তদন্ত করে পুলিশের মহাপরিদর্শককে (আইজিপি) এসআই জাহিদের বিরুদ্ধে এবং স্বাস্থ্যসচিব ও বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলকে (বিএমডিসি) ডা. মাকসুদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
কি কি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে- সে বিষয়ে সময়ে সময়ে প্রতিবেদন দিতে অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদকে দায়িত্ব দিয়েছেন হাইকোর্ট।
রোববার (০৬ আগস্ট) চাঞ্চল্যকর বিশ্বজিৎ হত্যা মামলাটির ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের রায়ের পর্যবেক্ষণে এসব আদেশ দেন বিচারপতি মো. রুহুল কুদ্দুস ও বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তীর হাইকোর্ট বেঞ্চ।
হাইকোর্ট বলেন, বিচারিক আদালতে সাক্ষ্য দানকালে বিশ্বজিতের ভাই বলেন, বিশ্বজিতের মরদেহে সারা শরীরে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন ছিল। হত্যাকাণ্ডের ভিডিওচিত্রেও অনেক আঘাতের চিহ্ন দেখা যায়। অথচ সুরতহাল প্রতিবেদনে এসআই জাহিদুল হক ও ময়না তদন্ত প্রতিবেদনে ডা. মাকসুদুর রহমান শুধুমাত্র দুই হাত ও পিঠে আঘাতের চিহ্ন থাকার কথা উল্লেখ করেছেন।
এ ধরনের দায়িত্বে গাফিলতিকে পেশাগত অসদাচারণ উল্লেখ করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলা হয় রায়ে।
রায়ে দু’জনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট। ২১ আসামির মধ্যে চারজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও চারজনকে খালাস দেওয়া হয়েছে। পলাতক বাকি ১১ আসামি সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করেননি হাইকোর্ট।
বিচারিক আদালতের রায়ে ফাঁসির আদেশ পাওয়া ৮ জনের মধ্যে রফিকুল ইসলাম শাকিল ও রাজন তালুকদারের মৃত্যুদণ্ড বহাল রয়েছে। তাদের মধ্যে রাজন পলাতক। অন্য ছয়জনের মধ্যে মাহফুজুর রহমান নাহিদ, ইমদাদুল হক এমদাদ, জিএম রাশেদুজ্জামান শাওন ও মীর মোহাম্মদ নূরে আলম লিমনের সর্বোচ্চ সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। লিমন পলাতক থাকলেও অন্য তিনজন কারাগারে আছেন।
খালাসপ্রাপ্তদের মধ্যে সাইফুল ইসলাম সাইফুল ও কাইয়ূম মিয়া টিপু বিচারিক আদালতের রায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ছিলেন। আর গোলাম মোস্তফা মোস্তফা ও এ এইচ এম কিবরিয়াকে দেওয়া হয়েছিল যাবজ্জীবন কারাদণ্ড।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত যে ১১ আসামির বিষয়ে হাইকোর্ট কোনো মন্তব্য করেননি, তারা হলেন- খন্দকার মো. ইউনুস আলী ইউনুস, তারিক বিন জহুর তমাল, মো. আলাউদ্দিন, মো. ওবায়দুল কাদের তাহসিন, ইমরান হোসেন ইমরান, আজিজুর রহমান আজিজ, আল আমিন শেখ, রফিকুল ইসলাম, মনিরুল হক পাভেল, মোহম্মদ কামরুল হাসান ও মোশাররফ হোসেন মোশাররফ।
সংশ্লিষ্ট আদালতের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নজিবুর রহমান জানান, যে পলাতক ১১ আসামির বিষয়ে মন্তব্য করেননি হাইকোর্ট, তারা গ্রেফতার হলে বা আত্মসমর্পণ করলে তাদের বিষয়ে পরবর্তী বিচারিক প্রক্রিয়া শুরু হবে।
২০১২ সালের ০৯ ডিসেম্বর বিএনপি-জামায়াতের অবরোধ কর্মসূচির মধ্যে বাহাদুর শাহ পার্কের কাছে বিশ্বজিৎকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
২০১৩ সালের ১৮ ডিসেম্বর এ হত্যা মামলার রায়ে ২১ আসামির মধ্যে আটজনকে মৃত্যুদণ্ড ও ১৩ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন ঢাকার চার নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক এ বি এম নিজামুল হক।
বাংলাদেশ সময়: ১৮০০ ঘণ্টা, আগস্ট ০৬, ২০১৭
ইএস/ এএসআর