মঙ্গলবার (১১ জুন) দুপুরে গাইবান্ধা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক দিলীপ কুমার ভৌমিক এ রায় ঘোষণা করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) শফিকুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে বাংলানিউজকে বলেন, মামলা দায়ের হওয়ার ৩ বছর চার মাস বিচারকার্য চলার পর মঙ্গলবার আলোচিত এই মামলার রায় ঘোষণা করেন বিচারক।
রায় ঘোষণার পর পরেই কাদের খানকে পুলিশ পাহাড়ায় গাইবান্ধা জেলা কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। আদালতের দেওয়া রায়ের প্রতি সন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি।
এর আগে কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে জেলা কারাগার থেকে সকাল ৯টা ৫০মিনিটে প্রিজনভ্যানে কাদের খানকে আদালতে আনে পুলিশ।
দণ্ডিত আসামি আব্দুল কাদের খান গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ছাপরহাটি গ্রামের মৃত্যু নয়ান খানের ছেলে। ২০১৭ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি বগুড়ার বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
এদিকে রায়ের সময় আদালতে লিটনের স্ত্রী খুরশিদ জাহান স্মৃতি উপস্থিত ছিলেন। রায় ঘোষণার পর তিনিও আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন। এসময় রায়ের প্রতি সন্তোষ প্রকাশ কেরন তিনি। তবে লিটন হত্যা মামলার বিচারকার্য দ্রুত শেষ করে আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানান তিনি।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, ২০১৭ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি কাদের খানের সুন্দরগঞ্জের ছাপরহাটির গ্রামের বাড়ির উঠানের মাটির নিচ থেকে একটি পিস্তল, ছয় রাউন্ড গুলি ও একটি ম্যাগজিন উদ্ধার করে পুলিশ। অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় ২৫ ফেব্রুয়ারি কাদের খানের বিরুদ্ধে পুলিশ বাদী হয়ে (অস্ত্র আইনে) সুন্দরগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্ত শেষ ৩৯ দিন পর ৫ এপ্রিল তদন্তকারী কর্মকর্তা কাদের খানকে আসামি করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। দীর্ঘ ৩ বছর প্রায় চার মাস মামলার বিচারকার্য চলে আদালতে।
২০১৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর নিজ বাড়ি সুন্দরগঞ্জের সাহাবাজ (মাস্টারপাড়া) গ্রামে দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত হন সাবেক এমপি মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন।
হত্যার ঘটনায় ২০১৭ সালের ১ জানুয়ারি লিটনের বড় বোন ফাহমিদা কাকুলি বুলবুল বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয় পাঁচ থেকে ছয়জনকে আসামি করে সুন্দরগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন। এছাড়া হত্যার কাজে ব্যবহ্নত গুলিভর্তি পিস্তত উদ্ধারের ঘটনায় অস্ত্র আইন মামলায় সুন্দরগঞ্জ থানায় মামলা করে পুলিশ।
হত্যা মামলায় প্রধান আসামি কাদের খানসহ চারজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে পুলিশ আসামিদের আদালতে হাজির করলে লিটন হত্যার দায় স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। বর্তমানে আদালতে হত্যা মামলাটির সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে। এমপি মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন হত্যায় ৩টি অস্ত্র ব্যবহার হয়। এরমধ্যে ১০ রাউন্ড গুলিসহ একটি অস্ত্র কাদের খান লোক মাধ্যমে সুন্দরগঞ্জ থানায় জমা দিয়েছেন। দ্বিতীয় অস্ত্রটি আব্দুল কাদের খানের গ্রামের বাড়ি ছাপরহাটি থেকে উদ্ধার করা হয়।
হত্যাকাণ্ডের দু'মাসে জামায়াত-শিবিরসহ প্রায় দুই শতাধিক ব্যক্তিকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী গ্রেফতার করলেও প্রকৃত জড়িতরা থাকে ধরা ছোঁয়ার বাইরে। এরপর একটি ছিনতাইয়ের ঘটনায় ফেলে যাওয়া ম্যাগজিনের সূত্র ধরে এমপি লিটন হত্যার মামলার ক্লু উদঘাটন করাসহ হত্যার পরিকল্পনাকারী আবদুল কাদের খানসহ চার কিলারকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় পুলিশ।
এ মামলায় ২০১৭ সালের ৩০ এপ্রিল কাদের খানসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ।
বাংলাদেশ সময়: ১৩২৩ ঘণ্টা, জুন ১১, ২০১৯/আপডেটেড: ১৪২১
এএটি