বুধবার (২৬ এপ্রিল) সুপ্রিম কোর্টের সভা কক্ষে জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস-২০১৭ উপলক্ষে ‘সুপ্রিম কোর্টে আইনত সহায়তা কার্যক্রমের অভিজ্ঞতা ও বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার ভূমিকা’ শীর্ষক এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড কমিটির চেয়ারম্যান বিচারপতি এম, ইনায়েতুর রহিম।
সভায় কাজী রিয়াজুল হক বলেন, ‘অনেকে কয়েদির সংখ্যা বিবেচনায় কারাগারের ধারণ ক্ষমতা বাড়াতে বলেন। কিন্তু বাস্তব অভিজ্ঞতায় দেখেছি, বন্দিদের মধ্যে স্বল্প সংখ্যকই রায়ের মাধ্যমে দোষী সাব্যস্ত হয়ে কারাগারে রয়েছেন। তাই কারাগারের ধারণ ক্ষমতা না বাড়িয়ে মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি করা উচিত’।
‘এমনও দেখা গেছে, ডাকাতির মামলায় ২৫ বছর জেল খেটেছেন। এ মামলায় দোষী হলেও সর্বোচ্চ তার ১৪ বছরের সাজা হতো। কিন্তু বিচার ছাড়াই তার চেয়ে বেশি সাজা খাটতে হয়েছে। জীবন থেকে এই যে সময়টা চলে গেল, এটি কে ফিরিয়ে দেবে! তাই আমি মনে করি, যারা বন্দি থাকেন, তারা কারাগারে যে কাজ করেন, মুক্তির সময় তাদের সেই শ্রমের টাকা পরিশোধ করে দেওয়া উচিত। যেন কারাগার থেকে বের হওয়ার পর তারা সেটি দিয়ে কিছু করতে পারেন’।
আইনগত সহায়তা পাওয়াকে অধিকার অভিহিত করে রিয়াজুল হক বলেন, ‘লিগ্যাল এইড মানে শুধু আইনি সহায়তা পাওয়াটা কারও জন্য বদান্যতা নয়। বরং এটি একটা মানুষের অধিকার। রাষ্ট্র সে অধিকার দিতে দায়বদ্ধ’।
সভাপতির বক্তব্যে বিচারপতি ইনায়েতুর রহিম বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড একটি আইন দ্বারা গঠিত। আইনের বিভিন্ন সীমাবদ্ধতা রয়েছে। তবু আইনি সহায়তা দেওয়ার স্বার্থে সরকারি তহবিলের পাশাপাশি প্রধান বিচারপতির সহযোগিতায় আমরা নিজেরা আরেকটি তহবিল গঠনে কাজ করছি’।
তিনি বলেন, ‘বিনা বিচারে যারা দীর্ঘদিন কারাবন্দি থাকেন, মুক্তি পাওয়ার পর তাদের সামাজিকভাবে পুনর্বাসনে এনজিওগুলোর ভূমিকা রাখার সুযোগ রয়েছে। এনজিওগুলোর সঙ্গে লিগ্যাল এইড কমিটির অভিজ্ঞতা বিনিময়ের মধ্য দিয়ে আইন সহায়তা কার্যক্রমকে সামগ্রিকভাবে আরো এগিয়ে নেওয়া সম্ভব’।
‘আর এটি করা গেলেই অস্বচ্ছল ও দুস্থ বিচারপ্রার্থী জনগণকে আরো কার্যকরভাবে আইনি সহায়তা সেবা দেওয়া যাবে’।
বাংলাদেশ সময়: ২১৩৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৬, ২০১৭
ইএস/এএসআর