রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) দুপুরে এ স্থগিতাদেশ দেন চেম্বার বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের আদালত।
সকালে এ বিষয়ে রুলের শুনানি শেষে তিনমাসের জন্য ওই নিয়োগ স্থগিত করেন বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি মো. আতাউর রহমান খানের হাইকোর্ট বেঞ্চ।
এক আইনজীবীর করা রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে গত ০৮ আগস্ট ওই চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না- তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ সংশ্লিষ্টদের এর জবাব দিতে বলা হয়।
আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন এ জে মোহাম্মদ আলী ও জয়নুল আবেদিন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ূন, অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও অ্যাডভোকেট স ম রেজাউল করিম। সঙ্গে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদার।
শুনানির শুরুতেই অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ূন রাষ্ট্রপক্ষে শুনানির আবেদন জানিয়ে বলেন, ‘এটি রাষ্ট্রীয় কোনো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয় যে, এখনই শুনানি করতে হবে। আমরা রুলের জবাব দেবো। সেজন্য শুনানির প্রস্তুতিতে সময়ের প্রয়োজন’।
জবাবে আদালত শুনানির প্রস্তুতি নিতে বলে স্থগিতাদেশ দিয়েছিলেন।
পরে আবেদনকারী পক্ষের জয়নুল আবেদিন বলেছিলেন, ‘আইন সচিব পদে আবু সালেহ শেখ মো. জহিরুল হকের এ চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ সঠিক হয়নি, আইনসম্মত হয়নি। এর বিরুদ্ধে একজন আইনজীবী রিট করেন। আদালত তিনমাসের জন্য স্থগিতাদেশ দিয়েছেন। তিনি আর কার্যক্রম চালাতে পারবেন না’।
গত ১০ আগস্ট শুনানি শুরু হয়।
শুনানিতে এ জে মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘জুডিশিয়াল সার্ভিসে আইন সচিবের চাকরির শেষ দিন হচ্ছে ০৭ আগস্ট। তাকে ০৬ আগস্ট নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ অনুসারে বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের নিয়োগে সুপ্রিম কোর্টের পরামর্শ লাগে। কিন্তু সেটি নেওয়া হয়নি’।
‘এছাড়া সচিব পদে জুডিশিয়াল সার্ভিসের বাইরে কোনো ব্যক্তিকে নিয়োগ দেওয়া যাবে না। আইন সচিব এখন জুডিশিয়াল সার্ভিসে নেই। এমনকি আপিল বিভাগের এক রায়ে বলা হয়েছে, এ পদে চুক্তিভিক্তি নিয়োগের কোনো সুযোগ নেই’।
অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, ‘আবু সালেহ শেখ মো. জহিরুল হককে নতুন করে নিয়োগ দেওয়া হয়নি। তিনি জুডিশিয়াল সার্ভিসের লোক। তার অবসরোত্তর ছুটি বাতিল করে কেবল ওই পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে’।
‘আপিল বিভাগের চুক্তিভিত্তিক রায়ের বিষয়টি হলো, অন্য সার্ভিস থেকে কাউকে এনে নিয়োগ দেওয়া। এখানে তার ব্যত্যয় ঘটেনি। সুতরাং, এখানে কোনো ধরনের বেআইনি কিছু হয়নি’।
গত ০৬ আগস্ট আবু সালেহ শেখ মো. জহিরুল হককে তার অবসরোত্তর ছুটি বাতিল করে দুই বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার। পরদিন ০৭ আগস্ট তার চাকরির মেয়াদের শেষ দিন ছিল।
রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে আইন মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। সোমবার কাজে যোগ দিয়েছেন সচিব আবু সালেহ শেখ মো. জহিরুল হক।
প্রজ্ঞাপন অনুসারে ২০১৯ সালের ০৭ আগস্ট পর্যন্ত আইন ও বিচার বিভাগের সচিব পদে বহাল থাকার কথা রয়েছে আবু সালেহ শেখ মো. জহিরুল হকের।
চুক্তিভিত্তিক এ নিয়োগের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিটটি করেন আইনজীবী আশরাফ-উজ-জামান।
বাংলাদেশ সময়: ১৫১০ ঘণ্টা, আগস্ট ২২, ২০১৭
ইএস/এএসআর
** আইন সচিবের নিয়োগ ৩ মাসের জন্য স্থগিত