ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১০ অক্টোবর ২০২৪, ০৬ রবিউস সানি ১৪৪৬

আইন ও আদালত

শাম্মী হত্যার তদন্তভার পিবিআইকে দেওয়ার নির্দেশ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮১১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৬, ২০১৭
শাম্মী হত্যার তদন্তভার পিবিআইকে দেওয়ার নির্দেশ

ঢাকা: রাজধানীর কল্যাণপুরে শামিমা লাইলা আরজুমান্না খান শাম্মী হত্যার তদন্তভার পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) দিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। 

একইসঙ্গে এ হত্যা মামলার ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পর্যালোচনার জন্য তিন সদস্যের বোর্ড গঠন করতে ঢাকা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
 
পত্রিকায় প্রকাশিত এ সংক্রান্ত একটি সংবাদ নজরে নিয়ে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বপ্রণোদিত হয়ে ৭ নভেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে তলব করেন।

সে অনুসারে তদন্ত কর্মকর্তা হাইকোর্টে হাজির হন। হাইকোর্ট মামলার নথিপত্র দেখে ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান সোহেল মাহমুদকে তলব করেন। নির্ধারিত দিনে তিনিও এসে ব্যাখ্যা দেন।
  
গত ৫ নভেম্বর একটি জাতীয় দৈনিকে “গৃহবধূ শাম্মী হত্যা মামলা- ‘মাকে বাবা অনেক কষ্ট দিয়ে মেরেছে’ তদন্ত কর্মকর্তার গড়িমসির অভিযোগ” শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশ করে।

প্রতিবেদনটি আদালতের নজরে আনেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী মহিউদ্দিন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ফরহাদ আহমেদ।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, আমার বাবা অন্য বাসার এক গৃহপরিচারিকাকে বিয়ে করে। মায়ের গলায় দড়ি দিয়ে বাবা তাকে মেরে ফেলে। এরপর ফ্যানে ঝুলায়। মাকে খুব কষ্ট দিয়ে মেরেছে। আপনার কাছে দড়ি আছে না? দড়ি দিয়ে আমার বাবাকে চেয়ারের সঙ্গে বাঁধবেন। তারপর মারতে মারতে মেরে ফেলবেন। কবর দেবেন না; জেলখানায় ফেলে রাখবেন।
 
মা শাম্মী হত্যার ঘটনায় বাবার বিরুদ্ধে এভাবেই মর্মস্পর্শী কথাগুলো বলছিলেন পাঁচ বছরের শিশু আরিয়ান। শুক্রবার (০৩ নভেম্বর) দুপুরে ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার মোয়াজ্জেমপুর গ্রামে তার নানার বাড়িতে কথা হয় মাহারা এ শিশুটির সঙ্গে। এ সময় ছোট ছোট বাক্যে বাবার নিষ্ঠুর নির্যাতনে মা মারা যাওয়ার কাহিনী বলে সে।
 
৭ জুন রাতে রাজধানীর কল্যাণপুরে ভাড়া বাসায় একটি বায়িং হাউসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা মো. আলমগীর হোসেন টিটু তার স্ত্রী শামিমা লাইলা আরজুমান্না খান শাম্মীকে নির্যাতন করে হত্যা করে। পরে চিকিৎসার নামে হাসপাতালে নেয়ার পর চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ ঘটনায় নিহত গৃহবধূর ছোটভাই মো. ফরহাদ হোসেন খান বাবু বাদী হয়ে ৮ জুন মিরপুর মডেল থানায় মামলা করেন। পরে পুলিশ ঘাতক স্বামী আলমগীর ও তার তৃতীয় স্ত্রী ইসরাত জাহান মুক্তাকে গ্রেফতার করে।

অভিযোগ উঠেছে, আলোচিত এ মামলার তদন্ত নিয়ে গড়িমসি করছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা মিরপুর মডেল থানার এসআই মো. নওশের আলী।

মামলার বাদী মো. ফরহাদ হোসেন বলেন, ঢাকায় অবস্থানরত আসামির ধণাঢ্য ভগ্নিপতি মো. আবদুল বাছেদ অর্থের মাধ্যমে ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পরিবর্তন এবং মামলাটি ভিন্ন খাতে নিতে কাজ করছেন। আর তাই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই নওশের আলী প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে আসামির পক্ষে ভূমিকা রাখছেন।

তবে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই নওশের আলীর সঙ্গে শুক্রবার বিকেলে মোবাইল ফোনে কথা হলে তিনি বাদী পক্ষের এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন- বলে ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।  
 
বাংলাদেশ সময়: ১২১৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৬, ২০১৭
ইএস/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।