গত ১ আগস্ট থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত ‘মেয়াদোত্তীর্ণ ও নকল, ভেজাল ওষুধ বিক্রয়ে গৃহীত কার্যক্রম’ শীর্ষক ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের একটি প্রতিবেদন মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) আদালতে উপস্থাপন করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, এই সময়ে ১৩ হাজার ৫৯৩টি ফার্মেসি পরিদর্শন করে মোবাইল কোর্টে ৫৭২টি মামলা করা হয়।
এছাড়াও একইসময়ে ৩৪ কোটি ৭ লাখ ৬৯ হাজার ১৪৩ টাকার টাকার মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ ধ্বংস করা হয়েছে।
বিচারপতি এফআরএম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কেএম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চ পরবর্তী আদেশের জন্য ১২ ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার) দিন ঠিক করেছেন।
আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এবিএম আলতাফ হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এবিএম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী কামরুজ্জামান কচি। বাংলাদেশ ঔষধ শিল্প সমিতির পক্ষে ছিলেন আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক।
আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক বলেন, অভিযানের সঙ্গে আমরা একমত। নকল ওষুধ যেন বাজারে না থাকে এটা আমরাও চাই। একটা আবেদন ছিলো ওষুধের গায়ে যেন বাংলায় লেখা থাকে। আমরা প্যাকেট খুলে দেখিয়েছি বাংলায় লেখা আছে। মেয়াদোত্তীর্ণর তারিখ ইংরেজিতে লেখা। ওনারা স্ট্রিপে (পাতায়) চেয়েছেন বাংলায়। স্ট্রিপে ইংরেজিতে লেখা আছে। খুব একটা ভিজিবল হয় না। ফরমেটের কারণে। আমরা বলেছি ফ্যাক্টরি মালিকদের সঙ্গে বসবো। বসে যতটুকু সম্ভব, অলরেডি অনেকগুলো বাংলায় হয়ে গেছে। তবে শতভাগ যেন হয়। আমাদের বিদেশেও ওষুধ পাঠাতে হয়। তাই সবকিছু ঠিক করে একটি প্রতিবেদন দেবো।
পরে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার বলেন, এরইমধ্যে যাদের জেল জরিমানা করা হয়েছে, তারা আবার যদি একই ধরনের অপরাধে অভিযুক্ত হন, তখন তাদের বিরুদ্ধে স্পেশাল পাওয়ারস অ্যাক্টে মামলা দায়েরের জন্য ওনারা (আদালত) আজকে মৌখিকভাবে আমাদের নির্দেশনা দিয়েছেন। যার সাজা যাবজ্জীবন এমনিক মৃত্যুদণ্ডও হতে পারে। ফলে যারা এ কাজের সঙ্গে জড়িত থাকবেন তাদের আমরা হুঁশিয়ার করে দিতে চাই। যেন আপনারা এ ধরনের মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ সংরক্ষণ করবেন না, বিক্রি করবেন না এবং ভেজাল ওষুধ বিক্রির চেষ্টা করবেন না। প্রয়োজনে সরকার আদালতের নির্দেশ মোতাবেক আইনগত দায়িত্ব পালন করবে।
১২ ডিসেম্বরের মধ্যে ভোক্তা অধিকার প্রতিবেদন দেবে ভেজাল ওষুধ প্রতিরোধের কার্যক্রম নিয়ে। আদালত ওষুধ প্রশাসনসহ সবাইকে একযোগে কাজ করতে বলেছেন। যেন বাংলাদেশের বাজারে মেয়াদোত্তীর্ণ ও ভেজাল ওষুধ বিক্রির সুযোগ সৃষ্টি না হয়। ওষুধ শিল্প সমিতিকে বলেছেন ইংরেজির পাশাপাশি যেন বাংলার মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ ও মূল্য লেখা থাকে সেটা বিবেচনা করতে-যোগ করেন আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।
এক রিট আবেদনের শুনানি হাইকোর্ট এক আদেশে হাইকোর্ট সারাদেশে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ সংরক্ষণ ও বিক্রি বন্ধ এবং মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ প্রত্যাহার/ধ্বংস করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দেন।
ওই আদেশের ধারাবাহিকতায় ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর আদালতে প্রতিবেদন দেন।
গত ১০ মে এক অনুষ্ঠানে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মঞ্জুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার বলেন, ঢাকা শহরের ৯৩ শতাংশ ফার্মেসিতে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ রাখা হয়।
এ বিষয়ে সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে রিট করেন ১৭ জুন জাস্টিস ওয়াচ ফাউন্ডেশনের পক্ষে নির্বাহী পরিচালক সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মাহফুজুর রহমান মিলন।
বাংলাদেশ সময়: ১৩২০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৯, ২০১৯
ইএস/জেডএস