ঢাকা, রবিবার, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৯ মে ২০২৪, ১০ জিলকদ ১৪৪৫

আইন ও আদালত

স্বেচ্ছায় পদত্যাগে পেনশন সুবিধা: আপিলের অনুমতি পেল রাষ্ট্রপক্ষ 

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২০০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৪, ২০২২
স্বেচ্ছায় পদত্যাগে পেনশন সুবিধা: আপিলের অনুমতি পেল রাষ্ট্রপক্ষ 

ঢাকা: সরকারি চাকরি থেকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করলে পেনশন সুবিধা না পাওয়া সংক্রান্ত বিধানের অংশবিশেষ সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি পেয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ।

প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ রাষ্ট্রপক্ষের করা লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) মঞ্জুর করে সোমবার (২৪ অক্টোবর) আদেশ দেন ।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মো. মোরশেদ শুনানি করেন। অপরপক্ষে রিট আবেদনকারী আইনজীবী মাহবুব মোরশেদ নিজে শুনানি করেন।

২০১১ সালে অতিরিক্ত জেলা জজ মাহবুব মোরশেদ স্বেচ্ছায় পদত্যাগপত্র জমা দেন। একই বছরের ৩১ জানুয়ারি থেকে তার পদত্যাগপত্র কার্যকর হয়।  

পরবর্তী সময়ে এককালীন পেনশন ও আনুতোষিক মঞ্জুরের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেন মাহবুব মোরশেদ।  

২০১৫ সালের ২৫ মার্চ প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে মাহবুব মোরশেদের পেনশনসংক্রান্ত বিষয়টি ফেরত দিয়ে আইন মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়।

চিঠিতে বলা হয়, সরকারি চাকরি থেকে পদত্যাগ করলে আগের চাকরিকাল বাজেয়াপ্ত (যত দিন চাকরিতে ছিলেন) হবে। অর্থাৎ, পেনশনের জন্য তা গণনাযোগ্য হবে না (বিএসআর প্রথম খণ্ডের বিধি-৩০০ সেকশন-৩)। পেনশনারের (মাহবুব মোরশেদ) চাকরিকাল ২৫ বছর পূর্ণ হয়নি। তিনি ২৫ বছর পূর্তি সাপেক্ষে সংশ্লিষ্ট বিধানের আলোকে পেনশনের জন্য কোনো আবেদন করেননি বলে পেনশনপ্রাপ্ত নন (১৯৭৪ সালের গণকর্মচারী অবসর আইনের ৯ ধারা)।

এ অবস্থায় বিধি-৩০০ এবং ওই চিঠির বৈধতা চ্যালেঞ্জে ২০১৬ সালে করে মাহবুব মোরশেদ রিট করেন।  

ওই রিটের প্রাথমিক শুনানি  নিয়ে ২০১৬ সালের ৮ মে হাইকোর্ট রুল রুল জারি করেন। রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০২১ সালের বছরের ১৮ মার্চ রায় দেন হাইকোর্ট।

রায়ে ২০১৫ সালের ২৫ মার্চের ওই চিঠি আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ও বাতিল ঘোষণা করেন। একই সঙ্গে রায়ের অনুলিপি পাওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে চাকরির মেয়াদ অনুসারে মাহবুব মোরশেদের পেনশনসহ অন্যান্য বকেয়া সুবিধা গণনা ও মঞ্জুর করতে সংশ্লিষ্ট বিবাদীদের নির্দেশ দেওয়া হয়।

বাংলাদেশ সার্ভিস রুলসের বিধি-৩০০ (এ) অনুযায়ী, সরকারি চাকরি থেকে কেউ পদত্যাগ করলে অথবা অসদাচরণ, দেউলিয়া, অদক্ষতা অথবা নির্ধারিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে না পারার কারণে চাকরি থেকে বরখাস্ত বা অপসারিত হলে তার চাকরি বাজেয়াপ্ত বলে বিবেচিত হয়।  

বিধির ৩০০ (বি) বলছে, অন্য কোনো পেনশনযোগ্য চাকরিতে যোগদানের উদ্দেশ্যে কেউ পদত্যাগ করলে তা সরকারি চাকরি থেকে পদত্যাগ হিসেবে গণ্য হবে না।

হাইকোর্ট চাকরি থেকে পদত্যাগের কারণে পেনশন না পাওয়াসংক্রান্ত বাংলাদেশ সার্ভিস রুলসের (বিএসআর) প্রথম খণ্ডের বিধি-৩০০ (এ) অংশটুকু সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করেন।

হাইকোর্টের এই রায়ের বিরুদ্ধে  লিভ টু আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। তখন চেম্বার আদালত হাইকোর্টের রায় স্থগিত করেছেন। আর আবেদনটি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠান।  

বাংলাদেশ সময়:১১৩৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৪,২০২২
ইএস/ইআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।