ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

লাইফস্টাইল

কী নেই এখানে!

লাইফস্টাইল ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২০৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৬, ২০১২
কী নেই এখানে!

 

চলছে ১৭তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা-২০১২। এক জায়গা থেকেই সংসারের যাবতীয় প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পাওয়া যায় বলে বাণিজ্য মেলা নিয়ে আমাদের অনেকেরই রয়েছে ব্যাপক আগ্রহ।

পাশাপাশি বিনোদন পিয়াসীরা ঘুরে বেড়ানোর জন্য ছুটে যান বাণিজ্য মেলায়। আমাদের এবারের আয়োজন বাণিজ্য মেলা নিয়েই-

এবারের মেলায় বাংলাদেশসহ ১২টি দেশের ৪৭টি স্টলসহ মোট ৫০৫টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিচ্ছে বলে আয়োজক কমিটি বাংলাদেশ রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি)জানায়। এছাড়াও এবারের মেলায় ৬টি বিশেষ প্যাভিলিয়ন, ৫টি প্রিমিয়ার প্যাভিলিয়ন, ৫টি মিনি প্যাভিলিয়ন এখন পর্যন্ত সাজানো হয়েছে। মেলায় অংশগ্রহণকারী দেশগুলো হলÑ ভারত, পাকিস্তান, চীন, থাইল্যান্ড, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, সৌদি আরব, ইরান, তুরস্ক, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র। মেলা ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে।  

দেশি পণ্যের পাশাপাশি বাইরের দেশের নানা পণ্য পাওয়া যায় বলে সব ধরনের ক্রেতা ও দর্শনার্থীরা ভিড় জমান ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায়।  

মেলায় একই সঙ্গে সংসারের সব ধরনের দেশি-বিদেশি পণ্য রয়েছে যায়, সেই সঙ্গে রয়েছে নানারকম ছাড়এ জন্যই মূলত মেলায় আসা। মেলায় আসা প্রসঙ্গে বলছিলেন সদ্য বিবাহিত জীবন শুরকরা আফজাল ও জেরিন। তারা এসেছেন ধামরাই থেকে। শুধু দম্পতিরাই নয়, মেলার প্রবেশ দ্বারে যেতেই চোখে পড়ল বেশ কয়েকটি গ্রÑ যারা সবাই এসেছেন দল বেঁধে বাণিজ্য মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনার জন্য।  

সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে বিজ্ঞান-প্রযুক্তির সর্বোচ ব্যবহারে বাণিজ্য মেলাকে আরও বেশি আকর্ষণীয় করে তোলা হয়েছে। নানারকম রঙিন বাতির ঝলকানি চোখে পড়বে দূর থেকেই। প্রতিদিনই মেলায় ভিড় বাড়ছে। শেরেবাংলা নগরে গেলেই বিশাল জনস্রোত আপনাকে পৌঁছে দেবে মেলার প্রবেশ দ্বারে। মেলার প্রবেশ দ্বারের ঠিক সামনেই প্রতিবছরের মতো এবারও চোখে পড়বে বেস্টওয়ে গ্রপের নান্দনিক স্টলটি। মেলার চারদিক দিয়ে রয়েছে আমাদের দেশের প্রতিষ্ঠানগুলো। আর মাঝখানে রয়েছে প্রিমিয়ার ও বাইরের স্টলগুলো। মেলায় কেনাকাটা ও দল বেঁধে ঘুরতে এসেছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী রোজী, কাশফিয়া, আরশি ও তুলি। মেলায় কেনাকাটার বিষয়ে জানতে চাইলে কাশফিয়া বলেন, আমি আগে থেকেই ঠিক করে রেখেছিলাম এবারের মেলায় একটি ক্যামেরা ও পরিবারের সবার জন্য কাশ্মিরি শাল কিনব। এর সঙ্গে আরশি যোগ করেন, বাণিজ্য মেলায় কেনাকাটা করলে আমরা অনেক জিনিসের মাঝ থেকে পছন্দের জিনিসটি কিনতে পারছি, সেই সঙ্গে যদি কিছু ছাড় পাই তবে তো আরও ভালো। মেলা উপলক্ষে অনেক প্রতিষ্ঠান নানারকম অফার দিয়েছে।  

মেলায় যা থাকছে : মেলার প্রবেশ দ্বার পেরিয়ে হাতের বাম ও ডান পাশে মাঠের মাঝ বরাবর রয়েছে দুটি ইন্ডিয়ান ও পাকিস্তানের স্টল। ডান দিকটায় হাঁটলেই চোখে পড়বে পার্স, ব্যাগ, স্যান্ডেল, ঘর সাজানোর জিনিসপত্র, লাইট ও রান্নার জিনিসপত্র। আপনি যদি শাড়ি, থ্রি-পিস, বিছানার চাদর, শার্ট, বে¬জারÑ এসব বস্ত্র জাতীয় জিনিসপত্র কিনতে চান প্রবেশ দ্বারের বামপাশ থেকে যাত্রা শুরকরন। ইলেকট্রনিক্স, পণ্যসামগ্রী, দেশীয় ভোগ্যপণ্যগুলোরও বিদেশি বড় বড় প্যাভিলিয়ন অব¯’ান করছে ঠিক মাঠের মাঝ বরাবর। মাঠের মাঝের স্টলগুলো চিহ্নিত করতে গ্যাসের বেলুন ফুলিয়ে তাতে স্টলের নাম লিখে রশি দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে। মেলার প্রবেশ দ্বারের ঠিক সামনেই থাকছে বঙ্গবন্ধুর জীবনী আলোকে জাদুঘর। যেখানে গেলে বঙ্গবন্ধুর বিভিন্ন রাজনৈতিক, পারিবারিক নেতৃত্বের ইতিহাস জানা যাবে। মেলায় এবারও থাকছে শিশুপার্ক। ব্রেক ড্যান্স, রেনজার, ম্যাজিক কার্পেটসহ মজার মজার সব রাইড থাকছে এতে।  

মেলায় উডি এনেছে শিশুদের জন্য মজার মজার খেলনা। শিশুদের জন্য মজার মজার কার্টুন, খেলনা নিয়ে স্টল সাজিয়েছে টোনাটুনি। ফ্লোরা বাংলাদেশে পাবেন নান্দনিক উবেল লণ্ঠন যা পানিতেও জ্বলবে। প্রতিবারের মতো এবারও পাকিস্তানি স্টলগুলো সাজানো হয়েছে কম্বল, শাল, ব্যাগ, চাদর ও থ্রিপিস দিয়ে। স্বাভাবিকভাবেই এসব স্টলে মেয়েদের ভিড় বেশি। আশিকি ফ্যাশন এনেছে ছেলেদের জন্য ফরমাল বে¬জার। সবুজ পৃথিবী সোনালি আঁশ, সবুজ হƒদয়ে বাংলার শ্বাস এই ¯¬াগানকে সামনে রেখে শতরঞ্জি এনেছে চটের ব্যাগ, ম্যাট। মণিপুরী তাঁত এম্পোরিয়ামে পাওয়া যাবে নান্দনিক সব শাড়ি। হ্যান্ডিজ ইউরো সাউথ এশিয়া এনেছে চমৎকার সব শাড়ি ও থ্রিপিস, কুষ্টিয়া হস্তশিল্পতে গেলে পাবেন নান্দনিক সব ব্যাগ। এবারের বাণিজ্য মেলায় বিদেশি পণ্যের পাশাপাশি দেশীয় পণ্যের বেশ ভালো কালেকশন রয়েছে।

দেশীয় পণ্য নিয়ে সংশি¬ষ্ট মেলা কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দেশে উৎপাদিত পণ্য দেশে-বিদেশে জনপ্রিয় করার লক্ষ্যেই মেলার আয়োজন করা হয়। দাদা কর্পোরেশন মেলায় তাদের স্টল সাজিয়েছে বাথরমের নানারকম জিনিসপত্র দিয়ে। ইরান-বাংলা প্যাভিলিয়নে গেলে পাবেন পাথর ও মুক্তা বসানো অলংকার, পোশাক, তসবিহ, ওয়ালম্যাট। বরাবরের মতোই নান্দনিক সাজে সেজেছে থাই গ্যালারি। থাই গ্যালারিতে থাকছে থাই খাবার, অর্নামেন্টস ক্যাপ, মোমবাতি, ফুল, স্যান্ডেল, শাল। ইন্ডিয়ান প্যাভিলিয়ন সেজেছে রঙিন বেশে। শাল, শাড়ি আর থ্রিপিসে টইটুম্বুর স্টলটি। তুর্কি স্টলে পাবেন ইস্তাম্বুলের খ্রিস্টালের জিনিসপত্র। ইরানি স্টলে থাকছে পোশাক, বোরকা, পাশাপাশি ট্রে, ওয়ালমেট, চিপস, পাথর বসানো অলংকার। মেলা থেকেই কালারফুল বার্মিজ ও লেদারের স্যান্ডেল নিয়ে যাত্রা শুরকরেছে পথ ও পা। মেলায় পাট ও তাঁতের ব্যাপক কালেকশন রয়েছে। এছাড়া মেলায় আমাদের দেশীয় স্টল ও প্যাভিলিয়নগুলোতে আমাদের নিত্যপ্রয়োজনীয় বাসন-কোসন, বস্ত্র, ভোগ্যপণ্য ও প্রসাধন সামগ্রী পাওয়া যােছ। ইলেকট্রনিক্স পণ্যেরও রয়েছে বিশাল সম্ভার।

বাণিজ্য মেলায় গিয়ে যে ব্যাপারে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়তে হয়, তা হল খাবার গ্রহণ। তাই খাবার অর্ডারের আগে দাম জেনে নিন। মেলায় পথ হারিয়ে ফেললে উপরে ওড়ানো বেলুন দেখে মেলার প্রবেশ পথ চিহ্নিত করন। সবই তো জানলেন আর দেরি কেন আজই চলে যান বাণিজ্য মেলায়।

মেলায় প্রবেশের জন্য দর্শনার্থীদের ২০ টাকার বিনিময়ে টিকিট কিনতে হেছ। যাদের বয়স ১২ বছরের নিচে তাদের জন্য টিকিটের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১০ টাকা। মেলা প্রতিদিন খোলা থাকছে সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত।

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।