সোমবার (১৫ জুলাই) কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারের সামনে বিশেষ জজ আদালত-৩ এর বিচারক আবু সৈয়দ দিলজার হোসেনের আদালতে মামলাটি চার্জ শুনানির জন্য দিন ধার্য ছিল। কিন্তু খালেদা জিয়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকায় এদিন তাকে আদালতে হাজির করেনি কারা কর্তৃপক্ষ।
শুনানিতে খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা আদালতকে বলেন, খালেদা জিয়া অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। এ অবস্থায় আসামির অনুপস্থিতিতে চার্জ শুনানি করা আইনসম্মত হবে না। এজন্য চার্জ শুনানি পেছানোর জন্য সময়ের আবেদন করা হচ্ছে।
এর আগে সবশেষ গত ২৪ জানুয়ারি খালেদা জিয়াকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়েছিল। ওইদিন খালেদা আদালতে তাকে বসানোর স্থান নিয়ে আপত্তি জানিয়েছিলেন।
জরুরি বিধিমালা সংযুক্ত এ মামলার অভিযোগপত্রের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে মামলা বাতিল চেয়ে রিট করেছিলেন খালেদা জিয়া। রিটের কারণে প্রায় ৮ বছর নিম্ন আদালতে বিচারিক কার্যক্রম বন্ধ ছিল। রিট খারিজ করে উচ্চ আদালত ২০১৬ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে দুই মাসের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন। উচ্চ আদালতের নির্দেশে ওই বছরের ৫ এপ্রিল আত্মসমর্পণ করে জামিন পান খালেদা।
২০০৭ সালের ২ সেপ্টেম্বর দুদকের উপ-পরিচালক মো. গোলাম শাহরিয়ার ১৩ জনের বিরুদ্ধে বাদী হয়ে তেজগাঁও থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
২০০৮ সালের ১৩ মে মামলাটি তদন্ত করে জোট সরকারের প্রভাবশালী ৯ জন সাবেক মন্ত্রী ও উপমন্ত্রীসহ মোট ২৪ জনের বিরুদ্ধে দুদকের উপ-পরিচালক মো. জহিরুল হুদা অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
২৪ আসামির মধ্যে সাবেক মন্ত্রী এম সাইফুর রহমান, আব্দুল মান্নান ভূঁইয়া, সাবেক মন্ত্রী ও জামায়াতের আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রাহমান কোকো, এমকে আনোয়ার, সাবেক মন্ত্রী এম শামছুল ইসলাম, বন্দরের প্রধান অর্থ ও হিসাবরক্ষক কর্মকর্তা আহমেদ আবুল কাশেমের মৃত্যুর পর এ মামলায় বর্তমান আসামির সংখ্যা ১৭ জন।
অন্য আসামির মধ্যে রয়েছেন— বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের (চবক) সাবেক চেয়ারম্যান কমোডর জুলফিকার আলী, সাবেক মন্ত্রী কর্নেল আকবর হোসেনের স্ত্রী জাহানারা আকবর (প্রয়াত), দুই ছেলে ইসমাইল হোসেন সায়মন এবং একেএম মুসা কাজল, এহসান ইউসুফ, সাবেক নৌ সচিব জুলফিকার হায়দার চৌধুরী, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের (চবক) সাবেক সদস্য একে রশিদ উদ্দিন আহমেদ এবং গ্লোবাল অ্যাগ্রোট্রেড প্রাইভেট লি. (গ্যাটকো) এর পরিচালক শাহজাহান এম হাসিব, সাবেক মন্ত্রী ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী একেএম মোশাররফ হোসেন।
চলতি বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি দুদকের প্রসিকিউটর মোশারফ হোসেন কাজল সব আসামির কিরুদ্ধে দণ্ড-বিধির ৪০৯ ও ১০৯ এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারায় অভিযোগ গঠনের আবেদন করেন।
গত ১৩ মে সরকার এক প্রজ্ঞাপন জারি করে বলেছে, মামলার বিচার কার্যক্রম ঢাকা মহানগরের বকশিবাজার এলাকার সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা ও সাবেক ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার সংলগ্ন মাঠে পরিচালিত হচ্ছে। নিরাপত্তাজনিত কারণে সরকার কেরানীগঞ্জে কেন্দ্রীয় কারাগারের সামনে নবনির্মিত ২ নম্বর ভবনকে অস্থায়ী আদালত হিসেবে ঘোষণা করেছে এবং মামলার বিচাররিক কার্যক্রম ওই ভবনের অস্থায়ী আদালতে এখন থেকে অনুষ্ঠিত হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৭ ঘণ্টা, জুলাই ১৫, ২০১৯
এমএআর/এএ