ঢাকা: মামলাজট নিরসনসহ বিচার বিভাগের প্রযুক্তিগত উন্নয়নের জন্য ভার্চ্যুয়াল কোর্টেই মুক্তি বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন।
বুধবার (০১ ডিসেম্বর) সুপ্রিম কোর্ট অডিটোরিয়ামে ডিজিটাল আর্কাইভিং এবং ই-ফাইলিং (কোম্পানি অ্যান্ড অ্যাডমিরালিটি ম্যাটার) সফটওয়্যার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
করোনায় বিচারিক কার্যক্রম চালানোর জন্য ভার্চ্যুয়াল কোর্ট আইন করা নিয়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, প্রধানমন্ত্রীকে বলেছি, আপনি তো ভার্চ্যুয়াল কোর্ট করে দিয়েছেন। এখন তো ভার্চ্যুয়াল কোর্ট ভালোভাবে চলছে না লজিস্টিকের অভাবে। তখন প্রধানমন্ত্রী বললেন, এটা তো আমাকে প্রথমেই বলা উচিত ছিল। আপনার কত টাকার প্রয়োজন। আমি বললাম, আপাতত ১০ কোটি টাকা দিলে অ্যাপসসহ প্রয়োজনীয় উপকরণ কিনবো। তখন প্রধানমন্ত্রী বললেন, প্রধানমন্ত্রীর কাছে কি কেউ ১০ কোটি টাকা চায়? আমি একটু লজ্জা পেলাম। তারপরে প্রধানমন্ত্রী আইসিটি প্রতিমন্ত্রীকে বললেন, প্রধান বিচারপতি যা কিছু চাবে, সব তাৎক্ষণিক দিতে হবে। এরপর সঙ্গে সঙ্গে প্রতিমন্ত্রী সব দিয়েছেন। এরপর আমি সবকিছু চালু করতে পেরেছি।
প্রধান বিচারপতি বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমাকে শুধু সুপ্রিম কোর্টের কাজ (প্রযুক্তিগত উন্নয়ন) করার জন্য ২২০ কোটি টাকা দিয়েছেন। যেখানে আমরা ভার্চ্যুয়াল কোর্ট শুরু করেছি ১ লাখ ডলার দিয়ে। সেখানে প্রধানমন্ত্রী দিয়েছেন ২২০ কোটি টাকা। এখানে হচ্ছে একটা ডেটা সেন্টার। যেটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। যেখানে আমাদের সমস্ত কিছু থাকবে। এটার জন্য খরচ হবে ১৫০ কোটি টাকা।
ভবিষ্যতের প্রধান বিচারপতির উদ্দেশে বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেন, আমার উত্তরসূরি যিনি আসবেন, তিনি এ কাজ এগিয়ে নিয়ে যাবেন। এটাকে অনেক সামনে নিয়ে যেতে হবে। আমাদের মুক্তি হলো ভার্চ্যুয়াল কোর্টে। কারণ আমাদের বিচারক সংখ্যা দুই-তিন গুণ করা প্রয়োজন হবে। এখনও চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বিল্ডিং হয়নি সব জায়গায়। ২০০৭ সালে জুডিসিয়ারি পৃথক হয়েছে। এখনো সব জায়গায় ভবন হয়নি। আমরা বিচারক দুই-তিন গুণ করবো। তাদের কোথায় বসাবো? একমাত্র ভার্চ্যুয়াল কোর্ট যদি প্রবর্তন করা যায় তাহলে বিচারকের বাসায় থেকে, আইনজীবীদের ভালোভাবে প্রশিক্ষণ নিতে হবে। তাহলে অচিরেই আমরা মামলার জট থেকে মুক্তি পেতে পারবো। তাছাড়া মামলার জট থেকে মুক্তি পাওয়া কঠিন ব্যাপার।
প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, আগামী দুই তিন বছরের মধ্যে আমার যে উত্তরসূরি আসবেন তিনি যদি এটা করেন, বিচার বিভাগে একটা বিপ্লব ঘটে যাবে। শুধু তাই নয়, এখন আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স যে জায়গায় যাচ্ছে, শুধু মুখে কথা বলবেন লেখা হয়ে যাবে, কষ্ট অনেক কমে যাবে। আগামী ৫ বছরের মধ্যে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এমন জায়গায় যাবে যে জুডিশিয়ারিতে কোন পেন্ডিং মামলা থাকবে না। কিন্তু এ প্রযুক্তির সৎ ব্যবহার করতে হবে এবং প্রযুক্তির ব্যবহারের আমাদের প্রস্তুতি নিতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২০১৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০১, ২০২১
ইএস/এমজেএফ