ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

হাইকোর্টে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়েছেন কুষ্টিয়ার এসপি

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩০৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৫, ২০২১
হাইকোর্টে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়েছেন কুষ্টিয়ার এসপি

ঢাকা: কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা পৌরসভা নির্বাচন চলাকালে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গে ‘অসৌজন্যমূলক’ আচরণের অভিযোগের ঘটনায় নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়েছেন পুলিশ সুপার এস এম তানভীর আরাফাত।  

তলবে হাজির হয়ে লিখিতভাবে সোমবার (২৫ জানুয়ারি) বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চে হাজির হয়ে অনুতপ্ত হয়ে অনিচ্ছাকৃত ভুলের জন্য এ ক্ষমা প্রার্থনা করেন।

শুনানি শেষে আদালত আদেশের জন্য আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারি দিন রেখেছেন। একইসঙ্গে সেই প্রিজাইডিং অফিসার ও তার পরিবারকে নিরাপত্তা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি এসপিকে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

আদালতে এসপির পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মুনসুরুল হক চৌধুরী ও আইনজীবী আহমেদ ইশতিয়াক।

প্রিসাইডিং অফিসারের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী অনীক আর হক ও ইশরাত হাসান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তাহেরুল ইসলাম।

এর আগে সকালে আদালতে স্বশরীরে হাজির হন পুলিশের এ কর্মকর্তা।

ভেড়ামারা পৌরসভা নির্বাচন চলাকালে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মহসিন হাসানের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের অভিযোগের ঘটনায় গত ২০ জানুয়ারি পুলিশ সুপার এসএম তানভীর আরাফাতকে তলব করেন হাইকোর্ট।

এ বিষয়ে একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদন নজরে নিয়ে স্বপ্রণোদিত হয়ে রুলসহ এ আদেশ দেন হাইকোর্ট।

গত ১৬ জানুয়ারি ভেড়ামারা পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। পরদিন কুষ্টিয়ার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মহসিন হাসান নির্বাচন কমিশনে (ইসি) একটি অভিযোগ দেন। ওই অভিযোগের অনুলিপি সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছেও দেওয়া হয়।

অভিযোগে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মহসিন হাসান বলেন, কুষ্টিয়া ভেড়ামারা পৌরসভা নির্বাচনে দায়িত্ব পালনের সময় এক ভোটারের অভিযোগের ভিত্তিতে ভেড়ামারা পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে যাই। সেখানে কয়েকজনকে ভোটকেন্দ্রের বুথের ভেতর পোলিং এজেন্টদের সঙ্গে বসে থাকতে দেখি। তাদের পরিচয়পত্র দেখাতে বললে, তারা প্রিজাইডিং অফিসারের স্বাক্ষরিত এফোর সাইজের কাগজ দেখান। প্রিজাইডিং অফিসারের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলার সময় ওই কেন্দ্রে কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার এস এম তানভীর আরাফাত ৪০ থেকে ৫০ জন বিভিন্ন পদধারী পুলিশ ফোর্সসহ আসেন। তিনি ঢুকেই প্রিজাইডিং অফিসারকে উচ্চস্বরে ডাকেন।

এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমানসহ কয়েকজন ফোর্স প্রিজাইডিং অফিসারকে আমার সঙ্গে কথা বলতে না দিয়েই তাকে আমার সামনে থেকে নিয়ে যাওয়ার জন্য চাপাচাপি করেন। তখন আমি আমার নিজের পরিচয় বলি এবং কথা শেষ হলে প্রিজাইডিং অফিসারকে নিয়ে যেতে বলি। এ কথা বলার পরও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ধমক দিয়ে প্রিজাইডিং অফিসারকে আমার সামনে থেকে পুলিশ সুপারের সামনে নেওয়ার সময় পুলিশ সুপার আমার দিকে অগ্রসর হন এবং তিনি আমাকে উচ্চস্বরে জিজ্ঞেস করেন আপনি কে? কী করেন এখানে?

আমি পরিচয় দিলে তিনি আরও ক্ষিপ্তস্বরে আমাকে বলেন, আপনি এখানে কী করেন? বেয়াদব, বের হয়ে যান এখান থেকে। পুলিশ সুপার ও তার ফোর্সদের আক্রমণাত্মক, অসৌজন্যমূলক ও মারমুখী আচরণে হতচকিত ও কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে তখন দাঁড়িয়ে থাকি। এরপর তিনি তার ফোর্সসহ আমার সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় পুনরায় আমাকে উদ্দেশ্য করে একাধিকবার বলেন, এসব লোকদের কে পাঠায় এখানে! বেয়াদব ছেলে। এখানে কাজ কী আপনার? বের হয়ে যান এখান থেকে। তারা কেন্দ্র থেকে চলে যাওয়ার পর আমি বিষয়টি ভেড়ামারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) জানাই।

** কুষ্টিয়ার এসপি হাইকোর্টে 

বাংলাদেশ সময়: ১৩০৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৫, ২০২১
ইএস/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।