ঢাকা, রবিবার, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৯ মে ২০২৪, ১০ জিলকদ ১৪৪৫

আইন ও আদালত

লক্ষ্মীপুরে স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামীর যাবজ্জীবন

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৪১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৩, ২০২১
লক্ষ্মীপুরে স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামীর যাবজ্জীবন ...

লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরে পারিবারিক কলহের জেরে স্ত্রী জোৎস্না আক্তারকে হত্যার দায়ে স্বামী ইসমাইল হোসেন সুজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।  
সোমবার (১৩ ডিসেম্বর) দুপুর সোয়া ১২টার দিকে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ রহিবুল ইসলাম এ রায় দেন।

রায় ঘোষণার সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।  

দণ্ডপ্রাপ্ত সুজন (৩২) সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নের পিয়ারাপুর গ্রামের মৃত মমিন উল্যা পাটওয়ারীর ছেলে। তিনি পেশায় বাসের সুপারভাইজার ছিলেন।  

তার স্ত্রী জোৎস্না আক্তার লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের বাঞ্চানগর গ্রামের মো. বাহার উদ্দিনের মেয়ে।  

আদালত সূত্র জানায়, ২০১৮ সালের ২০ এপ্রিল রাতে ইসমাইল হোসেন তার স্ত্রী জেৎস্না আক্তারকে গলাটিপে হত্যা করে পরদিন সকালে মরদেহ সদর হাসপাতালে ফেলে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় ২২ এপ্রিল নিহত জোৎস্না আক্তারের বাবা মো. বাহার উদ্দিন বাদী হয়ে জামাতা ইসমাইলের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ২/৩ জনের নামে সদর থানায় মামলা দায়ের করলে পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে। পরে আসামি আদালতে হত্যার ঘটনা স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। ওই বছরের ২৬ সেপ্টেম্বর পুলিশ এ ঘটনায় ইসমাইলকে অভিযুক্ত করে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে। গ্রেফতারের পর থেকেই ঘাতক ইসমাইল কারাগারে বন্দি ছিলেন। আদালত ১৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে এ রায় দেন।

মামলার বাদী ও জোৎস্নার বাবা মো. বাহার উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, ইসমাইল আমার মেয়ে জোৎস্নাকে গলাটিপে হত্যা করে মরদেহ হাসপাতালে ফেলে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় তার যাবজ্জীবন সাজা হয়েছে। এতে আমরা সন্তুষ্ট।  

তিনি আরও জানান, ২০১১ সালে পারিবারিকভাবে তার মেয়েকে ইসমাইলের সঙ্গে বিয়ে দেন। বিয়ের পর থেকে বিভিন্নভাবে তার মেয়েকে নির্যাতন করা হতো। তাদের ঘরে দুটি সন্তান রয়েছে। ঘটনার দিন সকালে তার মেয়েকে মারধর করে ইসমাইল। বিষয়টি জানার পর ওই দিন সন্ধ্যায় তারা গিয়ে পারিবারিকভাবে সমস্যা মিটিয়ে দিয়ে চলে আসেন। রাতে পুনরায় তার মেয়েকে নির্যাতন করে হত্যা করে ইসমাইল। পরদিন সকালে তারা বিষয়টি জানতে পারেন।

জোৎস্নার ভাই মো. রাজু বাংলানিউজকে বলেন, আমার ভগ্নিপতির সঙ্গে অন্য আরেকটি মেয়ের পরকীয়ার সম্পর্ক ছিল। মোবাইল ফোনে ওই মেয়ের সঙ্গে থাকা ছবি দেখে ফেলায় আমার বোনের সঙ্গে বিরোধ সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে নির্যাতন করে গলাটিপে তাকে হত্যা করে। আমার বোনের ঘরে আরাফাত হোসেন সৌরভ (৯) ও সুরভী আক্তার (৬) নামে দুই সন্তান রয়েছে। তারা আমাদের সঙ্গেই থাকে।  

জেলা জজ আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট মো. জসিম উদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, আসামি ইসমাইল হোসেন সুজন তার স্ত্রীকে হত্যা করে। এ ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় সাক্ষ্যপ্রমাণে বিষয়টি প্রমাণিত হয়। আদালতে বিচারক তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ১০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ড দেন।  

বাংলাদেশ সময়: ১৩৪০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৩, ২০২১
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।