ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

ভূমধ্যসাগরে নিহত ৩৭ জনের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিতে রিট

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৫৮ ঘণ্টা, জুন ১৭, ২০১৯
ভূমধ্যসাগরে নিহত ৩৭ জনের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিতে রিট

ঢাকা: সম্প্রতি ভূমধ্যসাগরে যে ৩৭ জন বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন তাদের প্রত্যেকের পরিবারের জন্য এক কোটি টাকা করে ক্ষতিপূরণ এবং ওই ঘটনা তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে রিট করা করা হয়েছে। 

বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চে এ রিটের ওপর শুনানি হবে বলে জানিয়েছেন রিটকারী সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ এমদাদুল হক সুমন।

সোমবার (১৭ জুন) তিনি সাংবাদিকদের জানান, প্রতারক ট্রাভেল এজেন্সি ও মানব পাচার চক্রের সদস্যদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা চেয়ে রোববার (১৬ জুন) হাইকোর্টে এ রিট আবেদন করা হয়েছে।

 

রিট আবেদনে স্বরাষ্ট্র সচিব, পররাষ্ট্র সচিব, প্রবাসী কল্যাণ সচিব, আইন সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক, সিলেট ও নোয়াখালীর এসপিকে বিবাদী করা হয়েছে।

রিট আবেদনে সম্প্রতি ভূমধ্যসাগরে যে ৩৭ জন বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন তাদের প্রত্যেকের পরিবারের জন্য এক কোটি টাকা করে ক্ষতিপূরণ চাওয়া হয়েছে। পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত পাচার সংক্রান্ত ঘটনা তদন্ত করে ৩০ দিনের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশনাও চাওয়া হয়েছে।  

প্রতারক ট্রাভেল এজেন্সি ও মানব পাচার চক্রকে আইনের আওতায় আনার বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে সিলেট ও নোয়াখালীর এসপিকে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।  

এছাড়া এ রিট আবেদনে প্রতারক ট্রাভেল এজেন্সি ও মানব পাচার চক্রের সদস্যদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণে নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারির আর্জি জানানো হয়েছে।

আইনজীবী মোহাম্মদ এমদাদুল হক সুমন সাংবাদিকদের আরও বলেন, গত ৯ মে ভূমধ্যসাগরে তিউনিসিয়ার উপকূলে নৌকাডুবিতে ৩৭ বাংলাদেশির মৃত্যু হয়। এ বিষয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। ওইসব প্রতিবেদনে প্রতারক ট্রাভেল এজেন্সিসহ , ১৫ পাচার চক্র ও নোয়াখালীর তিনভাই চক্র অবৈধভাবে মানব পাচারের সঙ্গে জড়িত থাকার তথ্য উঠে আসে। এরপর এবিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বিবাদীদের বরাবর আইনি নোটিশ পাঠান এ আইনজীবী। কিন্তু নোটিশের কোনো জবাব না পেয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত ওইসব প্রতিবেদন যুক্ত করে রিট আবেদন করা হয়।  

গণমাধ্যমের খবর অনুসারে গত ৯ মে গভীর রাতে লিবিয়ার উপকূল থেকে ৭৫ জন অভিবাসী একটি বড় নৌকায় চড়ে ইতালির উদ্দেশে রওয়ানা হন। গভীর সাগরে বড় নৌকাটি থেকে অপেক্ষাকৃত ছোট একটি নৌকায় তাদের তোলা হলে কিছুক্ষণের মধ্যে সেটি ডুবে যায়।

তিউনিসিয়ার রেড ক্রিসেন্ট কর্মকর্তা মঙ্গি স্লিমকে উদ্ধৃত করে বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, রাবারের তৈরি নৌকাটি ১০ মিনিটের মধ্যেই ডুবে যায়।

তিউনিসিয়ার জেলেরা ১৬ জনকে উদ্ধার করে ১১ মে সকালে জারজিজ শহরের তীরে নিয়ে আসে। উদ্ধার হওয়া অভিবাসীরা জানান, সাগরের ঠাণ্ডা পানিতে তারা প্রায় আট ঘণ্টা ভেসে ছিলেন। উদ্ধার হওয়া ১৬ জনের ১৪ জনই বাংলাদেশি।

বাংলাদেশি বেঁচে ফেরা অভিবাসীদের ভাষ্যমতে, নৌকাটিতে ৫১জন বাংলাদেশি ছাড়াও তিনজন মিশরীয় এবং মরক্কো, চাঁদ এবং আফ্রিকার অন্যান্য কয়েকটি দেশের নাগরিক ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৯ ঘণ্টা, জুন ১৭, ২০১৯
ইএস/এমএ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।