ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

মূল নথি না থাকায় পেছাল ওসি সাকিলের জামিন শুনানি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৩৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৯, ২০২১
মূল নথি না থাকায় পেছাল ওসি সাকিলের জামিন শুনানি

রাজশাহী: মূল নথি না থাকায় পিছিয়েছে রাজশাহীর পুঠিয়া থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাকিলের জামিন শুনানি।  

ওসি সাকিল উদ্দিন আহমেদ বুধবার (৮ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজশাহী বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করেন।

এরপর আদালতে জামিনের জামিনের জন্য আবেদন জানান তার আইনজীবী।

তবে, আদালতে মামলার মূল নথি না থাকায় শুনানি হয়নি। আদালত তাই মূল নথি তলব করেছেন। আগামী ১২ ডিসেম্বর আদালতে ওসি সাকিলের হাজিরার দিন ধার্য করা হয়েছে। ওই দিন জামিন আবেদনের শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে। সেই দিন পর্যন্ত ওসি সাকিলের উচ্চাদালত থেকে পাওয়া অন্তর্বর্তীকালীন জামিনই বহাল থাকবে।

তার আইনজীবী অ্যাডভোকেট আসলাম সরকার এই তথ্য জানিয়েছেন।  

তিনি বলেন, বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতে মামলার মূল নথি ছিল না। তাই আজ জামিনের জন্য আবেদন করলেও এর শুনানি হয়নি। আদালতের বিচারক মোসা. ইসমত আরা পুঠিয়া থানার সাবেক ওসি সাকিল উদ্দিন আহমেদকে ১২ ডিসেম্বর আবারও হাজির হওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। তাই ওই দিন পর্যন্তই তার অন্তর্বর্তীকালীন জামিন বহাল থাকবে। পরবর্তী হাজিরার ধার্য দিনে তার জামিন আবেদনের শুনানি হতে পারে।  

এর আগে রাজশাহীর পুঠিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার দায়িত্ব থাকাকালে পুলিশ রেগুলেশন অব বেঙ্গলের প্রবিধান ২৪৩ ও ফৌজদারী কার্যবিধির ১৫৪ ধারা সুস্পষ্টভাবে লঙ্ঘন পূর্বক ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে অপরাধমূলক অসদাচরণের অভিযোগ ওঠে। তিনি পুঠিয়া থানার নুরুল ইসলাম হত্যা মামলায় ৮ জন আসামির নামোল্লেখ থাকা সত্ত্বেও এই আসামিদেরকে সাজা বাঁচাবার উদ্দেশে এবং সংবাদদাতার ক্ষতিসাধনকল্পে আইনের নির্দেশ অমান্য করেন। কারসাজিমূলকভাবে এই এজাহার পরিবর্তন করে প্রাথমিক তথ্য বিবরণীতে আসামির নাম ও বাসস্থান/ঠিকানা সম্বলিত কলামে ‘অজ্ঞাতনামা’ লিপিবদ্ধ করে স্বাক্ষরপূর্বক মামলা রুজু করেন।  

এই অপরাধে দুদকের সহকারী পরিচালক মো. আল-আমিন বাদী হয়ে গত ২৪ জানুয়ারি দুর্নীতি দমন কমিশন, সমন্বিত জেলা কার্যালয়, রাজশাহী দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারায় মামলা করেন। এ মামলায় বিচারিক আদালতেই আত্মসমর্পণের জন্য সাকিলকে নির্দেশ দিয়েছিলেন উচ্চ আদালত। তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলো বিচার বিভাগীয় তদন্তে সত্য বলে প্রমাণিত হওয়ায় তিনি এখন সাময়িক বরখাস্ত অবস্থায় আছেন।  

এর আগে ২০১৯ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর নুরুল ইসলাম হত্যা মামলায় বাদীর দায়ের কার এজাহার পাল্টে দেওয়ার অভিযোগে রাজশাহীর পুঠিয়া থানার সাবেক ওসি সাকিল উদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে বিচারিক তদন্তের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।

গত ২৪ এপ্রিল রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের নির্বাচনে নুরুল ইসলাম সাধারণ সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। ভোটে তাকে হারিয়ে আবদুর রহমান পটল জয়ী হন। নুরুল ইসলামের পরিবারের অভিযোগ, নির্বাচনে পুঠিয়া থানার ওসি ক্ষমতার অপব্যবহার করে কারসাজি করে নুরুলকে পরাজিত করান।  

এ ফলাফলের বিরুদ্ধে নুরুলসহ পরাজিত তিন প্রার্থীর মামলায় শ্রমিক ইউনিয়নের সব কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা দেয় আদালত। নুরুল ইসলাম যে রাতে খুন হন সেদিনই আদালতের জারিকারক উপজেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের কার্যালয়ে গিয়ে আদালতের এ নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। তার সঙ্গে নুরুল ইসলামও ছিলেন। তখন আসামিদের সঙ্গে তার বাকবিতণ্ডা হয়। এরপর রাত সাড়ে ৮টা থেকে নুরুল ইসলামের কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। পরদিন সকালে ইটভাটায় নুরুল ইসলামের মরদেহ পাওয়া যায়। এ ঘটনার পর নিহতের মেয়ে নিগার সুলতানা নির্বাচনী মামলাটির তিন আসামিসহ মোট ৮ জনের নামোল্লেখ করে পুঠিয়া থানায় হত্যা মামলার এজাহার দেন। কিন্তু ওসি সাকিল মামলার যে এজাহার নথিভুক্ত করেন, তাতে কারও নাম ছিল না।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৩৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৯, ২০২১
এসএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।