সোমবার (১৫ মে) গেজেট প্রকাশে আরও দুই সপ্তাহ সময় দেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে ৭ বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ।
সকালে শুনানির শুরুতে চার সপ্তাহের সময়ের আবেদন জমা দেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
আবেদন দেখে আদালত বলেন, ‘দুই সপ্তাহের আবেদন এবার চার সপ্তাহ হয়ে গেলো। প্রথমে এক সপ্তাহ, পরে দুই সপ্তাহ এবার চার সপ্তাহ। ভবিষ্যতে আট সপ্তাহ চাইবেন। সময়ের আবেদনের বিষয়টি সবাই জানি’।
এ সময় আদালত আরও বলেন, ‘প্রধান বিচারপতি অবসরে যাবেন জানুয়ারিতে, বিচারপতি নাজমুল আরা সুলতানা যাবেন তার আগে। পরে যাবেন বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহহাব মিঞা। তখন আপনারা গেজেট প্রকাশ করে আনবেন। যেসব বিচারপতিরা তখন থাকবেন, তারা দেখবেন। আই ফিল ভেরি অ্যাসেশমড (লজ্জিত)’।
এর আগে সর্বশেষ গত ০৮ মে আপিল বিভাগ গেজেট প্রকাশে আরও এক সপ্তাহের সময় দিয়েছিলেন।
গত বছরের ০৮ ডিসেম্বর নিম্ন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিধিমালার গেজেট প্রকাশ না করায় আইন মন্ত্রণালয়ের দুই সচিবকে ১২ ডিসেম্বর হাজির করতে অ্যাটর্নি জেনারেলকে মৌখিক নির্দেশ দেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
এর মধ্যে ১২ ডিসেম্বর নিম্ন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিধিমালার গেজেট প্রকাশের প্রয়োজন নেই বলে সিদ্ধান্ত দেন রাষ্ট্রপতি।
পরে অবশ্য দুই সচিব আদালতে হাজির হওয়ার পর গেজেট প্রকাশে সময় দেন আদালত।
১৯৯৯ সালের ০২ ডিসেম্বর মাসদার হোসেন মামলায় (বিচার বিভাগ পৃথককরণ) ১২ দফা নির্দেশনা দিয়ে রায় দেওয়া হয়। ওই রায়ের ভিত্তিতে নিম্ন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিধিমালা প্রণয়নের নির্দেশনা ছিলো।
আপিল বিভাগের নির্দেশনার পর গত বছরের ০৭ মে আইন মন্ত্রণালয় একটি খসড়া শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিধি প্রস্তুত করে সুপ্রিম কোর্টে পাঠায়।
গত বছরের ২৮ আগস্ট শুনানিকালে আপিল বিভাগ খসড়ার বিষয়ে বলেন,শৃঙ্খলা বিধিমালা সংক্রান্ত সরকারের খসড়াটি ছিলো ১৯৮৫ সালের সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালার হুবহু অনুরূপ। যা মাসদার হোসেন মামলার রায়ের পরিপন্থী।
এর পরই সুপ্রিম কোর্ট একটি খসড়া বিধিমালা করে আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠান। একইসঙ্গে ০৬ নভেম্বরের মধ্যে তা প্রণয়ন করে প্রতিবেদন আকারে আদালতকে অবহিত করতে আইন মন্ত্রণালয়কে বলা হয়।
গত বছরের ০৬ নভেম্বর সে অনুসারে মামলাটি শুনানির জন্য কার্যতালিকায় আসে। কিন্তু রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল এ বিষয়ে কোনো অগ্রগতি জানাতে পারেননি।
পরে আপিল বিভাগ বিধিমালা চূড়ান্তের বিষয়ে কী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে তা লিখিতভাবে জানাতে অ্যাটর্নি জেনারেলকে নির্দেশ দিয়ে ০৭ নভেম্বর আদেশের দিন ধার্য করেন।
ওই দিন অ্যাটর্নি জেনারেল আট সপ্তাহের সময়ের আবেদন জমা দেন। যাতে বিধিমালাটি রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানোর কথা উল্লেখ করেন তিনি। সর্বোচ্চ আদালত ২৪ নভেম্বর পর্যন্ত সময় দেন।
গত বছরের ২৪ নভেম্বর অ্যাটর্নি জেনারেল গেজেট প্রকাশে আরও এক সপ্তাহ সময় চাইলে আপিল বিভাগ তা মঞ্জুর করেন। পরবর্তীতে আরও কয়েক দফা সময় বাড়িয়ে নেন রাষ্ট্রপক্ষ।
বাংলাদেশ সময়: ১২৩০ ঘণ্টা, মে ১৫, ২০১৭
ইএস/এএসআর