালতে শুনানি করেন জাতীয় মহিলা আইনজীবী পরিষদের সভানেত্রী ফাওজিয়া করিম ফিরোজ, অ্যাডভোকেট শোভানা বানু ও নাজনীন আরা আহমেদ।
 
বাংলাদেশ সময়: ১১০০ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৬, ২০১৭
ইএস/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।