বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) মামলাটির তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দিন নির্ধারিত ছিল। কিন্তু মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মঞ্জুর মোর্শেদ প্রতিবেদন জমা না দেওয়ায় ঢাকার সিনিয়র স্পেশাল জজ কেএম ইমরুল কায়েস প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নতুন এ দিন ধার্য করেন।
গত ২ জুলাই (মঙ্গলবার) একই আদালত এ মামলায় তার জামিনের আবেদন নাকচ করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এর আগে গত ১ জুলাই সোমবার বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ তার জামিনের আবেদন করেন। কিন্তু আদালত তা খারিজ করে কাস্টডিতে নেওয়ার নির্দেশ দেন। পরে শাহবাগ থানা পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।
গত বৃহস্পতিবার ২০ জুন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদুক) পরিচালক মমলার তদন্ত কর্মকর্তা মঞ্জুর মোর্শেদের করা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে একই আদালত পুলিশের ডিআইজি মিজানুর রহমানের সব স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ বাজেয়াপ্ত ও ব্যাংক হিসাব জব্দ করার আদেশ দিয়েছিলেন।
ডিআইজি মিজানের বাজেয়াপ্ত করা সম্পত্তির মধ্যে রয়েছে- বেইলি রিটজ ভবনের চতুর্থ তলায় ৫৫ লাখ টাকার একটি ফ্ল্যাট, কার পার্কিং স্পেসসহ ৫৫ দশমিক ৫১ অযুতাংশ জমি, কাকরাইলে ২ কোটি ২০ লাখ টাকার একটি বাণিজ্যিক ফ্ল্যাট, দোকান ও জমি। এসব সম্পত্তির মূল্য মোট ৩ কোটি ৪৩ লাখ ৭৪ হাজার ৪৬০ টাকা। এছাড়া ধানমন্ডি সিটি ব্যাংকের হিসাবে রয়েছে ১০ লাখ টাকা।
বাজেয়াপ্ত করা সম্পত্তি যেন হস্তান্তর, বিক্রি বা মালিকানা স্বত্ব বদল করতে না পারে, সে জন্য ঢাকা জেলা রেজিস্ট্রারের নিবন্ধন পরিদপ্তরের মহাপরিদর্শক, তেজগাঁও শিল্প এলাকার ঢাকা রেজিস্ট্রার কমপ্লেক্স, নারায়ণগঞ্জ জেলা রেজিস্ট্রার এবং ধানমন্ডি, মোহাম্মদপুর, গুলশান, সাভার ও উত্তরার সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) নির্দেশ দিয়েছেন।
অন্যদিকে, ব্যাংক হিসাব জব্দ করার আদেশে বলেছেন, ডিআইজি মিজানের জব্দ করা অ্যাকাউন্টে তার নামে অর্থ জমা করা যাবে, কিন্তু কোনো অবস্থাতেই অর্থ তোলা যাবে না। সিটি ব্যাংকের ধানমিন্ড শাখার ম্যানেজারেক এ আদেশ পালনের নির্দেশ দিয়েছেন।
গত ১২ জুন পুলিশের ডিআইজি মিজানুর রহমানের সম্পদ অনুসন্ধানে দায়িত্ব দেওয়া হয় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পরিচালক মঞ্জুর মোরর্শেদকে। ঘুষগ্রহণ ও তথ্য পাচারের অভিযোগে আগের অনুসন্ধান কর্মকর্তা দুদক পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছিরকে সাময়িক বরখাস্ত করার পর এ নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
গত ২৪ জুন ৩ কোটি ৭ লাখ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন ও ৩ কোটি ২৮ লাখ টাকা অবৈধভাবে অর্জনের অভিযোগে মিজানুরের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। মামলায় মিজানুর রহমান, তার স্ত্রী সোহেলিয়া আনার রত্না, ছোট ভাই মাহবুবুর রহমান ও ভাগনে পুলিশের কোতোয়ালি থানার উপ-পরিদর্শক এসআই মো. মাহমুদুল হাসানকে আসামি করা হয়েছে।
মিজানুর ঢাকা মহানগর পুলিশে (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার হিসেবে কর্মরত থাকার সময় বিয়ে গোপন করতে ক্ষমতার অপব্যবহার করে দ্বিতীয় স্ত্রীকে গ্রেফতার করানোর অভিযোগ উঠেছিল তাঁর বিরুদ্ধে। এ ছাড়া এক সংবাদ পাঠিকাকে প্রাণনাশের হুমকি ও উত্ত্যক্ত করার অভিযোগে মিজানুরের বিরুদ্ধে বিমান বন্দর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়। নারী নির্যাতনের অভিযোগে গত বছরের জানুয়ারির শুরুর দিকে তাকে প্রত্যাহার করে পুলিশ সদর দপ্তরে সংযুক্ত করা হয়। গত ২৫ জুন তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
গত ২৮ আগস্ট (বুধবার) ঘুষ কেলেঙ্কারি মামলায়ও একই আদালত তার জামিনের আবেদন নাকচ করে দিয়েছে।
এছাড়া গত ৪ জুলাই মিজানুরের ভাগনে পুলিশের কোতোয়ালি থানার এসআই মো. মাহমুদুল হাসানকে পুলিশ গ্রেফতার করে আদালতে হাজির করলে একই আদালত তাকেও কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন ।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৪ ঘণ্টা, আগস্ট ২৯, ২০১৯
এমএআর/এইচএডি