ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

ভুল আসা‌মি গ্রেফতার, ক্ষমা চে‌য়ে অব্যাহ‌তি পে‌লেন এসআই

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৪, ২০১৯
ভুল আসা‌মি গ্রেফতার, ক্ষমা চে‌য়ে অব্যাহ‌তি পে‌লেন এসআই

ঢাকা: ভু‌লবশত গ্রেফতার নিরাপরাধ ব্যক্তির প্রায় এক মাস কারাগা‌রে থাকার ঘটনায় আদাল‌তে হা‌জিরে হ‌য়ে নিঃশর্ত ক্ষমা পেয়েছেন কু‌মিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া থানার উপ-প‌রিদর্শক (এসআই) মামোনুর রশিদ। এ ঘটনায় তাকে সতর্ক ক‌রে অভিযোগ থেকে অব্যাহ‌তি দিয়েছেন আদালত।

বুধবার (০৪ ডি‌সেম্বর) দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল ১ এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান এই আদেশ দেন।

গত ১১ ন‌ভেম্বর ভুল আসা‌মি মো. রাজন ভূঁইয়া‌কে জা‌মি‌নের পাশাপা‌শি মামলার দায় থে‌কে অব্যাহ‌তি দেন আদালত।

সে‌দিনই প‌রোয়ানা তা‌মিলকারী কু‌মিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া থানার এসআই মামোনুর রশিদের বিরু‌দ্ধে পু‌লিশ আই‌ন অনুযায়ী কেন শা‌স্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হ‌বে না, তা জান‌তে চে‌য়ে কারণ দর্শা‌নোর আদেশ দেন।

সে অনুযায়ী বুধবার আদালতে হাজির হয়ে লিখিত ব্যাখ্যা দাখিল করেন এসআই মামোনুর রশিদ। তার আবেদনে বলা হয়, আমি পরোয়ানা মূলে ওই আসামিকে সরল বিশ্বাসে গ্রেফতার করে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করেছি। আসামিকে গ্রেফতারকালে নাম ঠিকানা যাচাইয়ের জন্য জন্মসনদ বা ভোটার আইডি কার্ড দেখতে চাইলে আসামি বা তার আত্মীয় স্বজন ভোটার আইডি বা জন্মসনদ উপস্থাপন করতে পারেননি। পক্ষান্তরে গ্রাম পুলিশ ও ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) মেম্বার ধৃত ব্যক্তি হাবিবুল্লাহ রাজন হিসেবে শনাক্ত করেন। আমি সরল বিশ্বাসে বিজ্ঞ আদালতের আদেশ পালন করেছি মাত্র। ’

ওই আদালতের পেশকার শামসুদ্দিন জানান, মামলার শুনানিকালে আদালত এসআই মামোনুর রশিদের কাছে ভুল আসামি গ্রেফতারের বিষয়ে জানতে চান। তখন তিনি ভুলের জন্য দুঃখ প্রকাশ করে আদালতের কাছে ক্ষমা চান। আদালত ভবিষ্যতের জন্য সতর্ক করে ওই এসআইকে অব্যাহতি দেন।

অপর‌দি‌কে একই দিনে মামলার মূল আসা‌মি ছয় বছর পলাতক থাকা আসামি মো. হাবিবুল্লাহ রাজন আদাল‌তে আত্মসমর্পণ ক‌রে জা‌মিন চান। আদালত জা‌মিন আবেদন নাকচ ক‌রে তাকে কারাগা‌রে পাঠানোর আদেশ দেন।

গ্রেফতারি প‌রোয়ানায় থাকা আসামি মো. হাবিবুল্লাহ রাজন ছয় বছর ধরে পলাতক ছিলেন। সেই পরোয়ানা মূলে পুলিশ গত ১৬ অক্টোবর রাজন ভূঁইয়া নামে অন্য একজনকে গ্রেফতার ক‌রে। নির্দোষ রাজনের জামিন শুনানিকালে তার আইনজীবী বিষয়টি আদালতের নজরে আনেন।  

জানা যায়, ২০১২ সালের ৯ মে ২৮ পিস নেশা জাতীয় ইনজেকশনসহ পুলিশের হাতে আটক হন হাবিবুল্লাহ রাজন। এ দিনই তার বিরুদ্ধে রাজধানীর বংশাল থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করা হয়।  

তার বাড়ি কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ার গোপালনগরে। তার বাবার নাম মো. আব্দুল মান্নান। মাদক মামলায় গ্রেফতারের এক মাসের মধ্যে জামিন পান তিনি। এরপর মামলায় অ‌ভি‌যোগপত্র দেয় পু‌লিশ।

পরে আদালতে নিয়মিত হাজিরা না দেওয়ায় ২০১৩ সালের ৬ জুন রাজনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। ওই পরোয়ানা যায় ব্রাহ্মণপাড়া থানায়। পরে পুলিশ ভুলে গোপালনগরের মৃত আব্দুল মান্নান ভূঁইয়ার ছেলে রাজন ভূঁইয়াকে গত ১৬ অক্টোবর গ্রেফতার করে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৫২৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৪, ২০১৯/আপডেট: ১৭৪৩ ঘণ্টা
কেআই/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।