ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

ব্যারিস্টার আসিফের স্ত্রী-শ্বশুরসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২০
ব্যারিস্টার আসিফের স্ত্রী-শ্বশুরসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা ব্যারিস্টার আসিফ ইমতিয়াজ খান জিসাদ। ফাইল ফটো

ঢাকা: রাজধানীর কাঁঠালবাগানে একটি ভবনের নয়তলার বারান্দা থেকে পড়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার আসিফ ইমতিয়াজ খান জিসাদের মৃত্যুর ঘটনায় তার স্ত্রী সাবরিনা শহীদ নিশিতাসহ চারজনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।  

বৃহস্পতিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) আসিফের বাবা শহিদুল ইসলাম খান বাদী হয়ে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এই মামলা দায়ের করেন।


 
মামলার অন্য আসামিরা হলেন-আসিফ ইমতিয়াজের শ্বশুর এ এস এম শহিদুল্লাহ মজুমদার, শাশুড়ি রাশেদা শহীদ ও শ্যালক সায়মান শহীদ নিশাত।
 
ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাদবীর ইয়াছির আহসান চৌধুরী কলাবাগান থানাকে অভিযোগটি নিয়মিত মামলা হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন।
 
আদালতে বাদীপক্ষে ঢাকা আইনজীবী সমিতির সভাপতি মো. ইকবাল হোসেন ও সাবেক সভাপতি কাজী নজিবুল্লাহ হিরু শুনানি করেন।
 
ঢাকা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ইকবাল হোসেন জানান, আসিফ ইমতিয়াজের শ্বশুর বাড়ির লোকজনের কথায় তিনি একটি অপমৃত্যুর মামলা করেছিলেন। কিন্তু পরবর্তীতে পারিপার্শ্বিক ঘটনা, সুরতহাল রিপোর্ট ও আসামিদের আচরণে বাদী বুঝতে পেরেছেন আসিফ লাফিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করেননি বরং তাকে হত্যা করে ওপর থেকে ফেলে দেওয়া হয়েছে। তাই দণ্ডবিধির ৩০২/৩৪ ধারায় নিহত আসিফের বাবা বাদী হয়ে এই মামলাটি দায়ের করেছেন। আদালত কলাবাগান থানাকে এই মামলার অভিযোগটিকে এজাহার হিসেবে গ্রহণ করে তা নিয়মিত মামলা হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন।
 
গত ১১ সেপ্টেম্বর শুক্রবার ভোর সাড়ে ৪টার দিকে কলাবাগান থানাধীন কাঁঠালবাগান ফ্রি স্কুল স্ট্রিটের ১৬৩ নম্বর বাসা থেকে লাফিয়ে পড়েন সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) শহিদুল ইসলামের ছেলে ব্যারিস্টার আসিফ ইমতিয়াজ খান জিসাদ। তার বয়স আনুমানিক ৩৩ বছর। এ মৃত্যু নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়। এটি আত্মহত্যা না হত্যাকাণ্ড এ নিয়ে ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়।
 
জানা যায়, সাবরিনা শহীদ নিশিতাকে প্রেম করে বিয়ে করেন আসিফ। এই বিয়ে মেনে নেয়নি আসিফের পরিবার। এ কারণে বাবাসহ পরিবার মিরপুরে থাকলেও স্ত্রীকে নিয়ে কাঁঠালবাগান শ্বশুরবাড়িতেই থাকতেন। তাদের কোনো সন্তান নেই।
 
ঘটনার দিন আসিফের শ্যালক সায়মান নিশাদ সাংবাদিকদের জানান, আসিফ ও সাবরিনার সঙ্গে মাঝেমধ্যে পারিবারিক বিষয়াদি নিয়ে ঝগড়া হতো। আসিফ মাদকাসক্ত ছিলেন। চার মাস উত্তরায় একটি রিহ্যাবেও ছিলেন তিনি। ঘটনার দিন রাতেও স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া বাঁধে। একপর্যায়ে আসিফ নয়তলার বারান্দা থেকে রেলিংয়ের ওপর দিয়ে লাফিয়ে নিচে পড়েন।
 
সংকটাপন্ন অবস্থায় আসিফকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।  
অপরদিকে আসিফের বাবা শহিদুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, আসিফ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী। মতিঝিলে দেশ ট্রেডিং কর্পোরেশনের লিগ্যাল অ্যাডভাইজার ছিলেন। তার শ্বশুরবাড়ির লোকজনই ভোরে খবর দেয় আসিফের অবস্থা ভালো না, তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। পরে এখানে এসে আসিফকে মৃত দেখতে পাই।
 
ব্যারিস্টার আসিফ ইমতিয়াজ খান জিসাদ সিরাজগঞ্জ কামারখন্দ বাগবাড়ী এলাকার অ্যাডভোকেট শহিদুল ইসলাম খানের ছেলে। শহিদুল ইসলাম ১৯৮৬-৯০ মেয়াদে সিরাজগঞ্জ-৫ (বেলকুচি কামারখন্দ) আসনের এমপি ছিলেন। আসিফ ব্যারিস্টারি পাস করে সুপ্রিম কোর্টে প্র্যাকটিস করছিলেন।
 
বুধবার সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি এএম আমিন উদ্দিন এবং সেক্রেটারি রুহুল কুদ্দুস কাজল এক বিবৃতিতে আসিফ ইমতিয়াজের মৃত্যুর ঘটনার রহস্য উদঘাটনের দাবি জানান। তার একদিন পরই এই মামলা দায়ের করা হলো।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৯২৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২০
কেআই/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।