এ বিষয়ে জারি করা রুল শুনানি শেষে গত ২২ অক্টোবর ৫০ দিনের মধ্যে ২৫ কোটি টাকা ঋণদানকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকে জমা না দিলে এমপি মো. শওকত চৌধুরীর জামিন বাতিল হবে বলে আদেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের হাইকোর্ট বেঞ্চ।
পরে এমপি শওকত আপিল করলে এ আবেদনের শুনানি শেষে গত ২৯ অক্টোবর ওই আদেশের ওপর দুই সপ্তাহের স্থগিতাদেশ দেন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি মো. আব্দুল ওয়াহ্হাব মিঞার নেতৃত্বে চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ।
রোববার (১২ নভেম্বর) স্থগিতাদেশ বাড়িয়ে ০৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত করা হয়েছে।
আদালতে শওকত চৌধুরীর পক্ষে শুনানি করেন তার আইনজীবী এ এম আমিনউদ্দিন, নুরুল ইসলাম সুজন ও ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস এমপি।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে ছিলেন খুরশীদ আলম খান।
কমার্স ব্যাংকের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার এম সারোয়ার হোসেন।
খুরশীদ আলম খান জানান, হাইকোর্ট স্বপ্রণোদিত হয়ে (সুয়োমোটো) এ আদেশ দিতে পারেন কি-না- তা পরীক্ষা করে দেখবেন সর্বোচ্চ আদালত। এজন্য গত ২৯ অক্টোবর আদেশ স্থগিত করেছিলেন। এ স্থগিতাদেশ আরও বাড়িয়েছেন রোববার।
বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের বংশাল শাখা থেকে গত বছরের ০৮ মে ৮২ লাখ ৮৯ হাজার ৮১৫ টাকা এবং ১০ মে ৯৩ কোটি ৩৬ লাখ ২০ হাজার ২১৩ টাকা ঋণ জালিয়াতির অভিযোগে শওকত চৌধুরীসহ ব্যাংকটির নয় ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে রাজধানীর বংশাল থানায় দু’টি মামলা করে দুদক।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন- ব্যাংকটির ফার্স্ট অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট ও বংশাল শাখার সাবেক শাখা ব্যবস্থাপক মো. হাবিবুল গনি, চাকরিচ্যুত অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মুহাম্মদ আসাদুজ্জামান, ফার্স্ট এক্সিকিউটিভ অফিসার শিরিন নিজামী, সাবেক সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. সফিকুল ইসলাম, সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট পানু রঞ্জন দাস, সাবেক ফার্স্ট অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট ইখতেখার হোসেন, সাবেক অ্যাসিস্ট্যান্ট অফিসার দেবাশীষ বাউল, সাবেক এক্সিকিউটিভ অফিসার ও বর্তমানে এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের প্রিন্সিপাল অফিসার আসজাদুর রহমান।
এরপর আগস্ট মাসে শওকত চৌধুরী হাইকোর্ট থেকে জামিন পাওয়ার পর বিচারিক আদালতেও আত্মসমর্পণ করে জামিন নেন।
মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, ২০১২ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০১৫ সালের মার্চ পর্যন্ত মোট ৩৭টি এলসি খুলে মেসার্স যমুনা এগ্রো কেমিক্যাল, মেসার্স এগ্রো কেমিকেল লিমিটেড ও উদয়ন এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের নামে অন্য আসামিদের সঙ্গে যোগসাজশে শওকত চৌধুরী এ ঋণ জালিয়াতি করেন। পরে যা সুদে আসলে শত কোটি টাকার ওপরে চলে যায়।
এদিকে এই মামলার অন্য আসামিরা গত বছর জামিন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন। আবেদনে বলা হয়, প্রধান আসামি শওকত চৌধুরী জামিন পেয়েছেন। তাই তারাও জামিন পেতে পারেন। এরপর গত বছরের ২৪ নভেম্বর জামিন বাতিলে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।
বাংলাদেশ সময়: ১০২০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১২, ২০১৭
ইএস/এএসআর