বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চ বুধবার (২৯ জানুয়ারি) এ আদেশ দেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের প্রতি এ নির্দেশনা দিয়ে আগামী এক মাসের মধ্যে এ বিষয়ে অগ্রগতি প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. জে আর খাঁন রবিন। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী শাম্মী আকতার। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ বি এম আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।
কারা অধিদপ্তরের পক্ষে ছিলেন মো.শফিকুল ইসলাম। এ বিষয়ে কয়েকটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে আদালতে রিট আবেদনটি দায়ের করেন আইনজীবী মো. জে আর খাঁন (রবিন)।
২৩ জুন জারি করা রুলে কারাগারে আইনগত অধিকার নিশ্চিতে মানসম্মত থাকার জায়গা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টদের নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি হবে না এবং বন্দিদের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতে কারা চিকিৎসকের শূন্যপদে নিয়োগ দিতে নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে তা জানতে চেয়েছেন।
বিবাদীরা হচ্ছেন- আইন সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব (সুরক্ষা বিভাগ), স্বাস্থ্য সচিব, সমাজ কল্যাণ সচিব, জনপ্রশাসন সচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও কারা মহাপরিদর্শক।
পরে আদালতের নির্দেশনা অনুসারে কারা কর্তৃপক্ষ কারাগারে বন্দিদের ধারণ ক্ষমতা, বন্দি ও চিকিৎসকের সংখ্যা, অনুপাত এবং কারা চিকিৎসকের শূন্যপদের তালিকা করে প্রতিবেদন দাখিল করে। প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশে ৬৮টি কারাগারে ১৪১টি পদের বিপরীতে চিকিৎসক মাত্র ৯ জন।
আরও বলা হয় গত বছর ২৮ জানুয়ারি ২০ জন চিকিৎসককে বিভিন্ন কারাগারে পদায়ন করা হলেও ১৬ চিকিৎসক এখন পর্যন্ত যোগ দেননি। ওই ১৬ চিকিৎসক ওই পদে যোগ দেননি তা পরে জানতে চেয়েছেন আদালত।
পরে আরেক প্রতিবেদনে কারা অধিদপ্তর জানায়, কারা অধিদপ্তর সরাসরি চিকিৎসক নিয়োগ দিতে পারে না। স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ থেকে বিসিএস ক্যাডারের সহকারী সার্জন বা সমমানের পদ থেকে প্রেষণে কারা চিকিৎসক পদায়ন করতে হয়।
এছাড়া কারা অধিদপ্তর ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় কারা চিকিৎসক পদায়নের জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করে যাচ্ছে। কিন্তু মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য বিভাগ পদায়ন করছে না। ২০১৮ সালের ২৮ জানুয়ারি ১৬ কারা চিকিৎসক নিয়োগের পর শূন্য পদে পদায়ন চেয়ে জনপ্রশাসন সচিব ও স্বাস্থ্য বিভাগগে অনুরোধ জানিয়ে অনেক বার চিঠি দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ।
তারপরও প্রেষণে চিকিৎসক পদায়ন করেনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এরপর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ২০ সহকারী সার্জনকে পদায়ন করলেও এখন পর্যন্ত তাদের ১৬ জন কর্মস্থলে যোগ দেননি।
যোগ না দেওয়া এই ১৬ জনের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে ব্যবস্থা নিতে গত বছর ২১ অক্টোবর আবার চিঠি দেয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ।
বুধবার শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষ কারা অধিদপ্তরের প্রতিবেদন তুলে ধরে জানায় ২০ জনের মধ্যে চারজন যোগ দিয়েছিলেন। যোগ না দেওয়া ১৬ জনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। এর মধ্যে ৫ জন সন্তোষজনক জবাব দিয়ে বলেছেন, তারা শিক্ষাকালীন ছুটিতে ছিলেন। অপর ১১ জন জনের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়েছে।
চিকিৎসক নিয়োগের জন্য নীতিমালার খসড়া করা হয়েছে জানিয়ে রাষ্ট্রপক্ষ আরো জানায়, অনুমোদিত চিকিৎসকের পদের সংখ্যা ১৪১। আগে থেকে কাজ করছেন ৯ জন। সম্প্রতি আরও ১৫ জনকে সংযুক্ত করা হয়েছ।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৯, ২০২০
ইএস/এমএ