ঢাকা, শনিবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

লন্ডন

আন্দোলন গড়ার ব্যর্থতা স্বীকার খালেদার

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৪৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ২, ২০১৫
আন্দোলন গড়ার ব্যর্থতা স্বীকার খালেদার ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

লন্ডন: সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুলতে ব্যর্থতার কথা স্বীকার করে নিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। তিনি বলেছেন, সারাদেশে যে আন্দোলন হয়েছে, সেভাবে ঢাকায় গড়ে তোলা যায়নি।

তবে সারাদেশে যে আন্দোলন হয়েছে, তা স্বাধীনতার সময়ও হয়নি।

স্থানীয় সময় রোববার (১ নভেম্বর) রাতে সেন্ট্রাল লন্ডনের রিভারব্যাংক পার্ক হোটেল প্লাজায় আয়োজিত সভায় তিনি এ ব্যর্থতা স্বীকার করেন। কয়েকবার তারিখ পরিবর্তনের পর স্থানীয় বিএনপির উদ্যোগে খালেদার এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, ঢাকায় সেভাবে আন্দোলন গড়ে তোলা না গেলেও সারাদেশে যে আন্দোলন হয়েছে তা স্বাধীনতার সময়ও হয়নি। তবে, ঢাকায় আন্দোলন গড়ে তোলা যায়নি সরকারের ‘নির্যাতনের’ কারণে।

এ সময় তিনি বর্তমান সরকারকে হটাতে সব দল-মতের মানুষকে জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার আহ্বানও জানান।

সভায় দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।

সরকারের বিরুদ্ধে বিএনপি ভাঙার ষড়যন্ত্রের অভিযোগও করে খালেদা জিয়া বলেন, বিএনপিকে ভাঙার অনেক চেষ্টা হচ্ছে। এ চেষ্টা এরশাদ-ফখরুদ্দিন-মঈনুদ্দিনরাও কম করেননি, কিন্তু লাভ হয়নি। এখনও হবে না।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘লেডি হিটলার’ মন্তব্য করে বিএনপি প্রধান বলেন, দেশে রাজতন্ত্র কায়েম করছেন তিনি। তিনি যখনই যা হুকুম করছেন পুলিশ, র‌্যাবসহ অন্য বাহিনী তখনই তা করছে। আজীবন ক্ষমতায় থাকার জন্য বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর শেখ হাসিনা নির্যাতন চালাচ্ছেন।

দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ অবস্থায় অভিযোগ করে খালেদা জিয়া ‘দেশ বাঁচাতে জাতীয় ঐক্যের’ ডাক দেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ আজ মোটেও ভালো নেই। অত্যাচার-জুলুমের সব সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে।

‘বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর পর শেখ হাসিনা দেশে গিয়েছিলেন রাজনীতির জন্য নয়, তার পিতার হত্যার প্রতিশোধ নিতে’- এমন মন্তব্য করে খালেদা জিয়া এ প্রসঙ্গে বিবিসিকে দেওয়া শেখ হাসিনার তখনকার একটি সাক্ষা‍ৎকারের উদাহরণ টানেন।

তিনি বলেন, হাসিনা তখন দেশ গড়তে যাননি, ধ্বংস করার সংকল্প নিয়ে দেশে গিয়েছিলেন।

দেশে একের পর এক ঘটনা ঘটছে, আর এসবের জন্যে দায়ী করা হচ্ছে বিএনপিকে- এমন অভিযোগ করে খালেদা জিয়া বলেন, দেশের বর্তমান অবস্থার জন্য দায়ী শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগের প্রতিহিংসার রাজনীতির কারণেই দেশের আজ এ অবস্থা।

এ সময় জঙ্গিবাদের উত্থানের জন্যে আওয়ামী লীগকে দায়ী করেন বিএনপি চেয়ারপারসন। তিনি বলেন, জঙ্গি-জঙ্গি চিৎকার করে বিদেশিদের ভয় দেখানো হচ্ছে। বোঝানো হচ্ছে আওয়ামী লীগ ছাড়া জঙ্গি মোকাবেলা সম্ভব নয়, বিএনপি এলে জঙ্গি উত্থান হবে। আওয়ামী লীগের সময়ই জঙ্গি উত্থান হচ্ছে, বিএনপি’র সময় এ জঙ্গিদের ধরা হয়েছিল।

দেশের মানুষ আওয়ামী লীগকে প্রত্যাখ্যান করে বিএনপিকে চাইছে- এমন মন্তব্য করে খালেদা জিয়া বলেন, দশম সংসদ নির্বাচনের আগের সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে সেটি প্রমাণ হয়েছে।

সাত বছরে বিএনপির তিন হাজার নেতাকর্মী খুন, এক হাজার দু’শ নেতাকর্মী গুম ও এক হাজার ১২ জনকে ক্রসফায়ারে দেওয়া হয়েছে বলেও দাবি করেন খালেদা জিয়া।

সরকারবিরোধী আন্দোলনের জন্য দল গোছাতে শিগগিরই দেশে ফিরবেন জানালেও তারিখের বিষয়ে কিছু স্পষ্ট করেননি খালেদা জিয়া।

তিনি বলেন, আমার যাওয়াটা খুবই প্রয়োজন। দেশে গিয়ে আন্দোলনের জন্য দল গোছাতে হবে। স্থায়ী কমিটির নেতাদের অনেক কিছু নির্দেশনা দিয়ে এসেছি। গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আমি ছাড়া ওনারা (স্থায়ী কমিটি) সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না।

বাংলাদেশ সময়: ০৮৫৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ০২, ২০১৫
জেডএস/এইচএ

** বিক্ষোভের মুখে বিকল্প পথে সভায় যেতে হলো খালেদাকে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

লন্ডন এর সর্বশেষ