সূত্র আরো জানায়, সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র মঙ্গলবারই আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।
এর আগে অস্ট্রেলিয়া থেকে কানাডা যাওয়ার পথে গত শুক্রবার (১০ নভেম্বর) সিঙ্গাপুরস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনে রাষ্ট্রপতি বরাবর পদত্যাগপত্র জমা দেন সুরেন্দ্র কুমার সিনহা।
বিষয়টি নিয়ে নানামুখী জল্পনা তৈরি হয়।
পরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, সিঙ্গাপুরে যাত্রাবিরতিকালে শুক্রবার হাইকমিশনে পদত্যাগপত্র পৌছে দেন সুরেন্দ্র কুমার সিনহা।
শনিবার দুপুরে রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব জয়নাল আবেদিন বাংলানিউজকে পদত্যাগপত্র বঙ্গভবনে পৌছেছে বলে নিশ্চিত করেন।
কার্যত ছুটি নিয়ে বিদেশ সফরে থাকা সুরেন্দ্র কুমার সিনহা তার ছুটির শেষ দিনই পদত্যাগ পত্র জমা দেন। ১০ নভেম্বরই তার ছুটি শেষ হয়।
গত ১৩ অক্টোবর রাতে অস্ট্রেলিয়ার উদ্দেশে ঢাকা ছাড়েন প্রধান বিচারপতি। সেখানে তিনি বড় মেয়ে সূচনা সিনহার বাসায় ওঠেন। অস্ট্রেলিয়া থেকে চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর যান গত সোমবার। সেখান থেকে তিনি কানাডায় তার ছোট মেয়ে আশা সিনহা’র কাছে যান।
এর আগে গত ২ অক্টোবর এক মাস ছুটির কথা জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বরাবর চিঠি পাঠান প্রধান বিচারপতি। ওই ছুটির মেয়াদ ছিল ১ নভেম্বর পর্যন্ত। পরে তিনি ১০ নভেম্বর পর্যন্ত ছুটিতে থাকার ইচ্ছা পোষণ করে আইন মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বলেন।
এর ধারাবাহিকতায় গত ১২ অক্টোবর প্রজ্ঞাপনও জারি করে আইন মন্ত্রণালয়। আগামী ৩১ জানুয়ারি ছিলো প্রধান বিচারপতি হিসেবে সুরেন্দ্র কুমার সিনহা’র শেষ কার্যদিবস।
কিন্তু গত ১ আগস্ট সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর তা নিয়ে সরকার ও ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ সংক্ষুব্ধ হয়। বিশেষ করে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার বিভিন্ন পর্যবেক্ষণ নিয়ে ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করেন মন্ত্রী, দলীয় নেতা ও সরকারপন্থি আইনজীবীরা। তাঁরা প্রধান বিচারপতির পদত্যাগের দাবিও তোলেন।
সংসদে খোদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আদালত তাঁর এখতিয়ারের বাইরে গিয়ে সংসদে পাস হওয়া সংবিধানের সংশোধনী বাতিল করেছেন।
এক পর্যায়ে সুরেন্দ্র কুমার সিনহার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। আপিল বিভাগের অন্য সব বিচারপতি তার সঙ্গে বসতে অনিহা প্রকাশ করেন। এমন পরিস্থিতিতে সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বাংলাদেশে না ফিরে তার ছুটির শেষ দিন পদত্যাগপত্র পাঠান।
বাংলাদেশ সময়: ১১১০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৪, ২০১৭
এমইউএম/ইএস/জেডএম