রোববার (৩০ জুলাই) শুনানি শেষে বিচারপতি জিনাত আরা ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
এর আগে একই বেঞ্চ রায়ের জন্য ৩০ জুলাই দিন ঠিক করেন।
আদালতে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলারিটি কমিশনের (বিইআরসি) পক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। তিতাস গ্যাসের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন সাজু। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ইশরাত জাহান।
রিট আবেদনের পক্ষে ছিলেন সুব্রত চৌধুরী ও মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম।
রায় ঘোষণার পর অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী বলেন, এ বিষয়ে জারি করা রুলের আংশিক মঞ্জুর করেছেন হাইকোর্ট। রায়ে আদালত বলেছেন ১ জুলাই থেকে একচুলা এবং দুই চুলার ক্ষেত্রে গ্যাসের দাম বাড়ানো অবৈধ। তবে ৩১ জুলাই পর্যন্ত সরকারের নেওয়া গ্যাসের বাড়তি দামের বিষয়টি মার্জনা করা হয়েছে। ফলে ১ আগস্ট থেকে গৃহস্থালি কাজে গ্যাসের ব্যবহারের উপর বাড়তি টাকা নেওয়া যাবে না।
‘বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন গত ১ জুন থেকে গৃহস্থালির সংযোগে এক চুলার মাসিক বিল ৭৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৯০০ টাকা এবং দুই চুলার ক্ষেত্রে ৮০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৯৫০ টাকা করার যে সিদ্ধান্ত কার্যকর করেছে, তা অবৈধ’।
এর ফলে কোনো ক্ষেত্রেই বাড়তি ১৫০ টাকা পরিশোধ করতে হবে না।
২৩ ফেব্রুয়ারি বিকেলে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে বিইআরসি ভবনে সংবাদ সম্মেলন করে এ দাম বৃদ্ধির ঘোষণা দেন এর চেয়ারম্যান মনোয়ার ইসলাম।
দাম বাড়ানোর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে আদালতে রিট আবেদন দায়ের করেন কনজুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) কনজুমার কমপ্লেইন হ্যান্ডলিং ন্যাশনাল কমিটির আহ্ববায়ক স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন।
এ আবেদনের শুনানি নিয়ে ২৮ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট ১ জুন থেকে দ্বিতীয় দফা গ্যাসের দামবৃদ্ধি ছয়মাসের জন্য স্থগিত করে রুল জারি করেন।
পরবর্তীতে বিইআরসির পক্ষে আপিলে আবেদন করার পর হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত হয়ে যায়। পাশাপাশি আপিল বিভাগ রুল শুনানি করতে নির্দেশ দেন। সে অনুসারে হাইকোর্টে রুল শুনানি শেষ হয়।
বিইআরসি ঘোষণা অনুযায়ী, মার্চ থেকে প্রতি চুলা গ্যাসের দাম ৭৫০ টাকা, এটা জুনে বেড়ে গিয়ে দাঁড়ায় ৯০০ টাকায়। আর মার্চ থেকে দুই চুলা গ্যাসের দাম ৮০০ টাকা, যা জুনে গিয়ে দাঁড়ায় ৯৫০ টাকায়। অন্যদিকে মার্চ থেকে প্রতি ঘনমিটার সিএনজি গ্যাসের দাম বাড়ে ৩৮ টাকা। যেটা জুনে বেড়ে ৪০ টাকা হয়। মার্চ থেকে গ্যাসের বাণিজ্যিক ইউনিট প্রতি খরচ ১৪.২০ টাকা, আর জুন থেকে এ ক্ষেত্রে খরচ বাড়ে ১৭ দশমিক ৪০ টাকায়।
হাইকোর্টে সাইফুল ইসলাম বলেছিলেন, বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন আইন, ২০০৩-এর ৩৪ ধারায় বলা হয়েছে, কমিশন কর্তৃক নির্ধারিত ট্যারিফ অর্থ বছরে একবারের বেশি পরিবর্তন করা যাবে না, যদি না জ্বালানি মূল্যের পরিবর্তনসহ অন্য কোনোরূপ পরিবর্তন ঘটে৷ কিন্তু সরকার ২৩ তারিখের গণগবিজ্ঞপ্তি জারি করে ১ মার্চ ও ২ জুন থেকে দুই দফায় বাড়ানো হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১১৪৬ ঘণ্টা, জুলাই ৩০, ২০১৭
ইএস/এসএইচ