তদন্তের চূড়ান্ত প্রতিবেদনে শেরপুর-ময়মনসিংহের ৪ আসামির বিরুদ্ধে একটি মামলায় ৫টি ও যশোর-নড়াইলের ১২ আসামির বিরুদ্ধে একটি মামলায় ৫টিসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের মোট ১০টি অভিযোগ আনা হয়েছে।
রাজধানীর ধানমণ্ডির নিজ কার্যালয়ে বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) বেলা সাড়ে এগারটায় সংবাদ সম্মেলনে তদন্ত প্রতিবেদন দু’টি প্রকাশ করেন তদন্ত সংস্থা।
বৃহস্পতিবারই তদন্ত প্রতিবেদন দু’টি প্রসিকিউশনের কাছে জমা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তারা। এর ভিত্তিতে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) তৈরি করে ট্রাইব্যুনালে দাখিল করবেন প্রসিকিউশন।
৫১তম তদন্ত প্রতিবেদনের চার আসামির মধ্যে গ্রেফতার হয়ে কারাগারে আছেন শেরপুরের নকলা উপজেলার ইরশিবপুরের সামজুম্মানের ছেলে এস এম আমিনুজ্জামান ফারুক (৫৮), ময়মনসিংহের কোতোয়ালির বয়েলকান্দির (স্থায়ী ঠিকানা নকলার বিবিরচর) আজিজুর রহমানের ছেলে এ কে এম আকরাম হোসেন (৬২), নকলার কুর্শা বাদগৈড়ের তমিজ উদ্দিনের ছেলে মো. এমদাদুল হক ওরফে খাজা ডাক্তার (৭৪)। পলাতক অন্য আসামির নাম-পরিচয় প্রকাশ করছেন না তদন্ত সংস্থা।
চার আসামির বিরুদ্ধে ৬ জনকে অপহরণ, আটক, নির্যাতন ও হত্যাসহ জোরপূর্বক শ্রম আদায়, লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোগের ৫টি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে।
২০১৫ সালের ১৯ নভেম্বর থেকে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তদন্ত করে তদন্তকারী কর্মকর্তা মনোয়ারা বেগম ৫৪ পৃষ্ঠার এ প্রতিবেদন তৈরি করেন। তদন্তকালে এ মামলায় ৬০ জনের জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে তদন্ত কর্মকর্তা ও জব্দ তালিকার দু’জনসহ মোট ৩৪ জন সাক্ষী এ মামলার আসামিদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেবেন।
গ্রেফতারকৃত তিন আসামিই বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
৫২ নম্বর প্রতিবেদনের ১২ আসামির মধ্যে গ্রেফতার হয়ে কারাগারে থাকা পাঁচজন হলেন- যশোরের কোতোয়ালির শংকরপুর এলাকার (স্থায়ী ঠিকানা নড়াইলের ফুলেশ্বর গ্রাম) আমিন উদ্দিন মোল্লার ছেলে ওহাব মোল্লা (৮০), নড়াইলের বড়শুলা এলাকার রোকন উদ্দিন শেখের ছেলে ওমর আলী (৬৪), তুলারামের আব্দুর রহমানের ছেলে বদরুদ্দোজা (৭৫), লোহাগড়ার নওয়াগ্রামের নবীর শেখের ছেলে দাউদ শেখ (৬৭) ও নড়াইলের শেখহাটির রবিউল হোসেন খানের ছেলে গুলজার হোসেন খান (৭৫)। পলাতক সাতজনের নাম-পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি।
তাদের বিরুদ্ধে হত্যা-গণহত্যা, ধর্ষণ, আটক, অপহরণ, নির্যাতন ও অগ্নিসংযোগের ৫টি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে।
আসামিদের মধ্যে গুলজার হোসেন আওয়ামী লীগ এবং বাকিরা বিএনপি, জামায়াত ও মুসলিম লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
তদন্তকারী কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মামুন গত বছরের ২১ মার্চ থেকে এক বছর চার মাস ছয় দিনের তদন্ত শেষে ৪৩৪ পৃষ্ঠার এ প্রতিবেদন তৈরি করেন।
তদন্ত কর্মকর্তা ও জব্দ তালিকার ১২ জনসহ মোট ৭৬ জন সাক্ষী সাক্ষ্য দেবেন আসামিদের বিরুদ্ধে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩২ ঘণ্টা, জুলাই ২৭, ২০১৭
ইএস/এএসআর