প্রধান বিচারপতি এ মামলার নিষ্পত্তির জন্য নতুন একক বেঞ্চ নির্ধারণ করবেন বলে জানিয়েছেন রিট আবেদনকারীর আইনজীবী সত্য রঞ্জন মণ্ডল।
গত বছরের ০৬ ডিসেম্বর নিজাম হাজারীর পদে থাকার বৈধতা নিয়ে জারি করা রুলের বিভক্ত রায় দেন বিচারপতি মো. এমদাদুল হক ও বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহসানের হাইকোর্ট বেঞ্চ।
জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. এমদাদুল হক তার রায়ে রুল মঞ্জুর করে নিজাম হাজারীর পদে থাকাকে অবৈধ ঘোষণা করেন। আর কনিষ্ঠ বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহসান এ বিষয়ে করা রিট ও রুল খারিজ করে দেন। অর্থাৎ তার রায়ে নিজাম হাজারীর এমপি পদ বৈধ।
এরপর আইন অনুসারে রিট আবেদনটি প্রধান বিচারপতির কাছে গেলে তিনি বিচারপতি সৌমেন্দ্র সরকারের তৃতীয় হাইকোর্ট বেঞ্চ (একক বেঞ্চ) গঠন করে সেটির নিষ্পত্তির জন্য পাঠান। গত ১০ জুলাই নিজামের আইনজীবীর আবেদনে শুনানি মুলতবি রাখেন ওই আদালত।
পরে রিট মামলাটির বাদী ফেনী জেলা যুবলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক সাখাওয়াত হোসেন ভূঁইয়া বুধবার (১১ অক্টোবর) প্রধান বিচারপতির কাছে বেঞ্চ পরিবর্তনের আবেদন জানিয়েছেন। ‘এ আদালতে থাকলে আমি ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হবো’ উল্লেখ করে অন্য যেকোনো আদালতে পাঠিয়ে দ্রুত রুল শুনানির আরজি জানান তিনি।
সত্য রঞ্জন মণ্ডল বলেন, এ আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মামলাটি বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়ার আদালতে নিষ্পত্তির জন্য পাঠানো হয়।
বৃহস্পতিবার (০৯ নভেম্বর) মামলার শুনানিও হয়। রোববার (১২ নভেম্বর) ফের শুনানি হওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু আজ আদালত বিব্রতবোধ করেন।
‘সাজা কম খেটেই বেরিয়ে যান সাংসদ’ শিরোনামে ২০১৪ সালের ১০ মে একটি জাতীয় দৈনিকে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০০০ সালের ১৬ আগস্ট অস্ত্র আইনের এক মামলায় নিজাম হাজারীর ১০ বছরের কারাদণ্ড হয়। কিন্তু দুই বছর ১০ মাস কম সাজা খেটে কারাগার থেকে মুক্তি পান তিনি’।
পরে ওই প্রতিবেদন যুক্ত করে নিজাম হাজারীর সংসদ সদস্য পদে থাকার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট আবেদন করেন সাখাওয়াত হোসেন ভূঁইয়া।
রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২০১৪ সালের ৮ জুন রুল জারি করেন হাইকোর্ট।
গত বছরের ০৩ আগস্ট এ রুলের শুনানি শেষে ১৭ আগস্ট সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারীর পদ থাকবে কি-না সে বিষয়ে রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেছিলেন হাইকোর্ট। তবে বিচারিক আদালতের একটি নথি না আসায় রায়ের দিন পিছিয়ে ২৩ আগস্ট ধার্য করা হয়।
পরে কয়েক দফা পিছিয়ে ০৬ ডিসেম্বর রায় ঘোষণা করেন হাইকোর্ট।
রিট আবেদনে বলা হয়, সংবিধানের ৬৬ (২) (ঘ) অনুচ্ছেদ অনুসারে, কোনো ব্যক্তি সংসদের সদস্য নির্বাচিত হওয়ার এবং সংসদ সদস্য থাকার যোগ্য হবেন না, যদি তিনি নৈতিক স্খলনজনিত কোনো ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়ে কমপক্ষে দুই বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন এবং তার মুক্তিলাভের পর পাঁচ বছর অতিবাহিত না হয়ে থাকে। সে হিসেবে নিজাম হাজারী ২০১৫ সালের আগে সংসদ সদস্য হতে পারেন না। অথচ তিনি ২০১৪ সালের ০৫ জানুয়ারির নির্বাচনে সংসদ সদস্য হয়েছেন।
বাংলাদেশ সময়: ২২৩৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ১২, ২০১৭
ইএস/আরবি/