বিচারিক আদালত থেকে এ মামলার নথি আসার তথ্য আদালতকে জানিয়ে জামিন আবেদন উপস্থাপন করলে রোববার (২৩ জুন) বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ কথা বলেন।
এর আগে ৩০ এপ্রিল জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাত বছরের দণ্ডের বিরুদ্ধে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেছেন হাইকোর্ট।
ওইদিন আপিল শুনানির জন্য গ্রহণের পর জয়নুল আবেদীন খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন শুনানি করতে গেলে আদালত বলেছিলেন, ‘আগে নথি আসুক। তখন দেখা যাবে। এটাতে আর্জেন্সি নেই। ’
এরপর ২০ জুন গত বৃহস্পতিবার বিচারিক আদালত থেকে মামলার নথি হাইকোর্টে পাঠানো হয়। রোববার আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন মওদুদ আহমদ ও ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন।
পরে জয়নুল আবেদীন সাংবাদিকদের বলেন, ‘জামিন আবেদন করা হয়েছে জানিয়ে অতিসত্বর শুনানি করতে নিবেদন করেছি। আদালত বলেছেন, আলোচনা করে পরবর্তীতে একটা তারিখ দিবেন। অর্থাৎ জামিন আবেদনটি আমরা আদালতের কাছে এক্সপ্রেস করেছি। ’
এক প্রশ্নে জয়নুল আবেদীন বলেন, ‘শুনানির তারিখ না দিলেও আদালত বলেছেন খুব সহসাই তারিখ দেবেন। ’
এর আগে গত ১৮ নভেম্বর হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আপিল করা হয়।
গত ২৯ অক্টোবর পুরান ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের প্রশাসনিক ভবনের ৭ নম্বর কক্ষে স্থাপিত ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক মো. আখতারুজ্জামান জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াকে সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন আদালত।
একই সঙ্গে তাকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। একই সাজা হয়েছে মামলার অপর তিন আসামিরও।
খালেদা জিয়ার পাশাপাশি দণ্ডপ্রাপ্ত অপর তিনজন হলেন- সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার তৎকালীন রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, হারিছ চৌধুরীর তৎকালীন একান্ত সচিব জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান।
এর মধ্যে গত ফেব্রুয়ারিতেই জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় পাঁচবছর কারাদণ্ড পেয়ে বন্দি রয়েছেন খালেদা জিয়া। পরবর্তীতে আপিলের পর হাইকোর্টে যা বেড়ে ১০ বছর হয়। হারিছ চৌধুরী রয়েছেন পলাতক।
অপর দুই আসামি দীর্ঘদিন জামিনে থাকলেও সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে মুন্না ও মনিরুলকেও কারাগারে পাঠানো হয়।
চারজনের বিরুদ্ধে দণ্ড ঘোষণার পাশাপাশি জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের টাকায় খালেদা জিয়ার নামে কাকরাইলে কেনা ৪২ কাঠা জমি রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত ঘোষণা করেন আদালত।
২০১০ সালের ৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলা করা হয়। এ ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লেনদেনের অভিযোগে মামলাটি করে দুদক।
তদন্ত শেষে ২০১২ সালে খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় দুদক। ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ খালেদাসহ চার আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। সাক্ষ্যগ্রহণ কার্যক্রম শেষ হলে দুদকের পক্ষে এই মামলায় যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা হয়।
তবে শুনানি চলাকালে খালেদা জিয়া একাধিকবার আদালতে হাজির হতে অনিচ্ছা দেখান।
সবশেষ গত ২০ সেপ্টেম্বরও তিনি আদালতে হাজির না হওয়ায় তাকে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি দেন বিচারক; একই সঙ্গে খালেদার অনুপস্থিতিতে বিচারিক কার্যক্রম চলবে বলে আদেশ দেন। এর বিরুদ্ধে খালেদা জিয়া হাইকোর্টে আবেদন করলে ১৪ অক্টোবর সেটি খারিজ হয়ে যায়।
বাংলাদেশ সময়: ১৩০৫ ঘণ্টা, জুন ২৩, ২০১৯
ইএস/এমএ