ঢাকা, মঙ্গলবার, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২১ মে ২০২৪, ১২ জিলকদ ১৪৪৫

আইন ও আদালত

সম্পাদক পরিষদের সাত দফায় সমর্থন সুপ্রিম কোর্ট বারের

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৬, ২০১৮
সম্পাদক পরিষদের সাত দফায় সমর্থন সুপ্রিম কোর্ট বারের সংবাদ সম্মেলনে সুপ্রীম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নেতারা। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: সদ্য পাস হওয়া ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে সম্পাদক পরিষদের সাত দফা দাবির প্রতি সমর্থন দিয়েছে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি। 

মঙ্গলবার (১৬ অক্টোবর) সমিতির মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির সভাপতি জয়নুল আবেদীন এ সর্মথনের কথা জানান।  

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, সম্প্রতি পাস হওয়া ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন আগের ৫৭ ধারার চেয়েও উদ্বেগজনক।

বর্তমান আইনে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে অপরিসীম। হরণ করা হয়েছে সংবিধান প্রদত্ত অনুচ্ছেদ ৩৯ (১) ও ২) এর সকল অধিকার। তাই আমরা সম্পাদক পরিষদের সাত দফা দাবির প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করছি।  

তিনি বলেন, শুধুমাত্র সাংবাদিক সমাজেই নয়, আইনজীবীসহ অন্যান্য শ্রেণী-পেশা ও সাধারণ মানুষসহ প্রায় সবাই এই আইনের ব্যাপারে ক্ষোভ ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাই আমরা দেশ, গণতন্ত্র ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা এবং মানুষের সাংবিধানিক অধিকার রক্ষার জন্য এই আইনের নিবর্তনমূলক ধারা অনতিবিলম্বে বাতিলের জোর দাবি জানাচ্ছি।  

এ সময় সমিতির সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, সহ-সভাপতি মো. মোস্তফা, গোলাম রহমান ভূঁইয়া, সহ সম্পাদক কাজী জয়নুল আবেদীন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।  

এদিকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ৯টি ধারা সংশোধন চেয়ে  আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন সুপ্রীম কোর্টের এক আইনজীবী।

৩০ দিনের মধ্যে ধারাগুলো সংশোধনের উদ্যোগ নিতে তথ্যমন্ত্রী, আইনমন্ত্রী, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, তথ্য সচিব, আইন সচিবের কাছে এ নোটিশ পাঠান আইনজীবী জুলফিকার আলী জুনু।

সম্পাদক পরিষদের সাত দফা হচ্ছে- 

>> সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা ও বাকস্বাধীনতা সুরক্ষার লক্ষ্যে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ৮, ২১, ২৫, ২৮, ২৯, ৩১, ৩২, ৪৩ ও ৫৩ ধারা অবশ্যই যথাযথভাবে সংশোধন করতে হবে।

>> এসব সংশোধনী বর্তমান সংসদের শেষ অধিবেশনে আনতে হবে।

>> পুলিশ বা অন্য কোনও সংস্থার মাধ্যমে কোনও সংবাদমাধ্যম প্রতিষ্ঠানে তল্লাশি চালানোর ক্ষেত্রে তাদের শুধু নির্দিষ্ট বিষয়বস্তু আটকে দেওয়ার অনুমতি দেওয়া যাবে, কিন্তু কোনও কম্পিউটার ব্যবস্থা বন্ধ করার অনুমতি দেওয়া যাবে না। তারা শুধু তখনই প্রকাশের বিষয়বস্তু আটকাতে পারবে, যখন সংশ্লিষ্ট সংবাদ প্রতিষ্ঠানের সম্পাদকের সঙ্গে আলোচনা করে কেন ওই বিষয়বস্তু আটকে দেওয়া উচিত, সে বিষয়ে যৌক্তিকতা প্রমাণ করতে পারবে।

>> কোনো সংবাদমাধ্যম প্রতিষ্ঠানের কোনও কম্পিউটার ব্যবস্থা আটকে দেওয়া বা জব্দ করার ক্ষেত্রে অবশ্যই আদালতের আগাম নির্দেশ নিতে হবে।

>> সংবাদমাধ্যমের পেশাজীবীদের সাংবাদিকতার দায়িত্বের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অপরাধের ক্ষেত্রে প্রথমেই আদালতে হাজির হওয়ার জন্য তাদের বিরুদ্ধে সমন জারি করতে হবে (যেমনটা বর্তমান আইনে আছে) এবং সংবাদমাধ্যমের পেশাজীবীদের কোনও অবস্থাতেই পরোয়ানা ছাড়া ও যথাযথ আইন প্রক্রিয়া অনুসরণ ছাড়া আটক বা গ্রেফতার করা যাবে না।

>> সংবাদমাধ্যমের পেশাজীবীর দ্বারা সংঘটিত অপরাধের ক্ষেত্রে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের গ্রহণযোগ্যতা আছে কিনা, তার প্রাথমিক তদন্ত প্রেস কাউন্সিলের মাধ্যমে করা উচিত। এই লক্ষ্যে প্রেস কাউন্সিলকে যথাযথভাবে শক্তিশালী করা যেতে পারে।

>> এই সরকারের পাস করা তথ্য অধিকার আইনকে দ্ব্যর্থহীনতভাবে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ওপর প্রাধান্য দেওয়া উচিত। এই আইনে নাগরিক ও সংবাদমাধ্যমের জন্য যেসব স্বাধীনতা ও অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে, সেগুলোর সুরক্ষা অত্যাবশ্যক।

বাংলাদেশ সময়: ১৫১৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৮, ২০১৮
ইএস/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।