ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

লন্ডন

যুবমহিলা লীগ নেতা লাঞ্ছিত

লন্ডনে ৩ বিএনপিকর্মী আটক

লন্ডন করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৪৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৪, ২০১৪
লন্ডনে ৩ বিএনপিকর্মী আটক ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

লন্ডন: লন্ডনে যুবমহিলা লীগ কর্মীদের সমাবেশে বিএনপি কর্মীদের হামলার ছয়জন আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় তিন বিএনপি কর্মীকে আটক করেছে পুলিশ।

 

মঙ্গলবার স্থানীয় সময় বিকেল সাড়ে তিনটায় পূর্ব লন্ডনের আলতাব আলী পার্কের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এ হামলার ঘটনা ঘটে।

সম্প্রতি, বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে কটুক্তি ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি করার প্রতিবাদে মঙ্গলবার সমাবেশের আয়োজন করে। এ সময় বিএনপির কর্মীরা লাটিসোটা নিয়ে হামলা করে বলে যুবমহিলা লীগ নেতারা অভিযোগ করেছেন।

বিকেল তিনটায় সভানেত্রী ইয়াসমীন পলিন ও সাধারণ সম্পাদিকা স্নিগ্ধা সাজিয়ার নেতৃত্বে যুবমহিলা লীগ নেতাকর্মীরা সমাবেশ স্থলে যান। এ সময় সেখানে আগে থেকেই উপস্থিত বিএনপি কর্মীরা তাদের ওপর লাঠিসোটা নিয়ে চড়াও হয়।

যুবমহিলা লীগ নেতাদের অভিযোগ, ঘটনাস্থলে উপস্থিত যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি শায়েস্তা চৌধুরী কুদ্দুস, সাধারণ সম্পাদক কয়সর এম আহমেদ ও সাবেক আহ্বায়ক এম এ মালেকের নির্দেশে বিএনপির নেতাকর্মীরা তাদের ওপর এ হামলা করে।

তারা অভিযোগ করেন, পুলিশের অনুমতি নিয়ে যুবমহিলা লীগ মঙ্গলবার শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে এই কর্মসূচি ঘোষণা করলে নির্ধারিত সময়ের আগেই বিএনপি কর্মীরা পুলিশের কোনো অনুমতি ছাড়াই শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ দখল করে রাখে।

নির্ধারিত সময়ে যুবমহিলা লীগ কর্মীরা শহীদ মিনার এলাকায় গেলে কোনো রকম উস্কানি ছাড়াই বিএনপির নেতাকর্মীরা তাদের ওপর হামলা চালায়।

তারা আরো অভিযোগ করেন, এ সময় তাদের সঙ্গে মাত্র ছাত্রলীগকর্মী রাকিব তারেক ও চমক এই দুজন পুরুষকর্মী তাদের সঙ্গে ছিলেন।

বিএনপির নেতাকর্মীরা হাতে থাকা লাটি দিয়ে যুবমহিলা লীগ সভানেত্রী ইয়াসমীন পলিন ও সাধারণ সম্পাদিকা স্নিগ্ধা সাজিয়াসহ অন্যান্য কর্মীদের পেটাতে করতে থাকে। তাদের উপর্যুপরি আঘাতে পলিন, স্নিগ্ধা ও ছাত্রলীগ নেতা রাকিব তারেকসহ বেশ কয়েকজন কর্মী আহত হন।
 
হামলা চালানোর পর পুলিশকে ফোন করা হলে পুলিশ এসে হামলাকারীদের ধাওয়া দিলে তারা দ্রুত পালিয়ে যায়। এই সময় বিএনপির তিন কর্মীকে পুলিশ আটক করে।

এদিকে, হামলার খবর পেয়ে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর নেতৃত্বে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ কর্মীরা দ্রুত শহীদ মিনার স্থলে উপস্থিত হলে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ধাওয়ার মুখে যুক্তরাজ্য বিএনপির নেতারাও দ্রুত শহীদ মিনার থেকে পালিয়ে যান।

এরপর আওয়ামী লীগ কর্মীরা তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ সভায় মিলিত হয়ে এ হামলার নির্দেশদাতা হিসেবে তারেক রহমানকে দায়ী করে তার আটক দাবি করেন।

সমাবেশে আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী বলেন, এই হচ্ছে নষ্ট রাজনৈতিক দল বিএনপি। সভ্যদেশে বাস করে ও তারা সভ্যতা ভদ্রতা শিখতে পারেনি।

উল্লেখ্য, তারেক রহমানের ইতিহাস বিকৃতি ও বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে কটুক্তির প্রতিবাদে আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী সোচ্চার ভূমিকা নেওয়ায় এর আগে যুক্তরাজ্য বিএনপি তাকে লন্ডনে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে।

এ বিষয়ে হামলার শিকার যুবমহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদিকা স্নিগ্ধা সাজিয়া বাংলানিউজকে বলেন, যুক্তরাজ্য বিএনপি সভাপতি শায়েস্তা চৌধুরী কুদ্দুস, সাধারণ সম্পাদক কয়সর এম আহমেদ ও সাবেক আহ্বায়ক এম এ মালেক এই হামলার নির্দেশ দিচ্ছিলেন।

স্নিগ্ধা বলেন, তারেক রহমানের নির্দেশে এবং যুক্তরাজ্য বিএনপি নেতাদের পরিকল্পনায় আমাদের ওপর এই হামলা হয়েছে বলে আমরা পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছি এবং পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করছে।
ঘটনা সম্পর্কে জানতে যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি শায়েস্তা চৌধুরী কুদ্দুস, সাধারণ সম্পাদক কয়সর এম আহমেদ ও সাবেক আহ্বায়ক এম এ মালেকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাদের কাউকে ফোনে পাওয়া যায়নি।

যুবদল কেন্দ্রীয় কমিটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক এনামুল হক লিটনের কাছে হামলার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি নিজে ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন না বলে জানান বাংলানিউজকে।

তিনি বলেন, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও আমাদের প্রাণপ্রিয় নেতা তারেক রহমান সম্পর্কে আওয়ামী লীগ নেতাদের অকথ্য অশ্লীল ভাষা প্রয়োগে দলের জুনিয়র কর্মীদের অনেকেই ক্ষুব্ধ ছিলেন।

শুনেছি এ নিয়ে যুবমহিলা লীগের কর্মীদের সঙ্গে শহীদ মিনারে তাদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি সিনিয়র নেতারা নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করেছেন।

ঘটনাটিকে অনভিপ্রেত মন্তব্য করে লিটন বলেন, ভিন্ন মতাদর্শের সহাবস্থান গণতন্ত্রের সৌন্দর্য; রাজনৈতিক কর্মীদের এ বিষয়টি অবশ্যই বিবেচনায় নিতে হবে।

মত প্রকাশের স্বাধীনতায় বিএনপি আদর্শিকভাবেই বিশ্বাসী মন্তব্য করে লিটন আরো বলেন, দুটো সংগঠনের উত্তেজিত কর্মীদের মধ্যে সংগঠিত এমন সব অনভিপ্রেত ঘটনা প্রতিরোধে নেতারা ভবিষ্যতে অবশ্যই ভূমিকা রাখবেন বলে আমাদের বিশ্বাস।
 
বাংলাদেশ সময়: ১২৪৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৪, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

লন্ডন এর সর্বশেষ