ঢাকা, শুক্রবার, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ মে ২০২৪, ০১ জিলকদ ১৪৪৫

আইন ও আদালত

রোহিঙ্গাদের স্থানান্তর চেয়ে আইনি নোটিশ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ১১, ২০২২
রোহিঙ্গাদের স্থানান্তর চেয়ে আইনি নোটিশ ফাইল ফটো

ঢাকা: রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশ থেকে বহিষ্কার এবং সার্ক, বিমসটেক, আসিয়ান রাষ্ট্রগুলোতে শেয়ারিংয়ের ভিত্তিতে স্থানান্তর চেয়ে আইনি নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (১১ অক্টোবর) রেজিস্ট্রি ডাকযোগে এ নোটিশ পাঠান সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. মাহমুদুল হাসান।



স্বরাষ্ট্র সচিব,পররাষ্ট্র সচিব, আইন সচিব, কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক এবং শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের কাছে এ নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
 
পরে মাহমুদুল হাসান এক বার্তায় জানান, আইনি নোটিশে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ তার ভূখন্ডে ১২ লাখ মিয়ানমারের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় দিয়েছে। এছাড়া প্রতিবছর প্রায় ৩০ হাজার রোহিঙ্গা সন্তান জন্ম গ্রহণ করছে। এই রোহিঙ্গাদের প্রতিপালন করতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি বছর ১ দশমিক ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার খরচ হচ্ছে যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ১৩ হাজার কোটি টাকা।

নোটিশে বলা হয়, প্রথমত, বাংলাদেশ ১৯৫১ সালের শরণার্থী বিষয়ক কনভেনশন ও ১৯৬৭ সালের প্রটোকলের স্বাক্ষরিত রাষ্ট্র নয়। তাই বাংলাদেশ আইনগতভাবে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিতে বাধ্য নয়। দ্বিতীয়ত, রোহিঙ্গারা স্বাধীনতাকামী জনগোষ্ঠী নয়। তারা স্বাধীনতার জন্য কোন সংগ্রামে লিপ্ত নয়। তাদের কোনো প্রবাসী সরকার নেই। যার দরুন রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী অন্য কোনো রাষ্ট্রের কাছে রাজনৈতিক আশ্রয় লাভের অধিকারী নয়। তৃতীয়ত, রোহিঙ্গাদের আশ্রয়দানের জন্য বাংলাদেশের সঙ্গে আঞ্চলিক কোনো সংস্থা যেমন সার্ক, বিমসটেক, আসিয়ানের কোনোরূপ চুক্তি নেই। যার দরুন এককভাবে বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিতে পারে না।

এমতাবস্থায়, বাংলাদেশ কোনোভাবেই এককভাবে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিতে পারে না। এক্ষেত্রে আঞ্চলিক সংস্থাগুলোকে এই রোহিঙ্গাদের দায়িত্ব নিতে হবে। এক্ষেত্রে যে রাষ্ট্রগুলো আয়তনে বড় তাদেরকে বেশি সংখ্যক রোহিঙ্গা শরণার্থী নিতে হবে। এটাই আন্তর্জাতিক রীতি। উদাহরণ স্বরূপ, সিরিয়ার গৃহযুদ্ধের সময় লাখ লাখ সিরিয়ার শরণার্থী ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রসমূহে প্রবেশ করে। তখন ইউরোপীয় ইউনিয়ন তার সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে শরণার্থী নেওয়ার জন্য কোটা নির্ধারণ করে দেয়। বর্তমানে ইউক্রেন ও রাশিয়ার যুদ্ধে, ইউক্রেনের শরণার্থীরা ইউরোপ ও পশ্চিমা দেশগুলোতে আশ্রয় নিয়েছে। এক্ষেত্রে একক কোন দেশ এসব শরণার্থীদের বোঝা নেয়নি বরং সম্মিলিতভাবে নিয়েছে। বাংলাদেশ সার্ক ও বিমসটেকের সদস্য।

অপরদিকে মিয়ানমার বিমসটেক ও আসিয়ানের সদস্য। বর্তমান রোহিঙ্গা ইস্যুতে এসব আঞ্চলিক সংগঠন সার্ক, বিমসটেক ও আসিয়ানকে দায়িত্ব নিতে হবে। এ সংগঠনের বড় রাষ্ট্রগুলোকে অধিক সংখ্যক রোহিঙ্গা শরণার্থী নিতে হবে। তাই আইনি নোটিশ পাওয়ার ১০ দিনের মধ্যে এই রোহিঙ্গাদেরকে বাংলাদেশ থেকে বহিষ্কার করে সার্ক, বিমসটেক ও আসিয়ান রাষ্ট্রসমূহে শেয়ারিংয়ের ভিত্তিতে স্থানান্তরের উদ্যোগ নিতে অনুরোধ করা হয়েছে। অন্যথায় তিনি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হবেন বলে জানিয়েছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১১, ২০২২
ইএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।