ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

রাজধানীর রাস্তায় ‘পশুর হাট বসে না, সুযোগও নেই’

ইলিয়াস সরকার, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩৪ ঘণ্টা, আগস্ট ৩১, ২০১৭
রাজধানীর রাস্তায় ‘পশুর হাট বসে না, সুযোগও নেই’ অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ

ঢাকা: ‘পবিত্র ঈদ-উল আযহা উপলক্ষে রাজধানীতে রাস্তায় পশুর হাট বসেনি এবারও। এমনকি বসার সুযোগও নেই’-  এমন মন্তব্য ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের। আর এটিকে সাধুবাদ জানিয়েছেন রাস্তায় পশুর হাট না বসাতে হাইকোর্টে  রিট মামলার আইনজীবী।

এবার ঢাকায় অস্থায়ীভাবে ২৩টি কোরবানির পশুর হাট বস‍ানোর অনুমতি দিয়েছে দুই সিটি করপোরেশন।   এর মধ্যে ২২টি অস্থায়ী ও একটি স্থায়ী হাট।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায় ৯টি ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় বসেছে ১৩টি অস্থায়ী হাট। আর একমাত্র স্থায়ী পশুর হাটটি গাবতলীতে সারা বছরই বসে।

২০০৯ সালে এক রিট মামলার চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে রাস্তায় পশুর হাট বসাতে অনুমতি না দিতে নির্দেশ দিয়ে রায় ঘোষণা করেন হাইকোর্ট।

এ মামলায় রিট আবেদনকারী আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ।

মামলার স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে মনজিল মোরসেদ বলেন, ‘১৯৮৮ সালে ঢাকা বারে আইন পেশা শুরু করি। ওই সময়ে কোর্টে থাকা অবস্থায় একদিন খবর আসে- একজন আত্মীয়ের বাচ্চা মারা গেছে। আজিমপুরে নামাজে জানাজা হবে তিনটায়। দুপুর ১২টায় খবর পেয়েও সঙ্গে সঙ্গে রওনা হয়ে জজকোর্ট থেকে আজিমপুর যেতে পারলাম না। কারণ, বুয়েটের সামনের রাস্তায় গরুর হাট থাকায় ব্যাপক যানজট লেগে ছিলো। তখনি মনের মধ্যে এলো- যদি মামলা করে রাস্তা থেকে গরু হাট সরানো যেতো’।

এরপর ২০০৫ সালে অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ রাস্তায় বসা গরুর হাটের বিরুদ্ধে হাইকোর্ট রিট করেন।   এটি ছিল তার করা প্রথম জনস্বার্থের মামলাও। রাস্তায় যেকোনো গরুর হাট বসাতে অনুমতি না দিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না- তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রাস্তায় থাকা পশুর বর্জ্য স্বাস্থ্যকর পদ্ধতিতে (হাইজেনিক ম্যানার) ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সরানোর পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দেন।

আদালতে বিবাদীপক্ষে ছিলেন আইনজীবী কাজী  আকতার হামিদ  ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল বিভুতি ভূষণ বিশ্বাস।

২০০৯ সালের এপ্রিল, মে ও জুন মাসে ৫ দিন ‍শুনানি হয়। ২৯ জুন রুল যথাযথ ঘোষণা করে  রায় দেন বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ ও বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ।

মনজিল মোরসেদ বলেন, ‘হাইকোর্টের রায়ের পর এখন রাজধানীতে আর রাস্তায় পশুর হাট বসে না। এটি বাস্তবায়িত হয়েছে। এ জন্য সাধুবাদ। তবে স্থায়ী জবাইখানা (হাইজেনিক পদ্ধতিতে) স্থাপন করলে আরও বেশি ভালো হতো’।

ঢাকা উত্তর সিটির প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘রাস্তায় হাট বসেনি। বসার সুযোগও নেই। আমরা এবারের হাটগুলো রাজধানীর জনবহুল এলাকা থেকে একটু দূরে দেওয়ার চেষ্টা করেছি, যেন যানজটের সৃষ্টি না হয়’।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের হাটগুলো হলো- কুড়িল ৩০০ ফুট সড়ক সংলগ্ন, বসিলা এলাকা, মিরপুর ডিওএইচএস, উত্তরার ১৫ নম্বর সেক্টর, খিলক্ষেত বনরূপা এলাকা, আশিয়ান সিটি, ভাটারার সাঈদনগর, আফতাবনগর ও মিরপুরের ৬ নম্বর সেকশন।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের হাটগুলো হলো-মেরাদিয়া বাজার, উত্তর শাহজাহানপুর-খিলগাঁও রেলগেট বাজার সংলগ্ন মৈত্রী সংঘের মাঠ, ব্রাদার্স ইউনিয়ন সংলগ্ন বালুর মাঠ, কমলাপুর স্টেডিয়ামের আশেপাশের খালি জায়গা, জিগাতলা হাজারীবাগ মাঠ, রহমতগঞ্জ খেলার মাঠ, কামরাঙ্গীরচর ইসলাম চেয়ারম্যানের বাড়ির মোড় থেকে দক্ষিণ দিকে বুড়িগঙ্গা নদীর বাঁধ সংলগ্ন জায়গা, আরমানিটোলা খেলার মাঠ ও আশপাশের খালি জায়গা, ধূপখোলা ইস্ট অ্যান্ড ক্লাব মাঠ, পোস্তগোলা শ্মশানঘাট সংলগ্ন খালি জায়গা, দনিয়া কলেজ মাঠ সংলগ্ন খালি জায়গা, শ্যামপুর বালুর মাঠ এবং সাদেক হোসেন খোকা মাঠ সংলগ্ন ধোলাই খাল ট্রাক টার্মিনাল ও সংলগ্ন খালি জায়গা।

বাংলাদেশ সময়: ২০৩৫ ঘণ্টা, আগস্ট ৩১, ২০১৭
ইএস/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।