ঢাকা, রবিবার, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫

আইন ও আদালত

খুলনায় সাবেক এমপি মঞ্জুসহ ১৮ বিএনপির নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে চার্জগঠন

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১০ ঘণ্টা, মার্চ ২৯, ২০২২
খুলনায় সাবেক এমপি মঞ্জুসহ ১৮ বিএনপির নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে চার্জগঠন

খুলনা: নাশকতা সৃষ্টির লক্ষ্যে জমায়েতের অভিযোগে সোনাডাঙ্গা থানায় দায়েরকৃত মামলায় খুলনায় সাবেক সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম মঞ্জুসহ ১৮ জন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে চার্জগঠন করেছেন আদালত।

মঙ্গলবার (২৯ মার্চ) খুলনার অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালত ১৯৭৪ সালের স্পেশাল পাওয়ার অ্যাক্টের ১৫(৩)/২৫-ডি ধারায় চার্জ গঠন করেন।

২১ শে আগস্ট গ্রেনেড হামলার মামলায় বিএনপির তৎকালীন সিনিয়র ভাইস-চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের প্রতিবাদে নগরীর কেডিএ এভিনিউ তেঁতুলতলা মোড়ে ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর নাশকতা সৃষ্টির লক্ষ্যে জমায়েতের অভিযোগে সোনাডাঙ্গা থানায় দায়েরকৃত ১৯ নম্বর মামলা এটি।

মামলাটিতে যাদের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করা হয়েছে, তারা হলেন- বিএনপির কেন্দ্রীয় অব্যহতিপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক ও নগর শাখার সাবেক সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু, বিএনপি নেতা মো. সাজ্জাদ আহসান পরাগ, মো. সাইফুল ইসলাম বকশী, জামায়াত নেতা অ্যাডভোকেট মনিরুল ইসলাম পান্না, এসএম জাহাঙ্গীর আলম, মো. বাকার বকশী, মো. ফরহাদ বকশী, আবুল কালাম আজাদ, মো. আসলাম, আব্দুর রহিম চৌধুরী হেলাল, আব্দুল মজিদ গাজী, মোল্যা মাসাদুর রহমান, এম আকরাম হোসেন মোল্লা, কাজী নূর মোহাম্মদ নূর, সৈয়দ শামীম আহসান, শেখ মাবুবুর রহমান রতন, মো. বায়জীদ ও অহিদুল ইসলাম। এছাড়া বিএনপি কর্মী অহিদুজ্জামান খোকন মৃত্যুবরণ করায় তার বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করা হয়নি।

এজাহারে উল্লেখ্য রয়েছে, ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর রাত পৌনে ১১টার দিকে সোনাডাঙ্গা থানাধীন তেঁতুলতলা মোড়ে ২১ শে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায়ে বিএনপির সিনিয়র ভাইস-চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে সরকার উচ্ছেদ, শেখপাড়াস্থ ৩৩/১১ কে.ভি উপকেন্দ্র, ডিভিশন-১ (কেপিআই), বাংলাদেশ বেতার খুলনা ভবন, (কেপিআই) ধ্বংস, সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক নাশকতা করা, খুলনাকে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করে সরকারকে বিব্রত করার উদ্দেশ্যে বিএনপি এবং জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা তাদের হাতে বিভিন্ন ধ্বংসাত্মক অস্ত্র-সন্ত্র, লোহার রড, বাঁশের লাঠি এবং ইটের টুকরো নিয়ে তেঁতুলতলা মোড়ে সমবেত হয়। আসামিরা ল্যাম্পপোষ্টের আলোর সাহায্যে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে দৌঁড় দেয়।

চার্জগঠন শুনানি পর্বে আসামিপক্ষে শুনানিতে অংশ নেন অ্যাডভোকেট আব্দুল মালেক, এসএম মঞ্জুর আহম্মেদ, মোল্লা গোলাম মওলা, লস্কর শাহ আলম, বেগম আক্তার জাহান রুকু, মো. আছাদুল আলম, মো. রফিকুল ইসলাম, মো. ওমর ফারুক রনি ও অ্যাড. মো. কামাল হোসেন।

আইনজীবীদের সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর এসআই উজ্জ্বল সরকার বাদী হয়ে সোনাডাঙ্গা মডেল থানায় ৭ জনের নামোল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয় ১৪০/১৫০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা এসআই হরষিৎ ২০১৯ সালের ২৭ জুলাই আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। ওই বছরের ২৪ সেপ্টেম্বর চার্জশিট আমলে নেন আদালত। কয়েক দফায় বিচারক বদলির পর মঙ্গলবার চার্জগঠনের মধ্য দিয়ে মামলাটির বিচার কার্য শুরু হলো।

খুলনা-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম মঞ্জু বলেন, রাজনৈতিক প্রতিহিংসামুলক এসব মামলার আদেশেও কোনো ভিত্তি নেই। স্বাধীন ও নিরপেক্ষ বিচার ব্যবস্থা থাকলে চার্জগঠনের আগেই মামলাটি নিষ্পত্তিই হয়ে যেতো। ফ্যাসিস্ট সরকার পুলিশ তথা রাষ্ট্রকে অপব্যবহারের উজ্জ্বল দৃষ্টান্তই হলো।

উল্লেখ্য, গত ২৫ ডিসেম্বর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে সাবেক সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম মঞ্জুকে দল থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এর আগে ৯ ডিসেম্বর নগর ও জেলা বিএনপির আংশিক আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্র; ঘোষিত এ কমিটির সমালোচনা করে প্রেসব্রিফিং করার দায়ে তাকে দল থেকে অব্যহতি দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭১০ ঘণ্টা, মার্চ ২৯, ২০২২
এমআরএম/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।