ঢাকা: বগুড়ায় দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র শাহরিয়ার নাফিজ সিয়ামকে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি ও হত্যায় বিচারিক আদালতে দেওয়া আসামির মৃত্যুদণ্ডাদেশ পরিবর্তন করে যাবজ্জীবন দণ্ড দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বিচারিক আদালতের দেওয়া মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের ডেথ রেফারেন্স ও আসামির জেল আপিলের শুনানি শেষে বুধবার বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান ও বিচারপতি মুহম্মদ মাহবুব-উল ইসলামের হাইকোর্ট অবকাশকালীন বেঞ্চ এ রায় দেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সামিরা তারান্নুম রাবেয়া মিতি। আসামিপক্ষে ছিলেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো.হাফিজুর রহমান খান।
দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আল আমিন সোহাগের বগুড়ার গাবতলী উপজেলার সরকার পাড়ার আনোয়ার হোসেনের ছেলে।
সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক শহরের পুরান বগুড়ার বেল্লাল রহমানের ছেলে শাহরিয়ার নাফিজ সিয়াম বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র ছিল। দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আল আমিন সোহাগ তার পরিবারের সঙ্গে একই এলাকায় একটি ভাড়া বাসাতে বসবাস করতেন। ২০১৪ সালের ১৭ মে আল আমিন সোহাগ শিশু সিয়ামকে মুক্তিপণের জন্য অপহরণ করেন। বাবা বেল্লাল রহমানের কাছে মোবাইলে তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। কিন্তু দাবি করা টাকার মধ্যে ৮০ হাজার টাকা পরিশোধ করা হলেও সিয়ামকে ফেরত পায়নি তার পরিবার। ঘটনার একদিন পর সোহাগকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে তার স্বীকারোক্তি মোতাবেক বাড়ির পাশের একটি পুকুর থেকে বস্তাবন্দি অবস্থায় শিশু সিয়ামের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় শিশু সিয়ামের বাবা বাদী হয়ে একই বছরের ১৯ মে বগুড়া সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
এ মামলায় ২০১৬ সালের ৩১ আগস্ট আল আমিন সোহাগকে (২২) মৃত্যুদণ্ডাদেশসহ বিভিন্ন মেয়াদে দণ্ড দেন বগুড়ার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের (অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ) বিচারক হাফিজুর রহমান।
পরে মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে পাঠানো হয়। পাশাপাশি আসামি জেল আপিল করেন।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সামিরা তারান্নুম রাবেয়া মিতি জানান, এ মামলায় কোনো প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষী ছিল না। শিশুটি খেলা করছিল অন্যদের সঙ্গে। কিন্তু তাকে সেখান থেকে আসামি নিয়ে গেছে এ ধরনের কোনো সাক্ষী নেই। এসব কারণে তার দণ্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বাংলাদেশ সময়: ১৭১২ ঘণ্টা, মার্চ ৩০, ২০২২
ইএস/এসআইএস