এ বিষয়ে করা রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে রোববার (০৯ জুলাই) এ রুল জারি করেন বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি মো. আতাউর রহমান খানের হাইকোর্ট বেঞ্চ।
রুলে চিকুনগুনিয়া আক্রান্তদের পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, স্প্রে ও যথাযথ ওষুধ ছেটানোর মাধ্যমে এডিস মশা ও অন্যান্য মশা ধ্বংস করতে বিবাদীদের তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হিসেবে সারাদেশে জনসচেতনতা বাড়াতে পদক্ষেপ নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না এবং সারা দেশের আক্রান্ত এলাকাসহ ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের ডাম্পিং স্টেশন পরিষ্কার করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না- তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট।
স্বাস্থ্যসচিব, স্থানীয় সরকার সচিব, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এবং দুই সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট ও দেশের অন্যান্য আক্রান্ত অঞ্চলে চিকুনগুনিয়া জ্বর নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে নির্দেশনা চেয়ে গত ০৪ জুলাই হাইকোর্টে রিট আবেদনটি দায়ের করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সুজাউদ্দোলা আকন্দ। চিকুনগুনিয়া নিয়ে বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে এ রিট করা হয়।
পরে হাইকোর্ট বেঞ্চটিতে আবেদনটি উপস্থাপন করেন তিনি। আরেকটি সম্পূরক আবেদন করতে বলে হাইকোর্ট সেদিন জানান, এরপর এ আবেদনের শুনানি নেওয়া হবে। সম্পূরক আবেদনে চিকুনগুনিয়া নিয়ন্ত্রণে সরকার কি কি পদক্ষেপ নেবে এবং নেওয়া উচিৎ- সেসব বিষয়ে বিস্তারিত উল্লেখ থাকতে হবে।
হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুসারে বাদী সম্পূরক আবেদন করার পর রোববার শুনানির জন্য আসে।
আদালতে রিটকারী আইনজীবী সুজাউদ্দোলা আকন্দ নিজেই শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদার।
শুনানিতে আইনজীবী সুজাউদ্দোলা আকন্দ বলেন, ১৯৫২ সালে আফ্রিকার দেশ তানজানিয়ায় এ রোগের আবির্ভাব ঘটে। পরবর্তীতে সাতটি দেশে ছড়িয়ে পড়ে। বাংলাদেশে প্রথম এ রোগের প্রকোপ দেখা দেয় ২০০৮ সালে, যা গত মে মাস থেকে বেশি দেখা যাচ্ছে।
এ সময় হাইকোর্ট বলেন, সরকারতো পদক্ষেপ নিচ্ছে। গত শুক্রবার মসজিদে সচেতনতার কথা বলা হয়েছে, মোনাজাতও হয়েছে।
জবাবে আইনজীবী বলেন, আদালত থেকে আদেশ গেলে প্রশাসনের কর্মকর্তারা সতর্ক হবেন। খবর অনুসারে মশা নিধন প্রকল্পে কোটি কোটি টাকার বাজেট রয়েছে। কিন্তু এতো টাকা যায় কোথায়? সেটিও দেখা দরকার।
আদালত বলেন, টাকাতো খরচ হচ্ছে। কিন্তু এখন যারা আক্রান্ত হচ্ছেন, তাদের বিষয়টাও দেখতে হবে। তাদের কি ক্ষতিপূরণ দিতে হবে না? সম্প্রতি বিদ্যুতের ছেঁড়া লাইনে দুই হাত হারানো এক ছেলে ৫০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণের আদেশ দেওয়া হয়েছে। এখন ভবিষ্যতে এ বিষয়গুলোর প্রতি সংশ্লিষ্টরা খেয়াল রাখবেন।
এ সময় আইনজীবী সুজাউদ্দোলা আকন্দ বলেন, ‘এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আবেদনে যুক্ত করে দিচ্ছি’।
পরে আদালত রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীর বক্তব্য শুনতে চাইলে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদার বলেন, ‘আমাদের কোর্টের, এই কোর্টের দু’জন আইন কর্মকর্তাও (সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল) চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত। এ রোগ প্রতিরোধে ব্যাপকহারে সচেতনতা বাড়ানোর দরকার’।
বাংলাদেশ সময়: ১২৪৫ ঘণ্টা, জুলাই ০৯, ২০১৭
ইএস/এএসআর