‘বার মাসে তের পার্বণ’ খ্যাত বাঙালিদের অনেক প্রিয় উৎসবের একটি হল পহেলা বৈশাখ তথা বাংলা বর্ষবরণ।
একজন উৎসবপ্রিয় বাঙ্গালী হিসেবে আমার ও এই নববর্ষ বরণ নিয়ে উৎসাহের অন্ত নেই।
জল আনা স্বাদ-এর এক অভূতপূর্ব সমন্বয় এই দিনটি। নিজেকে এবং নিজের শেকড় কে নতুনরূপে ফিরে
পেতে এই দিনটি বরাবরই আমার কাছে অনন্য। প্রতি বছরের মত ১৪১৯ কেও একই ভাবে বরণ করার
আশা রাখছি। তবে আমার একটা স্বপ্ন আছে যেটা প্রতিবারই দেখি, চেষ্টা করি যতটা সম্ভব স্বপ্নটাকে
সত্যতা দেওয়ার। এবারও ব্যাতিক্রম হবেনা জানি। আমি স্বপ্ন দেখি আমাদের সমাজটা একদিন এমন
হবে যেদিন বর্ষবরণের দিনে কোন পথশিশু ভাত খাবার জন্য দুটো পয়সা চেয়ে কাঁদবেনা, ফেলে দেওয়া
তরমুজের খোসা, পান্তার বাসন খুঁটে খাবার খুঁজে ফিরবেনা। সমাজের উঁচু তলার মানুষগুলোর বদ্ধ গাড়ির
কাঁচের সামনে ফুল হাতে কাকুতি-মিনতি করবেনা কোন শিশু। আমাদের সমাজে সামর্থ্যবান মানুষের অভাব
নেই। খুঁজলে এমন অনেক পাওয়া যাবে যারা নতুন বছরকে বরণ করতে হাজার হাজার টাকা শপিং সেন্টারে
বিলিয়ে দিচ্ছেন অনায়াসেই। আমি বলিনা যে মানুষ শখ পুরন করবেনা। মানুষ অবশ্যই তার শখ পূরণ করবে
কিন্তু একবার ভেবে দেখা বোধহয় উচিত যে আমার শখের জন্য বরাদ্দ হাজার টাকার সামান্য কিছুটা দিয়ে আমি আরও একজনের শখ না বরং প্রয়োজন মেটাতে পারি।
লিখছি বলেই না, আমার মন এভাবেই আমাকে বলে। আমি জানি হয়ত আমি একা না, আমার মত এরকম ভাবে আরও অনেকেই
ভাবেন। সেটাই আশার কথা। আমরা জাতিগত ভাবে আশাবাদী আর তাই আশা করি এমন একদিন অবশ্যই আসবে যেদিন আমার এই ভাবনাগুলো সত্য হবে, মানুষ বুঝতে শিখবে জাতির ঐতিহ্য।
রক্ষায় সব থেকে আগে দরকার মানুষগুলোকে রক্ষা করা আর সেদিনের বর্ষবরণ খুঁজে পাবে প্রকৃত
সার্থকতা।
পঞ্চমবর্ষ
শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ, বরিশাল