ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

জিবিএক্স লজিস্টিকসের অর্থপাচার নিয়ে রিটের শুনানি হয়নি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪২৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১১, ২০১৮
জিবিএক্স লজিস্টিকসের অর্থপাচার নিয়ে রিটের শুনানি হয়নি

ঢাকা: নিজস্ব জাহাজ ও কার্গো দিয়ে সমুদ্রপথে পণ্য পরিবহনকারী আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান ‘হ্যাপাগ-লয়েড’র এ দেশীয় এজেন্ট ও মালামাল সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান জিবিএক্স লজিস্টিকস লিমিটেডের বিরুদ্ধে করফাঁকি ও অর্থপাচার সংক্রান্ত রিটের শুনানি হয়নি।

রোববার (১১ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের হাইকোর্ট বেঞ্চে রিট আবেদনটির শুনানির জন্য গেলে আদালত তা তিন সপ্তাহের জন্য মুলতবি করেন।

রিট আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আজমালুল হোসেন কিউসি।

সঙ্গে ছিলেন ইমতিয়াজ । রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন সাজু।

রিট আবেদনকারীর আইনজীবী আজমালুল হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, ‘সমুদ্রপথে পণ্য পরিবহনকারী জার্মানিভিত্তিক আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান ‘হ্যাপাগ-লয়েড’র এ দেশীয় এজেন্ট জিবিএক্স লজিস্টিকস লিমিটেড। ২০১৪ সালে এ প্রতিষ্ঠান হ্যাপাগ-লয়েডের মালামাল সরবরাহ করে বাংলাদেশ ব্যাংক নির্ধারিত (আমদানি সরবরাহ ২ শতাংশ, রপ্তানি সরবরাহ ২.৫-৫ শতাংশ) কমিশন অনুযায়ী বিপুল অংকের অর্থ আয় করে। ’

‘কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) নির্ধারিত ৩৭.৫ শতাংশ আয়কর না দিয়ে ৫ শতাংশ উৎসে কর দিয়ে করফাঁকি দিয়েছে। একইসঙ্গে অপ্রদর্শিত আয় পাচার করা হয়েছে। ’

আইনজীবী বলেন, ‘২০১২ সালে হ্যাপাগ-লয়েডের এজেন্ট ছিল এসডব্লিউ শিপিং কোম্পানি নামে একটি প্রতিষ্ঠান। সে বছর কোম্পানিটি পণ্যের কন্টেইনার সরবরাহ করে সাত কোটি ৮১ লাখ টাকা কমিশন হিসেবে আয় করে। ’

‘অথচ জিবিএক্স লজিস্টিকস লিমিটেড ২০১৪ সালে তাদের অর্থনৈতিক নিরীক্ষায় দেখিয়েছে এসডব্লিউ শিপিং কোম্পানির চেয়ে দ্বিগুণ কন্টেইনার সরবরাহ করে আয় করেছে মাত্র পাঁচ কোটি টাকা। সে হিসেবে তারা ২৫ লাখ ১৪ হাজার ৯৪০ টাকা উৎসে কর দেয়। ’

আইনজীবী আজমালুল হোসেন জানান, ওই একই বছর জিবিএক্স লজিস্টিকস সিঙ্গাপুরের ওইএল ও বিএলপিএল’র এজেন্ট হিসেবে আয় করে ৮ কোটি ১২ লাখ ৪০১ টাকা। অর্থাৎ ২০১৪ সালে প্রতিষ্ঠানটির মোট আয় ১২ কোটি ১২ লাখ ৪০১ টাকা। সে হিসাবে প্রতিষ্ঠানটি ৬১ লাখ ২৪ হাজার ৬৮৮ টাকা উৎসে কর দেয়। অথচ ৩৭.৫ শতাংশ হারে আয়কর দেওয়ার কথা। বিষয়টি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

রিট আবেদনকারী এ বিষয়টি উল্লেখ করে জিবিএক্স লজিস্টিকস ও ‘হ্যাপাগ-লয়েড’র বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, দুর্নীতি দমন কমিশন ও বাংলাদেশ ব্যাংকে ইতিপূর্বে দুইবার উকিল নোটিশ দিয়েছিলেন। কিন্তু সরকারের এ তিন প্রতিষ্ঠান থেকে কোনো প্রকার জবাব না পেয়ে গত সপ্তাহে আইনজীবী মতিউর রহমান হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিট আবেদন করেন। সে রিটের শুনানি তিন সপ্তাহ পিছিয়ে দিয়েছেন আদালত।

আইনজীবী আরও জানান, জিবিএক্স লজিস্টিকস লিমিটেডের বিরুদ্ধে রাজস্ব ফাঁকি, অর্থপাচারে অভিযোগ আনার পরও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, দুর্নীতি দমন কমিশন ও বাংলাদেশ ব্যাংকের নিস্ক্রিয়তা কেন আইনবিরুদ্ধ ঘোষণ করা হবে না এবং জিবিএক্স লজিস্টিকসের কাস্টমস লাইসেন্স কেন বাতিল করা হবে না, মর্মে রুল চাওয়া হয়েছে রিট আবেদনে।

এছাড়া হ্যাপাগ-লয়েড ও জিবিএক্স লজিস্টিকস লিমিটেডের চুক্তিসহ সব নথি প্রকাশ করতেও নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে রিট আবেদনে।

বাংলাদেশ সময়: ২০২৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১১, ২০১৮
এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।