ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

লন্ডন

ইইউ পক্ষে ভোট দেয়ার আহ্বান সৈয়দ আশরাফের

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২০২ ঘণ্টা, জুন ২২, ২০১৬
ইইউ পক্ষে ভোট দেয়ার আহ্বান সৈয়দ আশরাফের ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

লন্ডন: উন্নয়ন, সমৃদ্ধি ও বিশ্ব গণতন্ত্রের অবাধ চর্চার স্বার্থে ইউরোপীয় ইউনিয়নে থাকার পক্ষে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও বাংলাদেশ সরকারের জনপ্রশাসন মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম।

 

মঙ্গলবার (২২ জুন) লন্ডন বারা অব টাওয়ার হ্যামলেটস টাউন হলে তার সম্মানে স্পিকার আয়োজিত এক সুধী সমাবেশে তিনি এই আহ্বান জানান।

স্পিকার কাউন্সিলর খালিস উদ্দীনের সভাপতিত্বে ও ডেপুটি স্পিকার কাউন্সিলর সাবিনা আক্তারের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সুধী সমাবেশে নির্বাহী মেয়র জন বিগস, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক এমপি শফিকুর রহমান চৌধুরী এবং মুক্তিযুদ্ধের প্রবীণ প্রবাসী সংগঠক সুলতান শরীফসহ বেশ কয়েকজন কাউন্সিলর ও কমিউনিটি নেতাও বক্তব্য রাখেন।

সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ব্রিটিশ রাজনীতিতে নিজের সাবেক সক্রিয়তার কথা স্মরণ করে বলেন, সাম্প্রদায়িকতাকে না বলে বাঙালিরা একাত্তরে যেমন মুক্তিযুদ্ধ করেছে, ঠিক তেমনি ৭০ ও ৮০র দশকে বর্ণবাদের বিরুদ্ধে এই ব্রিটেনেও সংগ্রাম করেছে। আজকে ইমিগ্রেন্ট ইস্যুকে সামনে এনে যারা ইইউ থেকে বেরিয়ে আসতে চান তাদের সমর্থন দিলে বর্ণবাদ বিরোধী আমাদের সেই ঐতিহাসিক ভূমিকাকেই অসম্মান করা হয়।

ইইউ রেফারেন্ডাম নিয়ে বাংলাদেশের চিন্তা ব্রিটেনের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে মাথা ঘামানো নয়, এমন মন্তব্য করে সাবেক লেবার এক্টিভিষ্ট সৈয়দ আশরাফ বলেন, বর্ণবাদ, উগ্রবাদ ও জঙ্গিবাদ মোকাবেলা করে গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রা মসৃণ রাখতে জোট বা এলায়েন্স বিশ্ব রাজনীতিতে আজ বাস্তবতা। উন্নয়ন, সমৃদ্ধি ও বিশ্ব গণতন্ত্রের অবাধ চর্চার স্বার্থে এই বাস্তবতার পক্ষেই আমাদের অবস্থান নিতে হবে।

ইইউ ছাড়লে বাংলাদেশ থেকে কেটারিং কর্মী আনা সহজ হবে, বাংলাদেশি নিয়ন্ত্রণাধীণ কারী ইন্ডাষ্ট্রীর সঙ্গে জড়িতদের কারো কারো এমন প্রচারণার সমালোচনা করে সাবেক কমিউনিটি এক্টিভিষ্ট সৈয়দ আশরাফ বলেন, এমন অবাস্তব ভুল প্রচারণায় যে নিজেরাই ক্ষতিগ্রস্ত হবো এটি বুঝতে হবে আমাদের।

বৃহস্পতিবারের গণভোটে নিজেও একজন ভোটার এমনটি জানিয়ে তিনি বলেন, ব্রিটেন ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সঙ্গে বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের সামাজিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও সমৃদ্ধ করতে ব্রিটেনকে ইইউতে রাখার পক্ষে আমাদের ভোট দিতে হবে।

ইইউ'র সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে বাংলাদেশ সরকারের জনপ্রশাসন মন্ত্রী বলেন, ব্রিটেন হলো ইইউ'র সঙ্গে আমাদের সেতু বন্ধন। ইইউ থেকে দেশটি বেরিয়ে গেলে সেই সেতুবন্ধন আমাদের ক্ষতিগ্রস্ত হবে।  

ইইউ গণভোট নিয়ে বর্তমানে লন্ডনে অবস্থানরত ভারত, পাকিস্তান, নেপাল ও শ্রীলঙ্কার নেতাদের সঙ্গে তার কথা হয়েছে এমন মন্তব্য করে সৈয়দ আশরাফ বলেন, 'ব্রিমেইন'র পক্ষে দক্ষিন এশিয়া, কারণ শুধু বাংলাদেশ নয়, পুরো দক্ষিণ এশিয়ার সঙ্গেই ইউরোপের সম্পর্কের সিঁড়ি হলো ব্রিটেন।

সাবেক এমপি শফিকুর রহমান লন্ডনের কমিউনিটি রাজনীতিতে তার পূর্বের ভূমিকার কথা স্মরণ করে বলেন, বর্ণবাদ তাড়াতে যে শ্রম ও রক্ত আমরা দিয়েছি এই পূর্ব লন্ডনে 'ব্রেক্সিট' সমর্থন করলে সেই শ্রম ও রক্তের প্রতিই বিশ্বাসঘাতকতা হবে।

কারী শিল্পের যারা ইইউ ছাড়তে চান তাদের উদ্দেশে করে শফিক চৌধুরী বলেন, বাপ দাদার শ্রম ও ঘামের বিনিময়ে অর্জিত আজকের সমৃদ্ধ এই শিল্পকে রাজনীতির গুটি হিসেবে ব্যবহার করবেন না, উন্নয়ন ও বর্ণবাদ বিরোধী চেতনা অব্যাহত রাখতে 'ব্রিমেইন'র পক্ষে ভোট দিন।

ব্রিটেনের ইইউতে থাকার পক্ষে বাংলাদেশের নেতাদের এমন কনসার্নকে স্বাগত জানিয়ে মেয়র জন বিগস বলেন, এই কমিউনিটির দীর্ঘ চড়াই-উৎরাইয়ে আজকের এই নেতারা যে পাশে ছিলেন, ইইউ নিয়ে কনসার্ন সেটিরই প্রমাণ। এসময় তিনি কৌতুক করে বলেন মনে হচ্ছে বাংলাদেশও ইইউ সদস্যভুক্ত দেশ।

সুধী সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- সাবেক কাউন্সিলর হেলাল রহমান, দরছ উল্লা, সাবেক স্পিকার আব্দুল মুকিত চুন্নু, মহিলা নেত্রী হোসনে আরা মতিন, কলি হোসেইন, রাজনীতিক শাহ শামীম ও শাহাব উদ্দিন চঞ্চল প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ০১৫৮ ঘণ্টা, জুন ২২, ২০১৬
পিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

লন্ডন এর সর্বশেষ