ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

মানবতাবিরোধী অপরাধ: লিয়াকত-রজবের রায় সোমবার

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৫২ ঘণ্টা, নভেম্বর ৪, ২০১৮
মানবতাবিরোধী অপরাধ: লিয়াকত-রজবের রায় সোমবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল

ঢাকা: মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলার মুড়াকরি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী ও কিশোরগঞ্জ জেলার অষ্টগ্রাম উপজেলার আমিনুল ইসলাম ওরফে রজব আলীর বিষয়ে সোমবার (৫ অক্টোবর) রায় ঘোষণা করবেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

রোববার (৪ নভেম্বর) চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এ দিন ঠিক করেন।
 
এর আগে গত ১৬ আগস্ট শুনানি শেষে এ মামলার রায় ঘোষণার জন্য অপেক্ষমান (সিএভি) রেখেছিলেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।


 
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন প্রসিকিউটর রানা দাশগুপ্ত। আসামিপক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী গাজী এম এইচতামিম শুনানি করেন।
 
২০১৬ সালের ১ নভেম্বর ওই দুইজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশ দিয়েছিলেন ট্রাইব্যুনাল।
 
২০১৫ সালের ২৭ ডিসেম্বর মামলার তদন্ত শেষ করার পর তা চূড়ান্তভাবে প্রকাশ করেন তদন্ত সংস্থা। এরপর ১৮ মে দুইজনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছিলেন ট্রাইব্যুনাল।
 
এই দুইজনের বিরুদ্ধে একাত্তরে হবিগঞ্জের লাখাই থানা, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর থানা ও কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম থানা এলাকায় গণহত্যা, হত্যা, অপহরণ, আটক, নির্যাতন ও লুটপাটের সাতটি অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে। এ মামলার তদন্ত করেছেন মো. নূর হোসেন।

দুই রাজাকারের পরিচয়
১৯৭১ সালে লিয়াকত আলী ব্রাহ্মণবাড়িয়া কলেজের ছাত্র ছিলেন। যুদ্ধের সময় তিনি মুসলিম লীগের সদস্য হিসেবে ফান্দাউক ইউনিয়নে রাজাকারের দায়িত্বে ছিলেন। স্বাধীনতার পরে এসে তিনি লাখাই থানা আওয়ামী লীগের সভাপতিও হয়েছিলেন।

অন্যদিকে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম থানার আলীনগরর গ্রামের রজব আলী ভৈরব হাজী হাসতম আলী কলেজে একাদশ শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় ইসলামী ছাত্র সংঘের কলেজ শাখার সভাপতি ছিলেন। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ভৈরবে পাকিস্তানি সেনা ক্যাম্পে অস্ত্র প্রশিক্ষণ নিয়ে রজব আলী এলাকায় আল বদর বাহিনী গঠন করেন। স্বাধীনের পর ১৯৭২ সালে তার বিরুদ্ধে দালাল আইনে তিনটি মামলা হয় এবং ওইসব মামলার বিচারে তার যাবজ্জীবন সাজা হয়।  

১৯৮১ সালে রজব ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্ত হন। এরপর তিনি ‘আমি আল বদর বলছি’ নামে একটি বই প্রকাশ করেন।
 
সাত অভিযোগ

এক. ১৯৭১ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর লিয়াকত ও রজব রাজাকার এবং পাকিস্তানি সেনাদের নিয়ে লাখাই থানার কৃষ্ণপুর গ্রামে অভিযান চালিয়ে গণহত্যা ও লুটপাট চালিয়ে কৃষ্ণপুর গ্রামে নৃপেন রায়ের বাড়িতে রাধিকা মোহন রায় ও সুনীল শর্মাসহ ১৫ জন জ্ঞাত ও ২৮ জন অজ্ঞাত হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকদের গুলি করে হত্যা করেন।
দুই ও তিন. একই এলাকার চণ্ডিপুর ও গদাইনগর গ্রামে গণহত্যা ও লুটপাট করেছেন তারা।
চার. অষ্টগ্রাম থানার সদানগর গ্রামে শ্মশানঘাটে হত্যাকাণ্ড চালান তারা।
পাঁচ. ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর থানার ফান্দাউক গ্রামের বাচ্চু মিয়াকে অপহরণ এবং রঙ্গু মিয়াকে অপহরণ ও হত্যা করেছেন তারা।
ছয় ও সাত. অষ্টগ্রাম থানার সাবিয়ানগর গ্রামে চৌধুরী বাড়িতে হত্যা ও সপ্তম অভিযোগে সাবিয়ানগর গ্রামে খাঁ বাড়িতে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে।  

বাংলাদেশ সময়: ১১৫১ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৪, ২০১৮
ইএস/আরআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।