শিল্পাঙ্গন গ্যালারিতে নারীদের জীবন-কাজ, সমস্যা আর সম্ভবনার নানা দিক তুলে ধরতে ‘মেয়ে’ আয়োজন করেছে, একান্তর: নারীর প্রজন্মযাত্রা।
২৭ মে থেকে শুরু হওয়া এই আয়োজন ২ জুন প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত চলবে।
‘মেয়ে’ বাংলাভাষী নারীদের নিয়ে মিলেমিশে গড়ে ওঠা একটি অলাভজনক, স্বেচ্ছাসেবী নেটওয়ার্ক। মেয়েদের বন্ধুতা, ক্ষমতায়ন ও নেতৃত্বের বিকাশ ‘মেয়ে’র প্রতিপাদ্য। ২০১১ সালের জুনে একটি ফেসবুক গ্রুপ থেকে যাত্রা শুরু করে অনলাইন থেকে অফলাইনে সম্মিলিত মত বিনিময়, ভাবনার বিকাশ ও উদ্যোগের প্রসারের মধ্য দিয়ে গত ৫ বছরে ৫ হাজারেরও বেশি নারীর নির্ভরতার ঠাঁই হয়ে উঠেছে ‘মেয়ে’।
যুগ যুগ ধরে নারীকে যে নীরবতার শিক্ষা দেওয়া হয়েছে, তার দেয়ালে নিজেদের সোচ্চার কণ্ঠ দিয়ে ফাটল ধরাতে মেয়েদেরকে একত্রিত করে বিশাল এক পরিবার হয়ে উঠেছে ‘মেয়ে’। এই সম্মিলিত প্রচেষ্টার ধারাবাহিকতায় ‘মেয়ে’র এবারের আয়োজন ‘একান্তর’।
একান্তর মানে এক+অন্তর। অন্তর মানে প্রাণ, অন্তর মানে ব্যবধান। আমাদের মায়েদের স্বপ্ন, কষ্ট আর ভালোবাসার পথ ধরেই আজকের আমাদের পথ চলা। স্বতন্ত্র ব্যক্তিত্ব আর ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি ধারণ করেও আমরা একই প্রাণের অভিন্ন ধারায় বয়ে চলি সময়ের স্রোতে। আমাদের সমাজে বংশের ধারা পুরুষের পরিচয়ে আঁকা হলেও আমরা বিশ্বাস করি, সামাজিক বিবর্তনে নারীর এই প্রজন্মযাত্রা এক অপরিহার্য চালিকাশক্তি। দুই প্রজন্মের নারীর গল্প আর ছবি নিয়ে 'মেয়ে' পরিবার এবার তাই আয়োজন করেছে সপ্তাহব্যাপী অভিনব ইভেন্ট 'একান্তর'; যেখানে চিত্র প্রদর্শনী, গল্প, গান, কবিতার মধ্য দিয়ে দুই প্রজন্মের সেতুবন্ধন রচিত হবে।
দুই প্রজন্মের দুই ডজন নারীর ছবি নিয়ে চিত্র প্রদর্শনী সাজাচ্ছেন অনন্যা রুবাইয়াত। আড্ডা, গান, আলোচনার আয়োজনে আছেন মেয়ে পরিবারের আরো অনেকে। আয়োজন ও সার্বিক সমন্বয়ে আছেন তৃষিয়া নাশতারান। ইভেন্টের অর্থায়নে রয়েছেন 'মেয়ে' পরিবার থেকে বিকশিত কিছু সফল উদ্যোগ এবং নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কিছু সদস্য।
বিকেল ৩টা থেকে ৫টা পর্যন্ত ‘পারিবারিক নির্যাতন’ নিয়ে এবং বিকেল সাড়ে ৫টা থেকে সাড়ে ৭টা পর্যন্ত 'তালাক' নিয়ে। চিন্তাচক্রগুলোতে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অভিজ্ঞরা উপস্থিত থাকবেন অংশগ্রহণকারীদের প্রশ্নের উত্তর দিতে।
আমাদের প্রত্যাশা এই ইভেন্ট মায়েদেরকে নতুন প্রজন্মের ভাবনার সাথে আরেকটু একাত্ম হতে, মেয়েদেরকে নিজেদের স্বাতন্ত্র্যকে সম্মান করতে ও মায়েদের অভিজ্ঞতার আলোকে নিজেকে দেখতে, এবং সর্বোপরি সব নারীকে নিজের অধিকার ও আত্মমর্যাদার জন্য সোচ্চার হতে অনুপ্রেরণা জোগাবে।