ওই ঘটনায় ২০১৭ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর সাময়িক বরখাস্তের পর চলতি বছরের ৩১ মার্চ তাদের ‘তিরস্কার’ লঘুদণ্ড দিয়ে সাময়িক বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহার করেন। এরপর তারা ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরে চাকরি শুরু করেন।
৩১ মার্চের এ প্রত্যাহার আদেশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে এক আবেদনের পর বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চ রুল জারি করে এ নিষেধাজ্ঞার আদেশ দেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। দুই কর্মকর্তার পক্ষে ছিলেন আইনজীবী রবিউল আলম বুদু।
পরে মনজিল মোরসেদ জানান, ২০০৯ সালে রিড ফার্মার ভেজাল প্যারাসিটামল সিরাপ খেয়ে সারাদেশে অনেক শিশু মারা যায়। এ ঘটনায় ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের পক্ষ থেকে পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। মামলার বিচার শেষে ২০১৬ সালের ২৮ নভেম্বর পাঁচজনকে খালাস দেন বিচারিক আদালত।
ওই রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারিক আদালত বলেছিলেন, ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর মামলাটি করার ক্ষেত্রে ১৯৮০ সালের ড্রাগ আইন যথাযথভাবে অনুসরণ করেনি। মামলায় যথাযথভাবে আলামত জব্দ করা, তা রাসায়নিক পরীক্ষাগারে পাঠানো ও রাসায়নিক পরীক্ষার প্রতিবেদন আসামিদের দেওয়া হয়নি। এক্ষেত্রে ড্রাগ আইনের ২৩, ২৫ ধারা প্রতিপালন করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষেত্রে তৎকালীন ওষুধ তত্ত্বাবধায়ক শফিকুল ইসলাম ও আলতাফ হোসেন চরম অবহেলা, অযোগ্যতা ও অদক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন।
এদিকে বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে পরে হাইকোর্টে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। ওই আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন ২০১৭ সালের ৯ মার্চ।
ওই সময় মনজিল মোরসেদ বলেছিলেন, রিড ফার্মার ভেজাল প্যারাসিটামল সিরাপ খেয়ে ২৮ শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় আদালতের রায়ে ওষুধ প্রশাসনের দুই কর্মকর্তার অদক্ষতা ও অযোগ্যতা এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনে অবহেলার বিষয়টি উঠে আসার পর তাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তা ৭২ ঘণ্টার মধ্যে জানতে চেয়েছিলেন হাইকোর্ট।
এরপর স্বাস্থ্য সচিবের একটি প্রতিবেদন দেওয়া হয়। যাতে বলা হয়- ওই দুই কর্মকর্তাকে সতর্ক করা হয়েছে। অথচ আদালত জানতে চেয়েছিল কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ব্যবস্থা না নেওয়ায় ব্যাখ্যা দিতে স্বাস্থ্য সচিবকে ২০১৭ সালের ২৩ আগস্ট তলব করেন হাইকোর্ট।
পরে ওই বছরের ২৪ আগস্ট সচিব আদালতকে জানান দুই কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করা হয়।
চলতি বছরের ৩১ মার্চ আলাদ আদেশে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. আসাদুল ইসলাম তাদের ‘তিরস্কার’ লঘু দণ্ড দিয়ে সাময়িক বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহারসহ বিভাগীয় মামলার দায় থেকে অব্যাহতি দেন।
মনজিল মোরসেদ আরও জানান, এরপর তারা ফের চাকরি শুরু করেন। এর বিরুদ্ধে আবেদনের পর আজ হাইকোর্ট ৩১ মার্চের মন্ত্রণালয়ের জারি করা আদেশ কেন অবৈধ এবং আইনগত কর্তৃত্ব বর্হিভূত ঘোষণা করা হবে তা ২ সপ্তাহের মধ্যে জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন।
এছাড়া অন্তর্বর্তীকালীন আদেশে ওষুধ প্রশাসনে তাদের চাকরির ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৫ ঘণ্টা, জুলাই ১৮, ২০১৯
ইএস/এএ