নারায়ণগঞ্জ: হেফাজতে ইসলামের সাবেক কমিটির যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকের বিরুদ্ধে ‘কথিত’ দ্বিতীয় স্ত্রী জান্নাত আরা ঝর্ণার করা ধর্ষণ মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার (২৪ নভেম্বর) নারায়ণগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. শাহিন উদ্দিনের আদালতে এ সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।
নারায়ণগঞ্জ জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) রাকিবুজ্জামান রকিব বলেন, সোনারগাঁও থানায় মামুনুলের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এনে মামলা করেন তার দ্বিতীয় স্ত্রী। কাশিমপুর কারাগার থেকে মামুনুলকে পুলিশ প্রহরায় নারায়ণগঞ্জ আদালতে নিয়ে আসা হয়।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, শহীদুল ইসলামের সঙ্গে ঝর্ণার দাম্পত্য জীবন সুখে-শান্তিতে অতিবাহিত হচ্ছিল। তাদের ১৭ ও ১৩ বছরের দুইটি সন্তান আছে। স্বামীর ঘনিষ্ঠ বন্ধু হিসেবে ২০০৫ সালে মামুনুলের সঙ্গে ঝর্ণার পরিচয় হয়। তাদের বাসায় যাতায়াতের সুবাদে সংসারের মতানৈক্যে ভূমিকা রাখেন মামুনুল। এসব কারণে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে মামুনুলের পরামর্শে ২০১৮ সালের ১০ আগস্ট শহীদুলের সঙ্গে তার বিচ্ছেদ হয়।
বাদী অভিযোগ করেন, বিচ্ছেদের পর অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে মামুনুল তাকে ঢাকায় যেতে প্ররোচিত করেন। সেখানে বিভিন্ন অনুসারীর বাসায় রেখে নানাভাবে তাকে কুপ্রস্তাব দেন। পরে মামুনুলের পরামর্শে তিনি কলাবাগানের একটি বাসায় সাবলেট থাকতে শুরু করেন। এ সময় বিয়ের আশ্বাস দিয়ে মামুনুল তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করেন। কিন্তু বিয়ের কথা বললে সময়ক্ষেপণ করতে থাকেন। বাদীর অভিযোগ, ঘোরাঘুরির কথা বলে ২০১৮ সাল থেকে মামুনুল বিভিন্ন হোটেল, রিসোর্টে তাকে নিয়ে যেতেন। সর্বশেষ গত ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে রয়্যাল রিসোর্টে ঘুরতে গিয়েছিলেন। সেখানেও মামুনুল তাকে ধর্ষণ করেন।
প্রসঙ্গত, মামুনুল হক গত ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে রয়্যাল রিসোর্টে এক নারীর সঙ্গে অবস্থান করছিলেন। ওই সময় স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা গিয়ে তাকে ঘেরাও করেন। পরে ওই রিসোর্টে স্থানীয় হেফাজতের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা ব্যাপক ভাঙচুর করে মামুনুলকে ছিনিয়ে নিয়ে যান। তবে ঘেরাও থাকাবস্থায় এই হেফাজত নেতা জানান, সঙ্গে থাকা নারী তার দ্বিতীয় স্ত্রী। দুই বছর আগে তাকে শরিয়াহ মোতাবেক বিয়ে করেছেন। বিষয়টি তার প্রথম স্ত্রী জানতেন না।
বাংলাদেশ সময়: ১৪১০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৪, ২০২১
এনএসআর