দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞার নেতৃত্বে আপিল বেঞ্চে মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) সকালে শুনানি পেছাতে দুই সপ্তাহের সময়ের আবেদন জানান আসামির আইনজীবী সিকদার মকবুল হক।
গত ১০ অক্টোবর ধার্য দিনে রায় না দিয়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি সাইফুলের পক্ষে পুনরায় শুনানির আদেশ দেন আপিল বিভাগ।
সেদিন অ্যাডভোকেট অন রেকর্ড মাহমুদা বেগম জানিয়েছিলেন, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি সাইফুলের পক্ষে আগে আইনজীবী নিয়োগ করা হয়নি। এখন তার পক্ষে একজন আইনজীবী নিয়োগের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এরপর সর্বোচ্চ আদালত পুন:শুনানির সিদ্ধান্ত জানান।
২০১২ সালের ০৫ মার্চ রাত ১টার দিকে রাজধানীর গুলশান কূটনৈতিক এলাকার ১২০ নম্বর সড়কের ১৯/বি নম্বর বাসার সামনে গুলিবিদ্ধ হন খালাফ আল আলী (৪৫)। ০৬ মার্চ ভোরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
ওই বছরের ০৪ জুন দক্ষিণখান থানার গাওয়াইর এলাকা থেকে সাইফুল ইসলাম মামুন, আকবর আলী লালু ওরফে রনি ও আল আমিন নামে তিনজনকে গ্রেফতার করে ডিবি পুলিশের ডাকাতি, দস্যুতা ও ছিনতাই প্রতিরোধ টিম।
এ সময় তাদের কাছ থেকে কালো রঙের একটি বিদেশি পয়েন্ট ২২ বোরের রিভলবার জব্দ করা হয়। অবৈধ অস্ত্র রাখার দায়ে ওইদিনই তাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র মামলা দায়ের করা হয়।
আসামি মামুন ও আল আমিন আদালতে স্বীকার করেন যে, ০৫ মার্চ দিবাগত রাতে ছিনতাই করতে বাধা দেওয়ায় তারা খালাফ আল আলীকে এ অস্ত্র দিয়ে গুলি করে হত্যা করেন।
পরে আসামি মামুন, মো. আল আমীন, আকবর আলী লালু ওরফে রনি ও রফিকুল ইসলাম খোকনকে খালাফ হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখায় (শ্যো’ন অ্যারেস্ট) পুলিশ।
২০১২ সালের ৩১ অক্টোবর ওই ৪ জনসহ পলাতক সেলিম চৌধুরী ওরফে সেলিম আহমেদের বিরুদ্ধে অভিযোগ (চার্জ) গঠন করে এ মামলার বিচার শুরু করেন ঢাকার ৪ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মোতাহার হোসেন। একই বছরের ৩০ ডিসেম্বর খালাফ আল আলীকে হত্যার দায়ে ৫ আসামির সবাইকে মৃত্যুদণ্ড দেন ট্রাইব্যুনাল।
হাইকোর্টে ডেথ রেফারেন্স ও জেল আপিলের শুনানি শেষে ২০১৩ সালের ১৮ নভেম্বর আসামি সাইফুলকে বিচারিক আদালতের দেওয়া মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রাখেন হাইকোর্ট। মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত অন্য ৩ জন আল আমীন, আকবর আলী লালু ওরফে রনি ও রফিকুল ইসলাম খোকনের সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন এবং পলাতক সেলিম চৌধুরী ওরফে সেলিম আহমেদকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়।
হাইকোর্টের এ রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করেন রাষ্ট্রপক্ষ। ২০১৪ সালের ২৩ জুলাই এ আপিল মঞ্জুর করেন আপিল বিভাগ।
মো. আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞার নেতৃত্বে আপিল বিভাগের দুই নম্বর বেঞ্চে গত ০৯ আগস্ট রাষ্ট্রপক্ষের এ আপিলের শুনানি শুরু হয়। ২০ আগস্ট উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রায়ের দিন ১০ অক্টোবর ধার্য করেছিলেন সর্বোচ্চ আদালত।
আসামিপক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী হেলাল উদ্দিন মোল্লা। রাষ্ট্রপক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিত দেবনাথ।
বাংলাদেশ সময়: ১১১০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৪, ২০১৭
ইএস/এএসআর