ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

শিশু রাজন হত্যার ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের রায়ের অপেক্ষা

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪৪৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ১১, ২০১৭
শিশু রাজন হত্যার ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের রায়ের অপেক্ষা

ঢাকা: সিলেটে চুরির অপবাদে পিটিয়ে শিশু সামিউল আলম রাজন হত্যা মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের রায় মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) দেবেন হাইকোর্ট।   

বেলা ১১টার পরে এ রায় ঘোষণা করবেন বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও বিচারপতি মো. জাহাঙ্গীর হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ।

২০১৫ সালের ০৮ জুলাই সিলেটের কুমারগাঁওয়ে নির্মম নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করা হয় সদর উপজেলার কান্দিরগাঁও ইউনিয়নের বাদেআলী গ্রামের আজিজুল ইসলাম আলমের ছেলে রাজনকে।

হত্যাকারীরা নৃশংসতার ২৮ মিনিটের ভিডিওচিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিলে দেশে-বিদেশে আলোড়ন সৃষ্টি হয়।

হত্যাকাণ্ডের পর মহানগরীর জালালাবাদ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) বাদী হয়ে মুহিত আলমসহ অজ্ঞাত ৪/৫ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে গিয়ে হত্যাকারীদের সঙ্গে আর্থিক সমঝোতার অভিযোগে বরখাস্ত হন জালালাবাদ থানার ওসি (তদন্ত) আলমগীর হোসেন, এসআই জাকির হোসেন ও আমিনুল ইসলাম।

ওই বছরের ১৬ আগস্ট সৌদি আরবে আটক কামরুল ইসলামসহ ১৩ আসামিকে অভিযুক্ত করে আদালতে এ হত্যা মামলার চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের ইন্সপেক্টর সুরঞ্জিত তালুকদার।

দ্রুততম সময়ে মামলার বিচার শেষে ওই বছরের ০৮ নভম্বের সিলেট মহানগর দায়রা জজ আকবর হোসেন মৃধার আদালত রাজন হত্যার দায়ে মূল আসামি কামরুলসহ ৪ আসামিকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন। ১৩ আসামির মধ্যে একজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, তিনজনকে সাত বছরের কারাদণ্ড ও ২ জনকে এক বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত। খালাস দেওয়া হয়েছে তিনজনকে।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত চারজন হলেন- মহানগরীর জালালাবাদ থানার কুমারগাঁও এলাকার শেখপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল মালেকের ছেলে কামরুল ইসলাম (২৪), চৌকিদার ময়না মিয়া ওরফে বড় ময়না (৪৫), তাজ উদ্দিন বাদল (২৮) ও পলাতক জাকির হোসেন পাভেল।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ময়না চৌকিদারকে অপর দু’টি ধারায় পৃথক পৃথকভাবে সাত বছর ও এক বছর করে কারাদণ্ড প্রদান করেন আদালত।

হত্যাকাণ্ডের ভিডিওচিত্র ধারণকারী নূর মিয়াকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করেন আদালত। সাত বছরের কারাদণ্ডের সাজা হয় কামরুলের দুই ভাই মুহিত আলম ও আলী হায়দার ওরফে আলী এবং পলাতক আসামি শামীম আহমদের। অন্য দুই আসামি আয়াজ আলী ও দুলালকে এক বছর করে কারাদণ্ড দেন আদালত।

দণ্ডপ্রাপ্ত প্রত্যেক আসামিকে দশ হাজার টাকা করে জরিমানা এবং অনাদায়ে ৩ মাস করে সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

অপরাধ সন্দেহজনকভাবে প্রমাণিত না হওয়ায় বেকসুর খালাস পান ফিরোজ মিয়া, আজমত আলী ও রুহুল আমিন।

রায়ের দু’দিন পরে এ মামলার ডেথ রেফারেন্স পৌঁছে হাইকোর্টে। পরে আপিল করেন দণ্ডপ্রাপ্ত কয়েকজন।

পেপারবুক তৈরির পর গত বছর মামলাটি শুনানির জন্য কার্যতালিকাভূক্ত হয়।

গত ৩০ জানুয়ারি এ মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের শুনানি শুরু হয়।

শুনানি শেষে গত ১২ মার্চ রায়ের দিন ১১ এপ্রিল ধার্য করেন হাইকোর্ট।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জহিরুল হক জহির, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আতিকুল হক সেলিম ও বিলকিস ফাতেমা। আসামিপক্ষে ছিলেন এস এম আবুল হোসেন, বেলায়েত হোসেন শাহরিয়ার ও শহিদ উদ্দিন চৌধুরী। পলাতক এক আসামির পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী ছিলেন হাসনা বেগম।

বাংলাদেশ সময়: ১০৫০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১১, ২০১৭
ইএস/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।