ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

‘এখন পর্যন্ত রাসেলের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি গ্রিনলাইন’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২৩৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ১০, ২০১৯
‘এখন পর্যন্ত রাসেলের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি গ্রিনলাইন’ আদালত প্রাঙ্গণে প্রাইভেটকারচালক রাসেল সরকার। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে ফ্লাইওভারের ওপর গ্রিনলাইন পরিবহনের বাসচাপায় পা হারানো প্রাইভেটকারচালক রাসেল সরকারকে ৫০ লাখ টাকার আদেশ বাস্তবায়নে বুধবার (১০ এপ্রিল) প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ ছিলো হাইকোর্টের।

কিন্তু রাসেল সরকার বলছেন, এ বিষয়ে এখন ৯ এপ্রিল (মঙ্গলবার) পর্যন্ত তার সঙ্গে কিংবা রিটের পক্ষের আইনজীবীর সঙ্গে কেউ যোগযোগ করেননি।

এদিকে রাসেল সরকারকে ৫০ লাখ টাকা দেওয়া সংক্রান্ত এ রিট মামলায় সুপ্রিম কোর্টে একটি আবেদন করেছে বাস মালিক সমিতি।

তাদের আবেদনের পক্ষে লড়তে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আবদুল মতিন খসরুকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিলো। কিন্তু তাতে সাড়া দেননি তিনি।  

 মঙ্গলবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আবদুল মতিন খসরু বলেন, এটা একটা হৃদয় বিদারক ঘটনা। মানসিকভাবে আমি ভিকটিমের পক্ষে। আমি টাকার জন্য তো ওই পক্ষে যেতে পারি না। সুতরাং আমাকে ফি অফার করেছিলো, টাকা অফার করেছিলো, আমি বলেছি না।

গত বছরের ২৮ এপ্রিল মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফ্লাইওভারে কথা কাটাকাটির জেরে গ্রিনলাইন পরিবহনের বাসচালক ক্ষিপ্ত হয়ে প্রাইভেটকারচালকের ওপর দিয়েই বাস চালিয়ে দেন। এতে ঘটনাস্থলেই প্রাইভেটকারচালক রাসেল সরকারের (২৩) বাম পা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।

এ ঘটনায় হাইকোর্টে রিট আবেদনটি দায়ের করেন সংরক্ষিত আসনের তৎকালীন সংসদ সদস্য উম্মে কুলসুম স্মৃতি। এ রিটের প্রেক্ষিতে ২০১৮ সালের ১৪ মে রাসেলকে কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ কেন দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছিলেন হাইকোর্ট।

সম্প্রতি রাসেলের পক্ষ থেকে আদালতে জানানো হয়, এখন পর্যন্ত বাস কর্তৃপক্ষ তার কোনো খোঁজখবর নেয়নি। পরে গত ১২ মার্চ বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চ রাসেল সরকারকে ৫০ লাখ টাকা দেওয়ার আদেশের পাশাপাশি রাসেলের অন্য পায়ে অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হলে এবং কাটাপড়া বাম পায়ে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে কৃত্রিম পা লাগানোর খরচও গ্রিনলাইন পরিবহন কর্তৃপক্ষকে দিতে বলা হয়েছিলো। এ আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে গিয়ে ৩১ মার্চ বিফল হয় গ্রিনলাইন কর্তৃপক্ষ।

এদিকে হাইকোর্ট বিভাগ ৩ এপ্রিলের মধ্যে টাকা পরিশোধ করে ৪ এপ্রিলের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলেন। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে টাকা না দেওয়ায় ৪ এপ্রিল কোম্পানির ম্যানেজারকে দুপুর ২টার মধ্যে হাইকোর্টে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেন আদালত। ম্যানেজার আব্দুস সাত্তার হাজির হয়ে গ্রিনলাইনের মালিক দেশের বাইরে চিকিৎসার জন্য রয়েছেন বলে আদালতকে অবহিত করেন। একইসঙ্গে মালিক ৯ এপ্রিল ফিরবেন বলে জানান।

এরপর আদালত তাদের আদেশ বাস্তবায়ন করে ১০ এপ্রিল  (বুধবার) প্রতিবেদন দিতে বলেন।

আদালত মৌখিকভাবে বলেছেন, যদি আদালতের নির্দেশ পালন না করা হয় তাহলে ১১ এপ্রিল অগ্রিম টিকিট তারা বিক্রি করতে পারবেন না।

আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খোন্দকার শামসুল হক রেজা। গ্রিনলাইন পরিবহনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী অজি উল্লাহ।

মঙ্গলবার রাতে রাসেল সরকার বলেন, গ্রিনলাইনের পক্ষ থেকে কেউ এখনো যোগোযোগ করেনি। আগামীকাল মামলার তারিখ আছে। আদালতে যাবো।

বাংলাদেশ সময়: ২২৩৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৯, ২০১৯
ইএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।