শিশু আইন নিয়ে আদেশ পালনের বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে আইন মন্ত্রণালয়ের আইন প্রণয়ন ও সংসদ (লেজিসলেটিভ ও ড্রাফটিং) বিভাগের সচিব এবং সমাজকল্যাণ সচিব হাইকোর্টের তলবে হাজির হন রোববার (১২ নভেম্বর)। শুনানি শেষে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
এ সময় আদালত বলেন, ‘শিশু আদালত এখন বয়স্কদের আদালতে পরিণত হয়েছে। ভিকটিম শিশু, অথচ বিচার হচ্ছে প্রাপ্তবয়স্কদের। আমাদের প্রত্যাশা, আইনের অস্পষ্টতা দূর করা’।
এক পর্যায়ে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, ‘কোনো অপরাধী যদি শিশু হয়, তাহলে তার মামলা শিশু আদালতে পাঠাতে পারেন’।
আদালত বলেন, ‘নতুন কোনো বিশেষ আইন হলে সে আইনের মামলা বিচারের আগে বিচারক, তদন্ত কর্মকর্তা, আইনজীবী সকলের প্রশিক্ষণ প্রয়োজন’।
গত ২৯ অক্টোবর দুই সচিবকে ১২ নভেম্বর হাজির হতে বলেছিলেন হাইকোর্ট।
শিশু আইনে করা মামলায় আটক মো. দেলোয়ার হোসেন ও হেমায়েত উল্লাহ দেওয়ানের জামিনের আবেদনের শুনানিকালে গত ১৫ অক্টোবর সমাজকল্যাণ সচিবকে ২৯ অক্টোবর ডাকেন হাইকোর্ট।
কিন্তু তার আইনজীবী আশিকুর রহমান জানান, তিনি সমন না পাওয়ায় আসতে পারেননি। তবে আদালতের দেওয়া আদেশ অনুসারে ‘শিশু আইন-২০১৩’ সংশোধনের খসড়া করে আইন মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়।
এরপর দুই সচিবকে তলব করেন হাইকোর্ট।
শিশুকে ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগে ঢাকা, কক্সবাজার ও রংপুরে করা পৃথক চারটি মামলায় বিভিন্ন সময়ে প্রাপ্তবয়স্ক চার আসামি হাইকোর্টে জামিনের আবেদন জানান। চারটি মামলার মধ্যে দু’টি শিশু আইনে ও অন্য দু’টি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে করা হয়। পৃথক দুই আইনে দায়ের হওয়া মামলার সাজাও আলাদা।
শিশু ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় আসামি প্রাপ্তবয়স্ক হলে তার বিচার কোন আইনে বা কোন আদালতে হবে- সে বিষয়ে গত বছরের ১৪ আগস্ট ওই তিন সচিবের কাছে ব্যাখ্যা চান হাইকোর্ট। গত বছরের ০৭ সেপ্টেম্বরের মধ্যে তাদের ব্যাখ্যা দিতে বলা হলেও কেউই ব্যাখ্যা দাখিল করেননি।
এ কারণে গত বছরের ৩১ অক্টোবর তাদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগে রুল জারি হয়।
এরপর ডিসেম্বরে তারা আদালতকে জানান, শিশু আইন-২০১৩ সংশোধনের মাধ্যমে অস্পষ্টতা দূর করা হবে। কিন্তু আজ পর্যন্ত ওই আইন সংশোধনের কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
বাংলাদেশ সময়: ২০১৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১২, ২০১৭
ইএস/এএসআর